বাংলার মাটি
দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের ক্ষেতের দিকে
অবাক বিস্ময়ে তাকায় ক্লান্ত চাষী!
আপন মনেই প্রশ্ন করে, এ ভূমি এত উর্বর কেন?
কেন এ মাটিতে ফসলের এমন ছড়াছড়ি?
অতীতের আয়না হাতড়িয়ে বোঝে,
এ মাটিতে মিশে আছে এদেশের বীর সন্তানদের রক্তবীজ,
নদীগুলোতে স্বজনহারাদের চোখের জল।
এমন মাটি-জল আর কোথা আছে?
এদেশের মাঝি, রাখাল, বাউল বা গাড়িয়াল
কোথায় পেল এমন পাগল করা গানের সুর?
এমন সুমধুর কণ্ঠ?
কোকিলের কুহূতান, শিশুদের কলকাকলি দিয়েছে সুর,
ঢোল, একতারা, খন্জনী হয়েছে তার দোসর
কৃষ্ণচূঁড়ার কুঁড়ি দিয়েছে শব্দ,
কার সাধ্যি আছে এমন গান বানাবার?
ভিনদেশী কোথা পাবে এমন কণ্ঠ?
বয়সের বলিরেখা ভাবে,
এ মাটিতে কোথা থেকে এল এত কবি?
কেন জন্মালো এত লেখক?
সন্তান হারা মায়ের কষ্টে আকাশ হয়েছে নীল,
লাখো শহীদের রক্তে আরক্তিম গোধূলি,
তারা ভাবুক করেছে কবিকে।
বর্ষার বিলে ফোটা লাল-সাদা শাপলা,
শরতের শিউলীর গন্ধ, দখিণা বাতাস, উদাসী জোছনা,...
কলম তুলে নিতে বাধ্য করেছে লেখককে।
যেমন শ্রমিক, চাষা, বৃদ্ধ বা গেঁয়ো কিশোরকে
এ মাটি একদা বানিয়েছিল অকুতোভয় যোদ্ধা।
তাই বাংলাই হোক আমার শেষ ঠিকানা,
এ মাটির উর্বরতায় মিশে ধন্য হোক দেহ
কিছুটা হলেও শোধ হবে মায়ের ঋণ!
একদিন আমার বুকের উপরেও দুলবে সোনালী ধানের শীষ!!!
আলপনা তালুকদার
১৮ সেপ্টেম্বর,২০১৭
রাজশাহী।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৩০