(মুফাসসিল ইসলাম এবং ইসলাম ত্যাগ কৃত ইতিহাস পঠিত নারী see youtube ক্লিক করুন)
আপনারা যেভাবে ইসলামের উপর তথাকথিত গনিমতের মাল হিসাবে নারীদের ধর্ষনের কথা বললেন।। ইসলাম যদি এমন হত, তাহলে আমি সবার আগে ইসলাম ত্যাগ করতাম।।
সত্যি বলতে মানুষ প্রথমে একটা বিষয়ের পুরো কাহিনী জানার পরে, তার নিরপেক্ষ যুক্তি প্রদান করে কিন্তু আপনার ভিত্তিটাই আমি বুঝলাম না।। আপনি আমার FB ফেবু তে ফ্রেন্ড লিষ্টে যেহেতু আছেন, হয়তো আপনি আমার পোস্টা পরবেন।। আপনি চাইলে আপনার সাথে any time debate করতে আমি রাজি।। নিরপেক্ষ বিচারক হবে জনগণ।।
যাইহোক
সুরা নিসার আয়াতে বলা হয়েছে,,
-
ﻭَﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢْ ﻛِﺘَﺎﺏَ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻭَﺃُﺣِﻞَّ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﻭَﺭَﺍﺀ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺃَﻥ ﺗَﺒْﺘَﻐُﻮﺍْ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻜُﻢ ﻣُّﺤْﺼِﻨِﻴﻦَ ﻏَﻴْﺮَ ﻣُﺴَﺎﻓِﺤِﻴﻦَ ﻓَﻤَﺎ ﺍﺳْﺘَﻤْﺘَﻌْﺘُﻢ ﺑِﻪِ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ ﻓَﺂﺗُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ﻓَﺮِﻳﻀَﺔً ﻭَﻻَ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺗَﺮَﺍﺿَﻴْﺘُﻢ ﺑِﻪِ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﺍﻟْﻔَﺮِﻳﻀَﺔِ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ
-
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। [ সূরা নিসা, আয়াত নংঃ২৪ ]
আমরা এখন সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতটা পুরাটা দেখি তাইলে পাই এখন আমরা দেখতে পাই যে “অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। ’’ এই আয়াত দ্বারা কিন্তু বুঝা যাচ্ছে যে যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে একটি চুক্তি করেই তারপর তার সাথে মিলিত হতে হবে। হ্যা আর এই চুক্তিটাকেই বলা হয়েছে মুতা বিবাহ। অর্থ্যাৎ মুতা বিয়ের মাধ্যমেই সাহাবীরা যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে মিলিত হত।। (যা রহিত হয়ে গেছে, আগের পোস্টে প্রমান করে দেখিয়েছি ক্লিক করুন)
তারপর আমরা যদি এর পরের আয়াতটা দেখি
-
ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻣِﻨﻜُﻢْ ﻃَﻮْﻻً ﺃَﻥ ﻳَﻨﻜِﺢَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻓَﻤِﻦ ﻣِّﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢ ﻣِّﻦ ﻓَﺘَﻴَﺎﺗِﻜُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟﻠّﻪُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺈِﻳﻤَﺎﻧِﻜُﻢْ ﺑَﻌْﻀُﻜُﻢ ﻣِّﻦ ﺑَﻌْﺾٍ ﻓَﺎﻧﻜِﺤُﻮﻫُﻦَّ ﺑِﺈِﺫْﻥِ ﺃَﻫْﻠِﻬِﻦَّ ﻭَﺁﺗُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻣُﺤْﺼَﻨَﺎﺕٍ ﻏَﻴْﺮَ ﻣُﺴَﺎﻓِﺤَﺎﺕٍ ﻭَﻻَ ﻣُﺘَّﺨِﺬَﺍﺕِ ﺃَﺧْﺪَﺍﻥٍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃُﺣْﺼِﻦَّ ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﺗَﻴْﻦَ ﺑِﻔَﺎﺣِﺸَﺔٍ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻧِﺼْﻒُ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏِ ﺫَﻟِﻚَ ﻟِﻤَﻦْ ﺧَﺸِﻲَ ﺍﻟْﻌَﻨَﺖَ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻥ ﺗَﺼْﺒِﺮُﻭﺍْ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻜُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭٌ ﺭَّﺣِﻴﻢٌ
