২০১৬ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে এক ঝড় বয়ে চলেছে যা বছরের এই শেষ অব্দি বহমান ছিল। একটা চলচ্চিত্র যে বাংলাদেশে এইভাবে নাড়াচাড়া দিবে তা কল্পনাতীত। কারণ এক ‘বেদের মেয়ে জোছনা’র পর বিগত কয়েক দশকে একটি চলচ্চিত্র নিয়ে বাংলাদেশে এমন মাতামাতি দেখা যায়নি। হ্যাঁ, বলছি ‘আয়নাবাজি’ ছবিটির কথা। আর অসাধারণ এই সৃষ্টির নেপথ্যে যিনি নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি অমিতাভ রেজা চৌধুরী।
কীর্তিমান এই মানুষটির জন্ম ১৯৭৬ সালের ১ অক্টোবর। সেই ছেলেবেলা থেকেই অগণিত চলচ্চিত্র দেখার দরুন অমিতাভ স্বপ্ন দেখতে থাকেন যে বড় হয়ে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হবেন। কিন্তু নিতান্ত মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান হওয়ায় এমন স্বপ্ন বাস্তবায়নে পরিবার থেকে উৎসাহ পাননি। এক রকম মায়ের চাপেই ভারতের পুনেতে পাড়ি জমান অর্থনীতিতে পড়ার জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে দেশে ফিরে আসেন সাহিত্যের ডিগ্রী নিয়ে। অমিতাভের ধারণা ছিল সাহিত্য নিয়ে পড়লে তার পরিচালক হবার পথ সুগম হবে।
দেশে ফিরে অমিতাভ ১৯৯৯ সালে নির্মাণ করেন ‘হাওয়া ঘর’ নামের একটি টেলিছবি। এরপর একুশে টেলিভিশনের জন্য নির্মাণ করেন ‘বন্ধন’ নামের ধারাবাহিক নাটক যেটা সেই সময়ে ব্যাপক সাড়া পায়। হাওয়া ঘর আর বন্ধনের সাফল্যের পর বিজ্ঞাপন নির্মাণের অফার পান অমিতাভ। বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন নির্মাণে এখন পর্যন্ত তিনি অতুলনীয়।
বোন মেহজাবিন রেজাকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন হাফ স্টপ ডাউন নামের প্রোডাকশন হাউজ যেখান থেকে বারোটির মত টেলিছবি নির্মাণ করেছেন। তবে এ সব কিছুকে ছাপিয়ে লক্ষ্য ছিল একটাই, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ। সেই লক্ষ্যে নির্মাণ করেছেন ‘আয়নাবাজি’। তথাকথিত বাণিজ্যিক ধারার ছবিকে পাশ কাটিয়ে ভিন্ন ধারার ছবিও যে সব শ্রেণীর দর্শক দেখে তার একটি বড় উদাহারন এই ‘আয়নাবাজি’। সগৌরবে এখনো হলে চলছে ছবিটি। দেশের বাইরেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে ছবিটি। দায়িত্বের পাল্লাটা বেশ ভারী হয়ে গেছে পরিচালকের। সামনে আরও অসাধারণ কাজ দেখার প্রত্যাশায় দর্শক।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৮