শিক্ষক যখন যৌননির্যাতনকারী
খবরে পড়লাম দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর শিক্ষক দীপক কুমারের বিরুদ্ধে তার দুই ছাত্রীকে যৌননির্যাতন ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের নজরে আসে এবং প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি কি হবে, তা পরে জানা যাবে। আপাতত আমি এর কারণ ও ভয়াবহতার দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
আমার ১২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি বেশকিছু লম্পট শিক্ষককে দেখেছি যাদের মধ্যে খুব কম জনেরই যথার্থ শাস্তি হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ আছে। তাদের দলে অনেক সিনিয়র শিক্ষকও আছেন। সবাই বিষয়টা জানেন। কিন্তু সাক্ষী-প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যায়না। সবাই সবকিছু জেনেও এসব লম্পটদের সাথে ভাল ব্যবহার করেন। আমি নিজেও করি, য়দিও আমার ইচ্ছে করে.....।
আবার অনেক শিক্ষক আছেন যারা অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও ঐ লম্পট শিক্ষককে বাঁচানোর জন্য নানা কূটকৌশল অবলম্বন করেন। ফলে তাদেরকে যথার্থ শাস্তি দেয়া সম্ভব হয়না। এরকম অনেক নজির এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। এখনও অনেক লম্পট শিক্ষক বহাল তবীয়তে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন।
মাঝে মাঝেই স্কুল, কলেজ এবং প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদেরকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এর কারণ কি?
১। শিক্ষকের নৈতিকতাবোধের অভাব ও চারিত্রিক স্খলনঃ আগেকার শিক্ষকরা ছিলেন চরিত্রবান। তাঁদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ তেমন শোনাই যেত না। তাঁরা ছিলেন বাবামার সমান। কিন্তু এখন বহু শিক্ষক লম্পট, হারামী। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু শিক্ষক আছেন, যারা কথাবার্তায় খুবই স্মার্ট, আন্তরিক, চোস্ত ইংরেজী বলে, সারাক্ষণ নীতিবাক্য - আমি এই করেছিলাম, সেই করেছিলাম, হেন হওয়া দরকার, তেন না হলে দেশ জাতি রসাতলে যাবে... আরো কত কি!! অথচ তারাই চরম দূর্নীতিবাজ, ঘুষখোর আর ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনকারী।
২। নির্যাতিত মেয়েদের প্রতিবাদ না করাঃ আমাদের দেশে যেকোন অপরাধ ঘটার পর তার প্রতিবাদ না করে আমরা বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করি, এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি বা অন্যায় হজম করে বিকল্প পথ খুঁজি।
বেশীরভাগ সময় এরা শাস্তি পায়না, কারণ এদের বিরুদ্ধে ছাত্রীরা অভিযোগ করতে ভয় পায় সামাজিকভাবে হেয় হবার ভয়ে, শিক্ষকের আক্রোশের ভয়ে এবং এদের শাস্তি হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, এটা মেয়েরা জানে বলে। কখনও বিপদের সময়ে আশেপাশের মানুষের সাহায্য না পাওয়ার কারণে, বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতা, পুলিশী হয়রানি ও অপরাধীর হুমকি-ধামকি ও হয়রানীর কারণেও মেয়েরা অপরাধ গোপন করে।
আমার এক সহকর্মী (যে নিজে মেয়ে কেলেংকারীতে ফেঁসেও পার পেয়েছে আরো কিছু শিক্ষকের সহায়তায়) আমাকে যুক্তি দিল, "মেয়েদের সম্মতি না থাকলে কোন শিক্ষক কি কিছু করতে পারে?" পারে। কারণ অনেক কষ্টে শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে একটি মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। শিক্ষকের সাথে কলহের কারণে নিজের ভবিষ্যত নষ্ট করার সাহস সবার হয়না, হবার কথা নয়।
আমার মনে হয়না, কোন মেয়ে স্বেচ্ছায় কোন শিক্ষককে গিয়ে বলে, "আপনি আমাকে পাস করিয়ে দিন, বেশী নম্বর দিন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানিয়ে দিন। তার বিনিময়ে আমি আপনার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করব।" তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই, কিছু মেয়ে এমন বলবে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায় - " শিক্ষক তা শুনবেন কেন?" আসলে প্রস্তাবটা আসে শিক্ষকের কাছ থেকে।। কোন মেয়েকে যখন কোন শিক্ষক কুপ্রস্তাব দেন, তখন মেয়েটির হাতে তার কোন প্রমাণ থাকেনা। আর কোন অপরাধী প্রমাণ রেখে অপরাধ করেনা। ফলে তাদের অপকর্ম প্রমাণ ও প্রতিরোধ করা কঠিণ হয়ে যায়।
