somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনীতি, সংঘাত ও আর কর্পোরেট ক্রাইম নিয়ে পছন্দের কিছু ছবি

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সিনেমা আমি দেখি সব ধরণের। তবে ঘরানা হিসেবে পছন্দ পলিটিক্যাল বা কর্পোরেট ক্রাইম জাতীয় সিনেমা । সত্য ঘটনা অবলম্বনে হলে ভাল হয়। আবার অনেক সময় এমন হয় কাহিনীটা হয়তো বানানো কিন্তু স্থান বা ঘটনাটি হয়তো এরকমই। তালিকা আমার পছন্দের ক্রমানুসারে করা হয়নি। যখন যেটার কথা মনে হয়েছে সেভাবেই তৈরি।

১। মিসিং-১৯৮২ সালের ছবি। পরিচালক গ্রীক পরিচালক গোস্তা গারবাস। জ্যাক লেমন আর সিসি স্পাসেক। ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ক্যু হয় চিলিতে। নিহন হন সালভাদর আলেন্দে, মতায় বসে সামরিক শাসক আগাস্তো পেনোসে। একই সময় চিলিতে ঢুকছিলেন মার্কিন লেখক চার্লস হারমান। কিন্তু তাকে আর পাওয়া যায়নি। বউ সিসি স্পাসেক আর বাবা জ্যাক লেমন খুঁজতে থাকে চার্লসকে। খুঁজতে খুঁজতে তারা ঠিকই বুঝে ফেলেন যে এই ক্যু-এর পেছনে হাত রয়েছে সিআইএর, যা জেনে ফেলায় মেরে ফেলা হয় চার্লসকে। ছবির কোনো দৃশ্য ৭১-কে মনে করিয়ে দেয়। বিশেষ নদীতে ভেসে যাওয়া লাশ, কিংবা স্টেডিয়ামে আটক রাখার দৃশ্য। এটি সত্যি ঘটনার ছবি। চার্লস-এর বাবা মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন।
২. আন্ডার ফায়ার-নিক নল্টে আর জেনে হেকমান আছে এই ছবিতে। নিকারাগুয়ার সমোজা সরকারের শেষ সময়ের ঘটনা নিয়ে ছবি। কাহিনী সত্যি নয়। কিন্তু সত্যি ঘটনার উপর ভিত্তি করেই তৈরি। তিন সাংবাদিকের দৃষ্টিকোন দিয়ে দেখা হয়েছে সময়টাকে।
৩। হ্যারিসনস ফাওয়ারস: মূলত এটা একটা ফ্রেঞ্চ ছবি। নিউজউইকের পুরস্কার পাওয়া ফটো সাংবাদিক হ্যারিসন লয়েড। ১৯৯১ সালে যায় যুগোস্লাভিয়ায় ছবি তুলতে। তখন সেখানে চলবে সার্ব বাহিনীর অত্যাচার। খবর আসে যে হ্যারিসন মারা গেছে যুদ্ধের সময়। বিশ্বাস করে না বউ সারা। সাংবাদিক পরিচয়ে চলে যায় যুগোস্লাভিয়ায়। এক সময় ফিরিয়ে আনে হ্যারিসনকে। কাহিনী সত্যি না। কিন্তু ঐ সময় যুগোস্লাভিয়ায় প্রায় ৪০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছিল। যে ম্যাসাকেরর বিভৎস দৃশ্য আছে সেটি আসলেই ঘটেছিল। ১৯৯১ সালের ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সিভিলিয়ানদের উপর যে ম্যাসাকার হয়েছিল তা এখন ইতিহাস। ছবিটা আসলেই সেটি নিয়েই।
৪. দি কিলিং ফিল্ডস: আরেকটি অসাধারণ ছবি। কম্বোডিয়া নিয়ে। নিউ ইয়র্ক টাইমস এর রিপোর্টার সিডনি আর তার দোভাষি নিয়ে ছবি। রোনাল্ড জোফে পরিচালক। সত্যি কাহিনীর ছবি। খেমার রুজের সঙ্গে কম্বোডিয়ার ন্যাশনাল আর্মির সঙ্গে গৃহযুদ্ধের সময়কার কাহিনী। এই ছবি না দেখা পাপের সমান।