-
আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে তোমাদের অধিকারভুক্ত মুসলিম ক্রীতদাসীদেরকে বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা পরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না। অতঃপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করে, তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে ভয় করে। আর যদি সবর কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। [ সূরা নিসা, আয়াত নংঃ২৫ ]
**সূরা নিসার ২৫ নং আয়াতের ব্যাখ্যায়
তাফসীরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে যে কারো যদি যুদ্ধবন্দী কোন নারী বা ক্রীতদাসীর প্রতি আকর্ষন বোধ হয় তাইলে সে তাকে বিয়ে করে তারপর তার সাথ মিলিত হবে।। দেখুন আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এখানে ক্রীতদাসী/যুদ্ধবন্দী নারীদেরকে বিয়ে করার ব্যপারে তাগাদা দিচ্ছেন এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান করার জন্যও বলা হচ্ছে।। এর চাইতে বেশী অধিকার একজন ক্রীতদাসীকে আর কি দেয়া যেতে পারে??
যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে কেউ সেক্স করতে চাইলে তাদেরকে বিয়ে করার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে (৪:২৫)।।
** উম্মুল মুমেনীন জুহায়রিয়া, রায়হানা ও সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহারা কিন্তু প্রথমে যুদ্ধবন্দী নারী হিসাবেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসেছিলেন। পরবর্তীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন।
তাই আজকে আমরা হযরত জুহায়রিয়া, হযরত রায়হানা ও হযরত সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহাকে উম্মুল মুমেনীন বলি।।
(এই পোস্টা হৃদয়ে কত কষ্ট নিয়ে লিখতে হচ্ছে)
---
নাস্তিকরা শুধু আপনাকে সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতের ১ম অংশ দক্ষিন হস্তের কথাটা বলবে কিন্তু নাস্তিকরা কখনই আপনাকে সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতের পুরাটা ও সূরা নিসার ২৫ নং আয়াতের পুরাটা বলবে না। কারন সূরা নিসার ২৪ ও ২৫ নং আয়াত টা পড়লেই আপনারা বুঝবেন যে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যুদ্ধবন্দী নারীদের কে বিয়ে করার হুকুম দিয়েছেন।।
**আবার সেক্স করার জন্য যুদ্ধবন্দীনি নারীদের উপর কোন জোর-জবরদস্তি করা যাবে না এটাও কোরআনে বলা হয়েছে- ”
-
”
ﻭَﻟْﻴَﺴْﺘَﻌْﻔِﻒِ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﺎ ﻳَﺠِﺪُﻭﻥَ ﻧِﻜَﺎﺣًﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﻐْﻨِﻴَﻬُﻢْ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣِﻦ ﻓَﻀْﻠِﻪِ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺒْﺘَﻐُﻮﻥَ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏَ ﻣِﻤَّﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢْ ﻓَﻜَﺎﺗِﺒُﻮﻫُﻢْ ﺇِﻥْ ﻋَﻠِﻤْﺘُﻢْ ﻓِﻴﻬِﻢْ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻭَﺁﺗُﻮﻫُﻢ ﻣِّﻦ ﻣَّﺎﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺁﺗَﺎﻛُﻢْ ﻭَﻟَﺎ ﺗُﻜْﺮِﻫُﻮﺍ ﻓَﺘَﻴَﺎﺗِﻜُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺒِﻐَﺎﺀ ﺇِﻥْ ﺃَﺭَﺩْﻥَ ﺗَﺤَﺼُّﻨًﺎ ﻟِّﺘَﺒْﺘَﻐُﻮﺍ ﻋَﺮَﺽَ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻜْﺮِﻫﻬُّﻦَّ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﺇِﻛْﺮَﺍﻫِﻬِﻦَّ ﻏَﻔُﻮﺭٌ ﺭَّﺣِﻴﻢٌ