৩। ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগঃ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা এমন সুযোগ রেখেছি যে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীকে অনৈতিক কিছু করতে বাধ্য করতে পারেন। শিক্ষক ইচ্ছে করলে নম্বর কম বা বেশী দিতে পারেন। আবার কোন শিক্ষার্থী কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করলে সেটি প্রমাণ করতে না পারলে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়না। আর ছাত্রীরা বেশীরভাগ সময় প্রমাণ দিতে পারেনা বলে শিক্ষকরা পার পেয়ে যান।
৪। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া বা হবার সম্ভাবনা কম হওয়াঃ অপরাধী শাস্তি পায়না বলে আরো অপরাধ করার স্পর্ধা ও সুযোগ পেয়ে যায় এবং বীরদর্পে অপরাধ করে। এসব হারামী শিক্ষকরা সারাজীবন অপকর্ম করে যায়, যেতে পারে। কারণ তাদের শাস্তি হয়না। এসব হারামীকে দেখে অন্যরাও অপরাধ করতে উৎসাহিত বোধ করে। আরো মানুষ অপরাধ করে। এভাবে সমাজ, দেশ কলুষিত হয়।
৫। মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাবঃ মেয়েদের প্রতি হীন মানসিকতা ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাবের কারণে এসব শিক্ষকরা মেয়েদের সাথে নোংরামী করে।
৬। সম্মিলিত প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না করাঃ আমাদের দেশে অপরাধের লাগামহীন বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ হল - প্রতিবাদ ও সম্মিলিত প্রতিরোধ না করা। এসব অপরাধের প্রতিবাদ করার পর মেয়েটার পাশে আর কাউকে পাওয়া যায়না। দু'চারদিন সমবেদনা জানানোর জন্য কেউ কেউ আসে, তারপর ভোগান্তি একা মেয়ের, মেয়ের পরিবারের। আমরা এখনও এমন পরিবেশ তৈরী করতে পারিনি যেখানে নির্ভয়ে প্রতিবাদ করা যায় এবং ন্যায় বিচার পাবার সম্ভাবনা সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সম্মিলিত প্রতিরোধ চলতে থাকে।
৭। প্রকৃত শিক্ষার অভাবঃ বংশগতি ও পরিবেশ সব মানুষের ভাল ও মন্দ আচরণের জন্য দায়ী। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মন্দ আচরণকে পরিহার করতে শেখায়। শিক্ষিত মানুষরা যেহেতু এমন নোংরা আচরণ করছে, তার মানে তারা প্রকৃত শিক্ষিত নয়। শিক্ষা তাদের কোন কাজে লাগছেনা। শিক্ষা তাদের মানুষ না বানিয়ে পশু বানাচ্ছে। সুতরাং আমাদের শিক্ষা ও পরিবেশ মানুষের মন্দ আচরণকে থামাতে পারছে না। তাই এগুলোর সংস্কার প্রয়োজন।
প্রতিকারঃ
১। যৌন নির্যাতনের প্রতি আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবেঃ আমাদের এ উপমহাদেশে পারিবারিক, সামাজিক, আর্থিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক - ইত্যাদি সবক্ষেত্রে নারীর প্রতি নানারকম নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। নিরাপত্তাহীনতার কারণে, সামাজিকভাবে হেয় হবার ভয়ে, সত্যিকারের আইনের শাসনের কঠোর প্রয়োগের অভাবে, বিপদের সময়ে আশেপাশের মানুষের সাহায্য না পাওয়ার কারণে, বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতা, পুলিশী হয়রানি, অপরাধীর হুমকি-ধামকি-হয়রানি ইত্যাদি কারণে মেয়েরা অপরাধ গোপন করে। এ কারণগুলো নারীকে মানসিকভাবে ছোট ও দূর্বল ভাবতে শেখায়।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে নারী ও পুরুষের মর্যাদা সমান। আমাদের এ উপমহাদেশের সংস্কৃতি উল্টা। এখানে সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়, কখনোই কোন রামকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়না।
এমনিতেই আমাদের দেশের মেয়েদের ভাল বিয়ে হওয়া সহজ নয়। তার উপর মেয়েরা ধর্ষিত বা যৌন নির্যাতনের শিকার হলে তো আরোই সমস্যা। তাই আমরা এসব গোপন করি। কারণ মেয়েটিকেই সবাই অস্পৃশ্য মনে করবে, তার ভাল বিয়ে হবেনা, তার পরিবারের বদনাম হবে।
