অংক শিক্ষা
আমার দুই মেয়েকেই ছোটবেলা থেকেই আমি পড়াই। বড়টাকে এখন কম দেখি। কিন্তু ছোটটা (টুতে পড়ে) আমার কাছেই পড়ে। আজ ছুটির দিনে সকালে আমার মেয়ের বাবা তার বেকারত্ব ঘোচাতে মেয়েকে বিয়োগ অংক করাতে বসেছেন। বাবা বলছেন, "মনে কর, তুমি ত্রিশ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে। বিশ টাকা দিয়ে একটা কোক কিনলে....।" বাবাকে থামিয়ে দিয়ে মেয়ে বলল, "আমি তোমার কাছে অংক করবনা। তুমি অংক পারনা। আমি কি কোক কিনব নাকি? আমি তো কিনব আইসক্রিম।" ব্যাস্! পড়া শেষ!!!
মরাল অফ দ্যা স্টোরিঃ অনেকগুলো বিদেশী ডিগ্রীধারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হলেই যে সে অংক ভাল জানবে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কারণ ক্লাস টুর বিয়োগ অংক করানো পিএইচডি করানোর চেয়েও অনেক বেশী কঠিণ!!!!!
(শিক্ষা মনোবিজ্ঞান বলে, প্রতিটি শিশুর বয়স, ক্ষমতা, আগ্রহ, বুদ্ধি,.... ইত্যাদি যেহেতু আলাদা, তাই তাদেরকে সেই অনুযায়ী শেখাতে হবে। শিশুরা বয়সের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের কারণে দুষ্টামী করবে, পড়া ফাঁকি দেবে, পড়তে চাইবে না বা পড়লেও বড়দের মত অত তাড়াতাড়ি মনোযোগ দেবেনা। আপনি বাবামা বা শিক্ষক হলে তাকে আদর দিয়ে, বুঝিয়ে, সাহায্য করে, ধৈর্য্য ধরে, ভয়ভীতি-নির্যাতন না করে আনন্দের সাথে শেখাবেন। আর জোর করে যেকোন উপায়ে শুধু বেশী নম্বর পাওয়ার জন্য মুখস্থ করে পড়ালে সে কিছুই শিখবেনা। শিশুরা বুঝে ও আনন্দের সাথে শিখলে সেটাই কেবল শিশুর দীর্ঘদিন মনে থাকে, সেই শিক্ষাই কেবল শিশুর জীবনের নানা পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানোর কাজে লাগে। আমাদের অনেকের ধারণা, শিশুরা কম বোঝে। এই ধারেণা ঠিক নয়। ওরা ওদের মত করে বোঝে, ব্যাখ্যা করে, যা বড়রা সবসময় বোঝেনা। শিশুর সরলতাকে কখনও বোকামী ভাববেন না। প্রতিটা শিশুই ইউনিক, প্রতিটা শিশুই সৃষ্টিকর্তার অনবদ্য দান!!!)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৪