-
যারা বিবাহে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন। তোমাদের অধিকারভুক্তদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চায়, তাদের সাথে তোমরা লিখিত চুক্তি কর যদি জান যে, তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে, অর্থ-কড়ি দিয়েছেন, তা থেকে তাদেরকে দান কর। তোমাদের দাসীরা নিজেদের পবিত্রতা রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য কারো না। যদি কেহ তাদের উপর জোর-জবরদস্তি করে, তবে তাদের উপর জোর-জবরদস্তির পর আল্লাহ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা নুর: ৩৩]
অর্থ্যাৎ সূরা নূরের ৩৩ নং আয়াত মতে বুঝা যাচ্ছে যে কোন যুদ্ধবন্দী নারী বিয়ে ছাড়া মিলিত হতে না চাইলে তাকে জোর করা যাবে না। অবশ্যই বিয়ের মাধ্যমে যুদ্ধবন্দী নারীর সাথে মিলিত হতে হবে।।
**ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফের ১০ খন্ড পৃষ্ঠা ৩০৬ তে ২৯১২ অনুচ্ছেদে সূরা নূরের ৩৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে হযরত ওমরের খিলাফত কালে সরকারী মালিকানাধীন এক গোলাম গনীমতের পঞ্চমাংশে প্রাপ্ত একটি দাসীর সাথে জোর জবরদস্তিমূলকভাবে যিনা করে।।
হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু উক্ত গোলামকে কশাঘাত করলেন ও নির্বাসন দিলেন।। অর্থ্যাত্ কেউ যুদ্ধবন্দী নারী বা তার অধিনস্থ ক্রীতদাসীর সাথে ইচ্ছার বাইরে Sex করলে তার উপর হুদুদ প্রয়োগ হবে।।
**তাইলে আপনারা দেখুন নাস্তিকরা কিভাবে সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতের ১ম অংশ দিয়ে কিভাবে আমাদের কে বিভ্রান্ত করছে। আল কোরআনের কোথায় আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যুদ্ধবন্দী নারীদের কে ধর্ষন করতে বলেছেন ??
নাউযুবিল্লাহ।।
সূরা নিসার ২৪, ২৫ ও সূরা নূরের ৩৩ নং আয়াতগুলি পড়লে আপনারা বুঝবেন যে যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে মুতা বিবাহ অথবা স্থায়ী বিবাহের মাধ্যমেই শুধু মিলিত হওয়া যাবে।
যুদ্ধবন্দী নারীদের কে যে সাহাবীদের মাঝে বন্টন করে দেওয়া হত এই কথা বুখারী শরীফেও বলা আছে।।
খায়বার যুদ্ধের পর যখন নিয়ম অনুযায়ী মালে গনীমত ( যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ও দাস-দাসী) মুজাহিদদের মাঝে বন্টনের প্রস্তুতি চললো এবং এই উদ্দেশ্যে সকল বন্দীকে একত্র করা হলো, তখন দিহাইয়া এসে বললেন- হে নবী , আমাকে বন্দিনী নারীদের মধ্য হতে একজন দাসী দিন। নবী বললেন- যাও তোমার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে নাও। উনি তখন সাফিয়া বিনতে হুইকে নিলেন। এক লোক এসে বললেন- হে নবী আপনি দাহিয়াকে সেই নারী দিয়েছেন যে নাকি খায়বারের সর্দারের স্ত্রী এবং সে কেবল আপনারই উপযুক্ত। নবী তখন তাকে সাফিয়াকে তাঁর কাছে আনার জন্য হুকুম করলেন। সাফিয়াকে তার সামনে আনা হলে, তিনি দেখে দিহাইয়াকে অন্য নারী নিতে বললেন ও সাফিয়াকে নিজের কাছে রেখে দিলেন এবং বিয়ে করলেন’ (বুখারী, বই ১, ভলিয়ুম-৮, হাদিস-৩৬৭)।’
-