অথচ পুরুষ রেপ বা যৌন হয়রানি করলে, পতিতালয়ে গেলে, পরকীয়া করলে, প্রেমিকার সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করলেও তার বদনাম হয়না, তাকে কেউ খারাপ বলেনা। দিব্বি আবার বিয়ে করতে পারে, তার মান এতটুকু কমেনা। কিন্তু মেয়েরা সমাজের চোখে একবার ভ্রষ্টা খেতাব পেলে তার বেঁচে থাকা দায় হয়ে যায়। একটি মেয়ের সম্ভ্রম চলে যাওয়া মানে সমাজে সে অপাংতেয়। পচে যাওয়া খাবারের মত, যা কেউ খেতে চায়না। তাই নিজেদের সম্মান, পারিবারিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হবার ভয়ে, তথা সামাজিক ভাবে হেয় হবার ভয়ে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ ক্ষমতা থাকা সত্বেও যৌন অপরাধীকে শাস্তি দেয়না, দেবার চেষ্টা করেনা, অপরাধ গোপন করে। অনেক উচ্চবিত্ত, শিক্ষিত পরিবার মানুষও মামলা করেনা লোক জানাজানি হবার ভয়ে, বিচারের নানা হয়রানী সহ্য না করার ইচ্ছা এবং মেয়েটির ভবিষ্যতের চিন্তা (লোকে নানা কথা বলবে, ভাল বিয়ে হবেনা..) করে।
পুরুষ দোষ করলেও আমাদের সমাজ মেয়েদেরকেই দায়ী করে। যেমন ডিভোর্স হয়েছে শুনেই বলা হয় নিশ্চয় মেয়ের দোষ, রেপ হয়েছে শুনেই বলা হয়, নিশ্চয় খোলামেলা পোষাক পরেছিল, স্বামী মেরেছে শুনেই বলে মারতেই পারে, সে তো স্বামী, দোষ না করলে এমনি মারে? শিক্ষক যৌন হয়রানি করেছে শুনেই বলা হয়, শিক্ষককে ফাঁসানোর জন্য ছাত্রী মিথ্যে বলছে। ফলে মেয়েরাও মেনে নেয় যে তার প্রতি নির্যাতন হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটাই ন্যায্য।
যৌন অপরাধ ঘটলে ভিকটিমের পরিচয় গোপন করা হয়। কারণ মেয়েটাকেই সবাই দোষী সাব্যস্ত করে। ভারতের যে মেডিকেল ছাত্রীটি গণধর্ষণেরে শিকার হয়ে মারা গেল, ভারতীয় মিডিয়া তার পরিচয় গোপন করে তার নাম দিল "ভারত কন্যা"। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। যেমন - ভারতেই গণধর্ষণের শিকার আরেকটি মেয়ে বলেছিল, "আমি ব্যথা পেয়েছি, তবে সম্মান হারাইনি। সম্মান তাদের গেছে, যারা আমার উপরে নির্যাতন করে অপরাধ করেছে।"আমির খানের উপস্থাপনায় "সত্যমেব জয়তে" অনুষ্ঠানে এক মহিলা ক্যামেরার সামনে প্রকাশ্যে নিজের পরিচয় প্রকাশ করে এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া গণধর্ষণের বীভৎসতার বর্ণনা দেয়। তার বক্তব্য ছিল, "আমি কোন অন্যায় বা পাপ করিনি। তাই আমার মুখ লুকানোর কোন প্রয়োজন নেই। মুখ লুকাবে তারা, যারা আমার অপরাধী।"
একদিন দেখলাম, আমাদের গর্ব, বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, টিভিতে বর্ণনা দিলেন কিভাবে দীর্ঘ নয় মাস ধরে পাকিস্তানী আর্মি অফিসাররা পালাক্রমে দিনের পর দিন তাঁকে গণধর্ষণ করেছে। সাক্ষাতকারের শেষের দিকে উনি কেঁদে ফেললেন। বললেন, "আমি মাঝে মাঝে নিজেই নিজের শরীরে হাত বুলিয়ে দেখি, আর নিজেকেই প্রশ্ন করি, এই আমিই কি সেই আমি?" সমাজ আপনাকে প্রত্যাখ্যান করে কিনা বা কিভাবে দেখে? - এ প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌসী বলেন, "সমাজ আমাকে কি প্রত্যাখ্যান করবে? আমি সমাজকে প্রত্যাখ্যান করেছি।"
যৌন নির্যাতনের প্রতি আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে। ধীরে হলেও তা বদলাচ্ছে। এখন মেয়েরা সাহস করে প্রতিবাদ করে। বনানী কেসটি তার সর্বশেষ উদাহরণ।
২। কৌসুলি হয়ে প্রমাণ জোগাড় করাঃ এমন নির্যাতন থামাতে হলে টেকনোলজি ব্যবহার, ছল, বন্ধুদের সহযোগিতা ইত্যাদি যেকোন উপায়ে এসব হারামীদের অপকর্মের প্রমাণ জোগাড় করে তাদের মুখোশ খুলে দেয়া। তাহলে তারা শায়েস্তা হতে বাধ্য। মেয়েদের সাহসী হওয়া খুব জরুরী। কিছুতেই ভয় পেয়ে আত্মসমর্পণ করা যাবেনা।
৩। সামাজিক প্রতিরোধঃ পৃথিবীর উন্নত দেশে অপরাধীদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়। তাদের আত্মীয়-স্বজনরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারেনা। অপরাধীরা নানাভাবে হেয় হয়। আর আমরা জেনেশুনে ঘুষখোর অফিসার, কর্মকর্তা-কর্মচারী বা পুলিশের সাথে আত্মীয়তা করি। অপরাধ করেছে জেনেও সব ভুলে তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করি। আপন কেউ, নিজ দল বা মতের লোকেদের অপরাধের কথা গোপন করি। মেনে নেই। মনে করি তার অপরাধ এমন গুরুতর কিছুনা বা অপরাধই না। সম্প্রতি বনানী রেপ কেসে আমিন জুয়েলার্সের মালিক তার ছেলের অপরাধকে বলেছে 'দুষ্টামি'!!!
