- কি করিস রাসেল?
- কিছু না বাবা
- চুপ চাপ বসে আছিস ক্যানো?
- এমনিতেই। কিছু বলবে?
- না এলাম তোর সাথে গল্প করতে।
- বললেই হয় যে কোথাও ঘুরতে যেতে চাচ্ছ। খালি নাটক করো।
- কিভাবে বুঝলি?
- অভ্যাস হয়ে গেছে। গরজ করে আমার রুমে চলে আসছো গল্প করতে, মতলব যদি না বুঝি তা কি হয়?
- হুম। মনে হচ্ছে তুই আমার বাপ
- সন্দেহ আছে এখনো?
- না না একদম না। তাহলে রেডি হয়ে আসি কি বলিস?
- হুম যাও। পাঞ্জাবী পরবে না একদম।
- কেন সমস্যা কি?
- বুড়া বুড়া লাগে। জাস্ট জিন্স আর টি শার্ট ওকে?
- আচ্ছা যা পরছি।
হাফিজ আহমেদ আর তার ছেলে রাসেল। বাপ ছেলে নাকি বন্ধু বুঝাই মুশকিল। রাসেলের বয়স বিশ। হাফিজ সাহেবের পয়তাল্লিশ। খুলনায় নিজেদের বাড়িতে তারা দুজনই থাকেন। রাসেলের মা অনেক আগে ওর বাবাকে ডিভোর্স দিয়েছে। রাসেল কে নিয়েই তারপর থেকে আছেন। পয়তাল্লিশ বছরের বাবা কে রাসেলের বন্ধু ছাড়া কিছুই মনে হয় না। পেটের সব কথা বাপ বেটা একজন আরেকজন কে না বলে ঘুমাতে যায় না।
হাফিজ সাহেবও ছেলের জন্য নিজেকে কখনো মধ্যবয়সী বৃদ্ধ ভাবতে পারেন না।
- বাইপাস রোড টা অনেক সুন্দর না রে?
- হ্যাঁ তুমি আগে আসোনি তাই বেশি ভাল লাগছে।
- হতে পারে।
- আচ্ছা বাবা তোমাকে একটা কথা বলি?
- হুম বল।
- মা কে মিস করো না?
- তুই বুঝি ইদানিং খুব মা কে নিয়ে ভাবিস?
- না সেটা না।
- তাহলে?
- তোমাদের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে ছিল।
- তা ছিল। কিন্তু মিস করি না।
- কেন?
- জানিনা। থাম তো।
- ওকে। চল সামনে যাই।
হাফিজ সাহেব বুঝতে পারেন ছেলে মাকে ভাবে। মা হারার কষ্ট হাফিজ সাহেব বুঝেন। ছেলেবেলায় হাফিজ সাহেবের মাও তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। রাসেলের মায়ের মত। পার্থক্য শুধু হাফিজ সাহেবের মা কে ঈশ্বর নিয়ে গিয়েছিলেন, আর রাসেলের মা নিজে থেকে চলে গিয়েছিল।
অজান্তে কখন যে ছেলের হাত ধরে ফেলেছেন তিনি টের পাননি। দুজনের হাতই একজনের জন্য আরেকজনের জন্য নির্ভরতা। কে ছেলে কে বাপ তা দেখার সময় কোথায়?