আদম (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (খায়বারের যুদ্ধে) নবী ﷺ সাফিয়্যা (রাঃ)-কে (প্রথমত)বন্দী করেছিলেন। পরে তিনি তাঁকে আযাদ করে বিয়ে করেছিলেন। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, নবী ﷺ তাঁর মোহর কত ধার্য করেছিলেন? আনাস (রাঃ) বললেনঃ স্বয়ং সাফিয়্যা (রাঃ)-কেই মোহর ধার্য করছিলেন এবং তাঁকে আযাদ করে দিয়েছিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন | সহীহ বুখারি (ইফা)
অধ্যায়ঃ ৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান) | হাদিস নাম্বার: 3887]
-
এরপরে হিজরি ৫ম সনে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খবর পেলেন যে বনু মোস্তালাক গোত্রের নেতা হারিস ইবনে দিরার মক্কার কুরাইশদের প্ররোচনায় নিজের ও অন্যান্য আরব গোত্রের লোকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনী নিয়ে মদীনা আক্রমণের তোড়জোড় শুরু করেছে। রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খবরটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বুরাইদা ইবনে আল হুসাইবকে বনু মোস্তালাক গোত্রের কাছ পাঠালেন। তিনি সেখানে পৌঁছে খোঁজখবর নিয়ে বুঝলেন ঘটনা সত্য। তিনি সাথে সাথে ফিরে এসে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বনু মোস্তালাক গোত্র যে মদীনা আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিয়েছে তা জানালেন। কাল বিলম্ব না করে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদী গোত্র বনু মোস্তালাক কে আক্রমন করে বনু মোস্তালাক গোত্র কে পরাজিত করেন। বনু মোস্তালাক গোত্রের ৬০০ জন যুদ্ধবন্দীকে দাসদাসী ঘোষণা করে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈনিকদের মাঝে বন্টন করে দেওয়া হয়।
বনু মোস্তালাক গোত্রের গোত্রপতি হারিস ইবনে দিরারের কন্যা জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস হযরত সাবিত ইবনে কায়েসের ভাগে পড়েন।।
কিন্তু জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস ৯ উকিয়া স্বর্ণের বিনিময়ে হযরত সাবিত ইবনে কায়েসের সাথে মুকাতাবা বা চুক্তি করলেন যে এই ৯ উকিয়া স্বর্ন উনি সাবিত ইবনে কায়েস কে দিলে সাবিত ইবনে কায়েস উনাকে মুক্ত করে দিবে। কিন্তু এই ৯ উকিয়া স্বর্ন জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস যোগাড় করতে পারছিলেন না। পরিশেষে যখন জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহায্য চাইলেন তখন রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ থেকে উনার মুক্তিপন আদায় করে জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রস্তাবে রাজী হলে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে সাবিত ইবনে কায়েস কে ৯ উকিয়া স্বর্ণ পরিশোধ করে দিয়ে জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস কে একজন স্বাধীন নারী ঘোষণা করে তারপর জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস কে বিয়ে করেন। এরপর সাহাবীরা বনু মোস্তালাক গোত্রের সেই ৬০০ বন্দীকেও মুক্ত করে দেন। কারন সাহাবীরা তখন বলেন রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কখনো আমাদের দাসদাসী হতে পারে না। বনু মুস্তালাক গোত্রের প্রতিটা বন্দীর মুক্তি হযরত জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিসের দেন মোহর হিসাবে ধার্য হয়। [ তথ্যসূত্র, সুনানে আবু দাউদ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১০৫ ]
অর্থ্যাৎ বনু মোস্তালাক গোত্রের কোন ব্যক্তিকেই সাহাবীরা দাসদাসীতে রূপান্তরিত করেন নাই।।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