বন্ধুরা, আপনাদের জন্য নতুন খবর! এইমাত্র ট্রাম্প মামু এই তিনজনকে "সেলফি অফ দা ইয়ার" পুরষ্কার দেবার ঘোষণা দিয়েছেন!!!
বনানী রেপ কেসের কারণে এরা সেটা পেয়েছেন!!!!!!! বলুন অভিনন্দন!!!!!!!!!!!!
বনানী রেপ কেসে শেষ পর্যন্ত অপরাধীরা শাস্তি পাবে কিনা, সেটা সময় বলে দেবে। যদিও অতীত অভিজ্ঞতার কারণে আমরা খুব বেশী আশাবাদী হতে পারিনা। আমি মেয়েদুটোর কথা ভাবছিলাম। ভীষণ সাহসী দুই বীর নারী, যারা কল্পনাতীত নির্যাতন সহ্য করে, নিজেদের সামাজিক মর্যাদাহানি, জীবনের নিরাপত্তা, অন্ধকার-অনিশ্চিত ভবিষ্যত, পুলিশের অসহযোগিতা ও নির্যাতন, বিচারকালীন নানা হয়রানি, প্রভাবশালী অপরাধীদের হুমকি-ধামকি, পরিবারের সীমাহীন দূর্ভোগ ইত্যাদি হাজার প্রতিকূলতার তোয়াক্কা না করে শেষ পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করতে সক্ষম হয়। পেপারে পড়েছি, মেয়েদু'জনের একজনকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেয়া হয়েছিল। আমরা সবাই অনুমান করতে পারি, কত রকমের বিড়ম্বনা মেয়েদু'টিকে সহ্য করতে হচ্ছে রোজ। তবু শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার পেলে মেয়েদুটি মনে শান্তি পাবে। আর না পেলে তাদের প্রতি হওয়া অবিচারের সাথে বিচারকালীন নানা নির্যাতন যোগ হয়ে তাদের কষ্টের পরিমাণ বেড়ে যাবে হাজারগুণ। তারা কিছুই পাবেনা, শুধু পাহাড়সমান অপমান আর কষ্ট ছাড়া।
আর অপরাধীরা কি পাবে? বিচারে শেষপর্যন্ত আদালত কি শাস্তি দেবে বা দেবেনা সেটাা বাদ দিলে তারা কিছু শাস্তি ইতোমধ্যে পেয়েছে। যেমন -
১. আপন জুয়েলার্সের ব্যবসা মার খেয়েছে,
২. অপরাধীরা সামাজিকভাবে হেয় হয়েছে,
৩. তারা এরমধ্যে বুঝে গেছে, তারা যা ইচ্ছা তা করে এলেও পাপ করে শেষ পর্যন্ত পার পাওয়া যায়না,
৪. তাদের পরিবারের লোকজন, আত্মীয়রা ঘৃণিত হয়েছে,
৫. অপরাধীদেরকে পুলিশের নানা ইনভেস্টিগেশনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, আর্থিক দণ্ড দিতে হচ্ছে। ইত্যাদি।
এই ঘটনা থেকে আমরা আমজনতা, তথা দেশ, সমাজ কি পেলাম?
১. দেশের মানুষ জানলো - বৈধ ব্যবসার আড়ালে আপন জুয়েলার্সের আর কি কি অবৈধ ব্যবসা আছে,
২. আপন জুয়েলার্সের সাথে কারা কারা প্রকাশ্য ও গোপনীয় কি কি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের সম্পর্কে জানা গেল,
৩. আমরা জানলাম, আমাদের সমাজের উঁচুতলার মানুষগুলোর প্রকৃত চেহারা আসলে কেমন, এদের মানসিকতা, জীবনপ্রণালী কতটা পঙ্কিলতাপূর্ণ,
৪. কিভাবে আমাদের দেশের কিছু মানুষ নিজের নাম- পরিচয় পাল্টে অবৈধ পথে রাস্তার নেড়ি কুত্তা থেকে চিতাবাঘ হয়ে ওঠে, সে কাহিনী জানা হল,
৫. রাজনীতিবিদ, মিডিয়াব্যক্তিত্বসহ যাদেরকে আমরা রোজ যেভাবে দেখি, যা ভাবি, তারা আসলে কেমন সেটা জানা হল এই ঘটনা থেকে,
৬. অপরাধীদের প্রতি সাধারণ মানুষ সোচ্চার হয়েছে, ঘৃণা জানিয়েছে, প্রতিবাদ করেছে যে যার অবস্থান থেকে। ফলে গোটা জাতি সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করার ফলে অপরাধীরা বিচারের মুখোমুখি হয়েছে,
৭. আর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি - এই দুই মেয়ের সাহসী পদক্ষেপ এদেশের হাজার মেয়েকে সতর্ক করবে, হাজার মেয়ের মনে সাহস যোগাবে প্রতিবাদী হবার। তারা ক্ষমতার কাছে ভয়ে পরাজিত হবেনা।
তোমাদের জানাই শ্রদ্ধা আর মমতা। খোদা তোমাদের মনে শক্তি দিন - এ লড়াই শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাবার। আমরা তোমাদের পাশে আছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৬