৫। অল দ্য প্রেসিডেন্টস ম্যান: ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ছবি। পুরোটা ফাস করে দিয়েছিল ওয়াশিংটন পোষ্টের দুই সাংবাদিক। আর তাদের তথ্য দিয়েছিল ডিপথ্রোট নামের অজ্ঞাতনামা এক সূত্র। পুরোটাই সত্যি কাহিনী। এর ফলে নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সেরা ঘটনা। অভিনয়ে রবার্ট রেডেেফার্ড আর ডাস্টিন হফম্যান।
৬। মিসিসিপি বার্ণিং: মিসিসিপিতে ১৯৬৪ সালে তিনজন মানবাধিকার কর্মী খুন হয়েছিল। সেই খুনের ঘটনা নিয়ে ছবি। এফবিআইয়ের দুইজন তদন্তকারীর তদন্ত নিয়েই ছবি। জেনে হেকম্যান ও উইলিয়াম ডেফো অভিনীত।
৭। জেড: গ্রীক পরিচালক গোস্তা গারবাসের আরেকটি ছবি। গ্রিসের গণতন্ত্রকামী রাজনীতিবিদ গ্রেগরিস ল্যামব্রাকিস খুন হয়েছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে ছবি।
৮। জেএফকে: জন এফ কেনেডির হত্যা রহস্য নিয়ে ছবি। নানা ভাবে দেখার চেষ্টা হয়েছে হত্যাকান্ডকে। অলিভার স্টোনের ছবি। নানা বিতর্ক আছে। কিন্তু দেখার জন্য খুবই ভাল একটা ছবি।
৯। সালভাদর: এটিও অলিভার স্টোনের ছবি। সালভাদরের গৃহ যুদ্ধ সময়কার ছবি। বামপন্থী গেরিলারা একদিকে, অন্যদিকে ডানপন্থী সেনাবাহিনী। বলাই বাহুল্য এই সেনাবাহিনীর সমর্থনে ছিল যুক্তরাষ্ট্র।
১০। মিউনিক: ১৯৭২ সালে মিউনিক অলিম্পিকের সময় অলিম্পিক ভিলেজে ঢুকে আরব গেরিলারা ১১ জন ইসরায়েলী ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছিল। সেই হত্যাকান্ডের পরের ঘটনা নিয়ে ছবি। এর পর পাল্টা আক্রমনসহ যেসব ঘটনা ঘটেছিল সে কাহিনী নিয়ে এই ছবি। স্পিলবার্গ ছবির পরিচালক। তবে হত্যাকান্ড যেভাবে ঘটেছিল তা নিয়েও রয়েছে অসংখ্য ছবি। যেমন, এর মধ্যে দেখতে পারেন ২১ আওয়ার্স এট মিউনিক।
১১. হোটেল রোয়ান্ডা: ১৯৯৪ এর রোয়ান্ডার গণহত্যা নিয়ে ছবি। ভাল একটা ছবি। যদিও এটি নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ইতিহাস বিকৃতির। এই বিষয় নিয়ে আরও দুটি ছবি দেখতে পারেন। যেমন, সামটাইমস ইন এপ্রিল এবং শুটিং ডগস।
১২. দি কনস্টান্ট গার্ডেনার: এটি একটি কর্পোরেট ক্রাইমের ছবি। স্থান কেনিয়া। ওষুধ কোম্পানি ওষুধের প্রভাব পরীা করার জন্য বেছে নেয় আফ্রিকাকে। আর এসব খুঁজতে গিয়ে খুন হয় ব্রিটিশ কূটনীতিকের বউ র‌্যাচেল। একসময় হত্যা রহস্য খুঁজতে বের হয় কূটনীতিক স্বামী। অনেক পছন্দের একটি ছবি।
১৩। দি ইনসাইডার: আল পাচিনো ও রাসেল ক্রো। সত্যি ঘটনা নিয়ে ছবি। সিগারেট কোম্পানির এক কর্মকর্তা ফাঁস করে দেয় কর্পোরেট অসততার ছবি। সাহায্য করে এক সাংবাদিক। সিএসবি চ্যানেল এটি উদঘাটন করেছিল।
এর বাইরে আছে জোডিয়াক। ১৯৬০ সালের সান ফ্রান্সিসকোর সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে ছবি। দেখতে পারেন ডি কেপরিওর ব্লাড ডায়মন্ড-বিষয় সিয়েরা লিওনের গৃহযুদ্ধ। সেভিওর বসনিয়ার যুদ্ধ সময়কার ছবি। দি লাস্ট কিং অব স্কটল্যান্ড ইদি আমিন আর তার ডাক্তার বন্ধু নিয়ে ছবি।
৩৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×