আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির দক্ষিণে অদ্ভুত ধরনের উজ্জ্বল এবং ভারী একটি তারা রয়েছে, যার নাম ইটা ক্যারিনি। তারাটির ভর সূর্যের চেয়ে একশ’ গুণ বেশি। চতুর্থ উজ্জ্বল তারা হিসেবে ১৬৭৭ সালে এটি খুঁজে পান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। লালচে এই অতিদানব তারাটির অবস্থান পৃথিবী থেকে ৮ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। এই তারা ব্যবস্থা থেকে বিস্ফোরণের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা হোমানকুলাস নীহারিকার কেন্দ্রস্থলের বিরল চিত্র চলতি বছরের প্রথম দিকে হাতে এসেছে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের। জেমিনি মানমন্দির প্রকাশ করেছে এই আলোকচিত্র।
ছবিতে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে যে, সেখানে কী ভয়াবহভাবে বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে এবং পরিণতিতে কী অবস্থার তৈরি হয়েছে। স্বল্পায়ুর দানব তারারা মৃত্যুর আগে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, এই দৃশ্য তারই প্রমাণ বয়ে চলেছে। হোমানকুলাস নীহারিকার কেন্দ্রে সংঘটিত এমন ভয়ঙ্কর অবস্থা সম্পর্কে এর আগে কিছু জানা সম্ভব হয়নি। নতুন গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতেই তা এখন উন্মোচিত হয়েছে।
১৮৪৩ সালের এপ্রিলে ইটা ক্যারিনির আধুনিক ইতিহাসের সূচনা হয়। ২০ বছর ধরে তখন বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। আর এরই একপর্যায়ে এটি হয়ে ওঠে মহাকাশের দ্বিতীয় উজ্জ্বল নক্ষত্র। লুব্ধকের পরই এর স্থান হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা, ওই বিস্ফোরণের সময় ইটা ক্যারিনি মহাকাশে যেসব বর্জ্য উদিগরণ করেছে, তার পরিমাণ হবে অন্তত আমাদের সূর্যের ভরের বিশগুণের সমান। এর কয়েক বছর পর থেকে উজ্জ্বলতা কমতে থাকে এবং একপর্যায়ে এটি সপ্তম উজ্জ্বল তারা হিসেবে আবির্ভূত হয়। এর বর্ণালিতে আয়নিত লোহার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তারাটি হলুদ অতিদানব তারায় পরিণত হতে যাচ্ছে।
গবেষকরা এখন এর কাছাকাছি অবস্থান করা মহাজাগতিক বস্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে শুরু করেছেন, যাতে করে ইটা ক্যারিনি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এই গবেষণা সফল হলে অতিদানব তারার উত্পত্তি, বিকাশ ও ধ্বংস সম্পর্কে জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ হবে। একইসঙ্গে বেরিয়ে আসবে নানা রহস্য উন্মোচনের ক্লু। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মূলত জানতে চাইছেন এ ধরনের অতিদানব তারার বস্তু উদিগরণে, বিস্ফোরণে, শক্তিশালী চুম্বক এবং শক্তিশালী জেটের ক্ষেত্রে ঠিক কী ধরনের প্রক্রিয়া কাজ করে, সেটি উদ্ঘাটন করতে। এটি বের করার ক্ষেত্রে সফলতা পাওয়া গেলে অতিদানব তারা সম্পর্কে ধারণা আরও স্বচ্ছ ও বিস্তৃত হবে।
.......বাকীটুকু পড়ুন