রিমার সাথে আবিদ এর পরিচয় হঠাৎ করে! সচরাচর এমন পরিচয় মানুষ এর কমই হয়! রিমা ফেসবুকে নতুন এসেছে এটা জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছে সেখানে কিছু ছেলে আজেবাজে কমেন্ট করছে!
এটা দেখে আবিদ এর মোটেও ভালো লাগলো না! সে সেখানের সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে! যে সে যেই হোক মানুষ তো! সবার ধারনা এটা কোন ছেলে মেয়ে সেজে আইডি খুলেছে!
আবিদ বললো! সে যদি সত্যি এমন করে থাকে তাহলে ব্লক করে দিলেই হয়!
.
মোটামুটি সব কিছু কন্ট্রোলে নিয়ে এসেছে আবিদ! এমন সময় দেখলো তার একটা মেসেজ এসেছে!
এবং সেটা ওই মেয়ের তরফ থেকে! শুধুই একটা ধন্যবাদ ।
আবিদ এর পাল্টা জবাব নতুন?
বললো - হা আজকেই এক ফ্রেন্ড খুলে দিলো!
-আচ্ছা! তো কারনটা কি জানতে পারি!
- আসলে তেমন কোন কারন নেই! এমনিতেই সবার থাকে আমার না থাকলে কেমন দেখায় তাই খোলা আর কি!
- আচ্ছা! পরে কথা হবে! এখন যাচ্ছি।
বলে আবিদ চলে গেলো।
.
এরপর দুই দিন চলে গেলো আবিদ আর ফেসবুকে আসে না! কিন্তু তার
অজান্তে মেসেজ বক্স এ একের পর এক অপেক্ষার মেসেজ আসছেই!
প্রায় চারদিন পরে,আবিদ দেখলো আর মেসেজ বক্স এ রিমার তেরটি মেসেজ! ওর জন্য একটু খারাপ লাগছিলো এত গুলো মেসেজ আসলো কিন্তু সময় মত রিপলাই দিতে পারে নি সে! সেও দুই একটার রিপলাই দিয়ে দিলো! বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে হলো না তার কিছু সময় পরেই রিমা অনলাইনে চলে এসেছে।
কত কথা যেন তারা জনম জন্মান্তরের বন্ধু!
আবিদ শুধু অবাক হয়ে যাচ্ছে! আজকেই তারা প্রথম ভালো করে কথা বলছে! এরই মধ্যে সম্পর্ক আপনি থেকে তুমি, তুমি থেকে তুই পর্যন্ত চলে এসেছে!
এভাবে অনেক কথা হলো! কথা যেন ফুরাতেই চায় না!
.
কথা হচ্ছে রিমার বয় ফ্রেন্ড তাকে ছেড়ে চলে গেছে! আর সেই দুঃখ ভোলার জন্যই সে ফেসবুককে বেছে নিয়েছে!
.
আবিদ একটু অন্য রকম ছেলে, কোন রিলেশন বা কাউকে ফ্লেটিং এই সব কিছুই মধ্যেই সে নেই। তার কথা ফ্রেন্ডতো ফ্রেন্ডই। তার কেয়ার করা,সাপোর্ট দেয়া! তার ভালো মন্দের খোজ খবর নেয়া বন্ধুর দায়িত্ব ।
যেমন ভাবা তেমন কাজ!
-রিমা তার বয় ফ্রেন্ড চলে যাওয়ায় প্রায় মন খারাপ করে থাকে!
আবিদ তাকে ধৈর্য ধরতে বলে!
বলে দোস্ত আমি বলছি তোর বয় ফ্রেন্ড আবার ফিরে আসবে!
সে বিশ্বাস করতে চায় না! কিন্তু আদিব তাকে বিভিন্ন কথা বলে বিশ্বাস করায়!
রিমাও সেই বিশ্বাসে বুক বাধে! রিমা প্রায়ই বলে! -দোস্ত এই পাপীর জীবনে হয়তো অনেক পূন্যের কাজ করেছিলাম যে কারনে তোর মত একটা বন্ধু পাইছি!
আবিদও অনেক খুশি এমন বন্ধু পেয়ে সেও নিজেকে লাকি ভাবে!
দিন যায় মাসও কেটে যায়!
তারা তাদের একে অপর এর সুখ দুঃখ শেয়ার করে! ভালো মন্দে কোন
রকমে কেটে যাচ্ছে দিন গুলো!
হঠাৎ একদিন! রিমা আবিদ কে ফোন দেয়! সে কি কান্না, আবিদ কিছু না বুঝে সেও কাদছে!
একপর্যায়ে অনেক সান্তনা দেয়ার পর একটু স্বাভাবিক হত রিমা! কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে আজকে ওর মন অনেক খারাপ!
আরো অনেক দিন কাটে! মাঝে কিছু দিনের গেপ!
.
একদিন আবিদ জানতে পারে রিমায় বয় ফ্রেন্ড সত্যি সত্যি ফিরে এসেছে! আর এই জন্য রিমা আবিদ কে এত ধন্যবাদ আর উ্তসাস প্রকাশ করে যেন সে তার বয় ফ্রেন্ডকে আবিদ এর জন্যই ফিরে পেয়েছে! আর সে বলেও দিলো, দোস্ত আমি তোর কারনেই এত দিন বেচেঁ ছিলাম আমি হয়তো মরেই যেতাম! আর ওকে ফিরে পেয়ে আমি আর এক নতুন জীবন পেয়েছি! আমি এতদিন বেচে ছিলাম তোর লাইফ সাপোর্টএ!
.
আবিদ তার ভার্সিটির ক্লাস শেষে এক ফ্রেন্ড এর বাসায় গিয়েছে নোট জোগার করার জন্য।
দুপুর বেলা! রাস্তায় তেমন কোন যানজটও নেই! সে পৌঁছে গিয়েছে!
সে দেখলো সামনে একটা স্প্রিড ব্রেকার ভাবলো এখানেই নেমে যাই মাঝ রাস্তা তো কি হয়েছে! সে ভালো মতই নামলো! তবে কোথা থেকে এক কালো রং টয়োটা তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো!
রাস্তায় আশেপাশে কেউ নেই! আবিদ এখনো নরতে পারছে! সে পকেট থেকে ফোন বের করে শুধু একটা কল দিচ্ছে!
কাকে দিচ্ছে সে জানে না। কল লিস্টে ছিলো রিমা! ফোন গিয়েছে তার কাছে: রিং হয়েই যাচ্ছে হয়েই যাচ্ছে কেউ ধরছে না! তার খেয়াল হলো রিমা তো এখানেই থাকে! তাহলেতো আরো ভালো হবে! সে আবার ফোন দিলো কিন্তু এবারো সেই একই ফল।
এবার নিজ থেকেই রিডাল হয়েছে রিমার কাছে!
কিন্তু ওপাশের কন্ঠ নিশ্চুপ! শুরুই একটা যান্ত্রিক শব্দ টুউউউট টুঊউউউট!!!!!!!!!!!
(আবিদ পরে জানতে পারে তার বয় ফ্রেন্ড নাকি মানা করেছে অন্য কোন ছেলের ফোন রিসিভ করতে! )
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