শত জনমের আকাঙ্খা আর অপেক্ষার সীমাহীন প্রহর পেরিয়ে
আমরা কাছাকাছি এসেছি আজ।
চাইলেই ছুঁতে পারি, তোমার হাত ধরতে পারি,
জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে পারি তোমার ঠোঁটে,
তোমার গায়ের গন্ধে মাতাল হলেও কিছু ক্ষতি হবার কথা ছিলনা।
ঘন কালো দীর্ঘ অন্ধকার রাতের ওপারে এসেও নির্বিকার,
জেনে গেছি, আমরা আর আমাদের নেই।
কিছু অমানুষের নির্মমতা দু'জনের মাঝে টেনে দিয়েছে লক্ষণরেখা।
দূর্ভেদ্য বার্লিন প্রাচীর বা চীনের প্রাচীরও তবু পেরোনো যায়,
এ দেয়াল পেরোনোর সাধ্যি নেই আমাদের।
তবু তুমি বললে, "এসো, হাত ধরো, সাগর সাঁতরাবোই,
ভয় কি? প্রয়োজনে তোমার জন্য ঝিনুক হব,
শত ঝঞ্ঝায়ও জ্যোতি হারাবেনা আমাদের ভালবাসার মুক্তো।"
আমি আর্তচিৎকার করে বললাম,
"কি করে যাব? পায়ে শিকল যে!"
"আমার শিকল খুলে দাও,
আমি শ্বাস নেব মুক্ত বাতাসে।"
অমানুষদের কাছে আমার নিষ্ফল অনুরোধ
বাতাসে মিলিয়ে গেল ধীরে।
তারপর আমাদের কষ্টে বাতাস হয়েছে কালবৈশাখী, সুনামি,...
তবু মন গলেনি মানুষরূপী অমানুষদের।
তুমি ফিরে গেলে একা, অন্ধকারে, অনেক দূরে লোকালয় ছেড়ে।
সাত পৃথিবী শূন্যতা, এগারো মহাকাশ কষ্ট বুকে নিয়ে।
আমাদের বেদনার রঙ মিশে গেছে
পাহাড়ের কান্না, মরূর হাহূতাশ আর সাগরের গোঙ্গানিতে।
তোমার ফেরার পথের দিকে অপলক তাকিয়ে দেখেছি
হৃৎপিণ্ড থেকে গড়িয়ে পড়ছে ফোঁটা ফোঁটা তাজা রক্ত অশ্রু হয়ে।
আমি ছটফট করেছি যন্ত্রণায়।
কেউ দেখেনি, দেখতে চায়নি,
শুধু দূরের ঐ আকাশ বুকে তুলে নিয়েছে
আমাদের নীল কষ্টে বোনা নীলাম্বরী।
বেঁচে আছি আজো, যেমন থাকে সবাই,
সুখী মানুষের খোলসে নিষ্প্রাণ লাশ।
কখনও কখনও বৃষ্টিতে চোখের নোনাজল ধুয়ে গেলে
কান পেতে শুনি তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ আর
পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন, চিরনতুন গান -
"ভালবাসি, ভালবাসি।"
হয়তো কোন একদিন জানবো বা জানবোনা
কোন একটি বা দু'টি লাশই সমাহিত হয়েছে।
তখন আমরা কামিনীর গন্ধ, মেঘ বা বৃষ্টি হব,
চুপিচুপি ছুঁয়ে যাব আমরা আমাদের।
পাখিদের বলে দিও, তারা যেন দেখেও না দেখে,
দুটি প্রেমিক প্রাণের মিলনের মাঝে
তারা যেন অমানুষ না হয়।
আলপনা তালুকদার
২৫ জুলাই, ২০১৭
রাজশাহী।
( কবিতাটা এডিট করে রিপোস্ট দিলাম। ইচ্ছে হল কেন, বলতে পারবনা।)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৫৮