৪। ছেলেমেয়েদের প্রতিবাদী হতে শেখানোঃপ্রতিটা শিশুর সামাজিকীকরণের প্রথম প্রতিষ্ঠান হল তার বাড়ী, তার পরিবার। এটিই তার আচরণ, মূল্যবোধ, ধারণা, বিশ্বাস, নৈতিকতা, সাহস, শিক্ষা.. ইত্যাদির ভিত্তি তৈরী করে দেয়। এই ভিত্তিই তার সারাজীবনের আচরণের মূল চাবিকাঠি। এখান থেকে সে যা শিখবে, সারাজীবন সে তাই করবে। পরিবারে সে ভাল কিছু শিখলে সে ভাল হবে, নাহলে খারাপ। তাই ছোটবেকা থেকে আমাদের উচিত আমাদের শিশুদের প্রতিবাদ করতে শেখানো। কখনো যেন তারা কোন অন্যায় মেনে না নেয়। তাহলে তারা ভয় পাবেনা, কিছু গোপন করবেনা, সাহসী হবে, যেকোন অন্যায়ের শুরুতেই প্রতিবাদ করতে শিখবে। এটা খুব জরুরী।
৫। আইনের কঠোর প্রয়োগঃ পৃথিবীর সভ্য দেশগুলোতে সত্যিকারের আইনের শাসন আছে। অর্থাৎ অপরাধ করে কেউ পার পায়না। ঘুষ খেয়ে কেউ অপরাধীকে শাস্তি থেকে রেহায় পেতে সাহায্য করেনা। আমাদের দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর 6 নেই। অর্থাৎ এখানে ক্ষমতা ও টাকা থাকলে মেয়েদের প্রতি অন্যায় করে পার পাওয়া যায়।
মাঝে মাঝে মনে হয় কোনদিনই কি এদেশে তেমন অবস্থা হবেনা, যখন অপরাাধী যেইই হোক না কেন, শাস্তি থেকে রেহায় পাবেনা কিছুতেই? ঘুষ খেয়ে কেউ অপরাধীকে শাস্তি থেকে রেহায় পেতে সাহায্য করবেনা। অপরাধীর সাথে সেলফি তুলে মিথ্যে বলবেনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘুষ খাবেনা। বিবেকের, দেশের, আইনের তথা রাষ্ট্রের কাছে প্রকৃত দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা থাকবে। বিচার বিভাগ ও আইনশৃংখলা বাহিনী সততার সাথে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করলে পরিস্থিতি বদলাতো। তাহলে অবশ্যই কোন উন্নত দেশের মত আমরাও আশা করতে পারতাম, প্রতিটা মানুষ ন্যায়বিচার পাবে, প্রতিটা অপরাধী যথার্থ শাস্তি পাবে।
সামনাসামনি সবাই এসব যৌন নির্যাতনকারী শিক্ষকদের সাথে ভাল ব্যবহার করলেও মনে মনে সবাই এদের ঘৃণা করেন। এরকম কিছু হারামীর জন্য পুরো শিক্ষক সমাজকে লোকে অশ্রদ্ধা করে, শিক্ষার্থীরাতো বটেই।
https://www.bn.bdeduarticle.com/শিà¦à§à¦·à¦-যà¦à¦¨-যà§à¦¨à¦¨à¦¿à¦°à§à¦¯à¦¾à¦¤à¦¨à¦à¦¾/
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৫২