প্রিয় পাঠক আপনাদের কি মনে পড়ে বা মনে আছে ?
আমার কিন্তু মনে পড়ে এবং এখনও মনে আছে, ১৯৯০ সালে
বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হুমায়ন আহমেদের
রচনায় ধারাবাহিক নাটক কোথাউ কেউ নেই। নাটকটিতে
প্রধান চরিত্র অর্থাৎ বাকের ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন
তখনকার নাট্য যুবরাজ আসাদুজ্জামান নূর ।
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ১
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ২
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৩
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৪
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৫
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৬
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৭
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৮
বাকের ভাই বা কোথাউ কেউ নেই নাটকের পর্ব ৯
বাকিগুলো আশা করি পাঠক নিজগুনে ইউটিউব থেকে সন্ধান করে নিতে পারবেন ।
১৯৯৩ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর আদালতের রায়ে বাকের ভাই নামে একজন মাস্তানের ফাঁসি কার্যকর করা হয় । মজার ব্যাপার হচ্ছে এটি সত্যিকারের কোনো ঘটনা নয় এটা সম্পূর্ণ একটা কাল্পনিক নাট্য রূপ ছিল। ধারাবাহিক এই নাটকের প্রধান চরিত্র বাকের যে তার পরোপকারী স্বভাবের কারণে এলাকার লোকজনের কাছে বাকের ভাই হিসেবে পরিচিত হন।তার এই ফাঁসি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দর্শকদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। উপমহাদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাহিত্যিক কর্ম বা সাহিত্য থেকে উঠে আসা কাল্পনিক চরিত্র নিয়ে নানা সময়ে আলোড়ন দেখা গেলেও বাকের ভাইয়ের ফাঁসি দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে দর্শকদের মাঝে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল তাকে এর সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজনই মনে করছেন বিরল এবং বিস্ময়কর একটা ঘটনা।
ধারাবাহিক এই নাটকটি সাধারন দশর্কদের কাছে এতোটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল যে ধারাবাহিকটির প্রতিটা পর্ব আমরা সাধারন দর্শকরা প্রবল আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করতাম। ধারাবাহিকের অগ্রগতির সাথে সাথে একটা সময় দর্শকরা বাকের ভাইকে পছন্দ করে ফেলেন এবং বাকের পক্ষে জনমত গড়ে উঠে। একপর্যায়ে যখন বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হবার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠে উকিল হুমায়ূন ফরিদি শত চেষ্টাসত্ত্বেয় আশা হারিয়ে ফেলছেন এই কেসে তখন দর্শকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন এবং চলতে থাকে মিছিল, দেওয়াল লিখন, সমাবেশ।ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজন মিছিলও করেন এবং স্লোগান দিতে থাকেন
বাকের ভাইয়ের ফাঁসি কেন, কুত্তাওয়ালী জবাব চাই
অথবা
বাকের ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে
আর এসব খবর সমসাময়িক পত্র পত্রিকাতেও প্রকাশিত হতে থাকে বেশ গুরুত্বের সাথে। তখন অবশ্য মনে হয়েছিল হয়তো লেখক জনমতের ভিত্তিতে ধারাবাহিকের গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ তা করেন নাই বরং ধারাবাহিকটিকে তার যথাবিহীত পরিণতি করেন এবং বাকের ভাইয়ের পক্ষে দর্শকদের তুমুল আবেগ এবং সমর্থন সত্ত্বেও ধারাবাহিক নাটকে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০০