পূর্ববর্তী দুটি পোস্ট কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি নিয়ে ছিল। আজকের পোস্ট কুষ্টিয়ার আরও দুটি দর্শনীয় স্থান লালনের আখড়া এবং সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের জন্মভিটা নিয়ে।
লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তার শিষ্যদের নীতি ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তার শিষ্যরা তাকে “সাঞ’’ বলে সম্বোধন করতেন। তিনি প্রতি শীতকালে আখড়ায় একটি ভান্ডারা (মহোৎসব) আয়োজন করতেন। যেখানে সহস্রাধিক শিষ্য ও সম্প্রদায়ের লোক একত্রিত হতেন এবং সেখানে সংগীত ও আলোচনা হত। চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর এবং পশ্চিমে অনেক দূর পর্যন্ত বাংলার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বহুসংখ্যক লোক লালন ফকিরের শিষ্য ছিলেন। শোনা যায় তার শিষ্যের সংখ্যা প্রায় দশ হাজারের বেশি ছিল।
১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। তার নির্দেশ বা ইচ্ছা না থাকায় তার মৃত্যুর পর হিন্দু বা মুসলমান কোনো ধরনের ধর্মীয় রীতি নীতিই পালন করা হয় নি। তারই উপদেশ অনুসারে ছেউড়িয়ায় তার আখড়ার মধ্যে একটি ঘরের ভিতর তার সমাধি করা হয়। আজও সারা বাংলাদেশ থেকে বাউলেরা অক্টোবর মাসে ছেউড়িয়ায় মিলিত হয়ে লালনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
লালনের পালক পিতা মলম শাহ এবং অন্যান্য শিষের সমাধি
দর্শনার্থীদের মাজারের ভেতরে গমন। বিধি নিষেধ থাকায় মাজারের ভেতরের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি
লালন অনুসারীদের সংগীত পরিবেশনা
লালনের ঘরের দরজা
লালনের শিষদের ব্যবহার করা তৈজসপত্র এবং বাদ্যযন্ত্র
শিল্পীর কালি তুলির আঁচড়ে লালন
আখড়ার বাইরেই রয়েছে ছোট ছোট অনেক দোকান যেখানে বাদ্যযন্ত্র সহ দেশীয় সংস্কৃতির অনেক কিছু পাওয়া যাবে
এবার ঘুরে আসি সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম ভিটা থেকে
মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায়। তাঁর জন্ম ভিটায় একটি স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জাদুঘরে রয়েছে পালকি, কলম, কলমের দোয়াত, আরাম কেদারা, বাসনপত্র ইত্যাদি। বিধি নিষেধ থাকায় জাদুঘরের ভেতরের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি।
মশাররফের বিখ্যাত গ্রন্থাবলির কিছু উক্তি
সাহিত্যিকের জন্ম ভিটায় নিজ হাতে লাগানো আম গাছ
কুষ্টিয়ার বিখ্যাত কুলফি না খেলে অপূর্ণতা থেকেই যায়
শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ; চৌরহাস মোড় থেকে তোলা
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৬