এ যুগের অন্যতম বড় রহস্য বার্মুডা ট্র্যাঙ্গল। অাটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ৪ লক্ষ ৪০ হাজার মাইল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে বার্মুডা ট্র্যাঙ্গল। অসংখ্য মানুষ, বিমান, জাহাজ এই ত্রিকোণ রহস্যের মধ্যে পড়ে চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে। ১৪৯২ সালে স্পেনীয় নাবিক এবং ভূপর্যটক ক্রিস্টোফার কলোম্বাস প্রথম এই বার্মুডা ট্রায়্যাঙ্গল সম্পর্কে লেখেন। তাঁর জাহাজের কম্পাসও বার্মুডা ট্রায়্যাঙ্গেলে অকেজো হয়ে যায়। সে যাত্রায় কোনও ক্রমে উদ্ধার পান তিনি।
কেন বার্মুডা ট্রায়্যাঙ্গেলে এলেই বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় বিমান বা জাহাজকে? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা? বিগত একশো বছর ধরে একাধিক সম্ভাবনা, অনুমান সামনে এলেও কোনও নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। ‘ডেভিলস ট্র্যাঙ্গল’ নিয়ে নিরন্তর গবেষণা করেও ‘কেন’র উত্তর পাওয়া যায়নি। যদিও এই রহস্য নিয়ে চলেছে বিস্তর আলোচনা। নানা ব্যাখ্যা। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি। তবে ২০১৬ সালে বিখ্যাত আবহবিদ রেন্ডি কারভ্যানি-সহ বেশ কিছু বিজ্ঞানী ব্যাখ্যা দেন এই রহস্যের। তাঁদের দাবি, বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেলের রহস্যের পিছনে রয়েছে এক রকম ষড়ভুজাকৃতি মেঘ (হেক্সাগোনাল ক্লাউড)। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা দ্বীপে ২০ থেকে ৫৫ মাইল জুড়ে ষড়ভুজাকৃতি মেঘ তৈরি করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ু। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ মাইল। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ুকে বলা হয় ‘এয়ার বম্ব’। এই বায়ু প্রায় ৪৫ ফুট উচ্চতার ঝড় তৈরি করতে পারে। যার ফলে বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গেল দিয়ে যাওয়া জাহাজ বা প্লেন উধাও হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন, যে সমুদ্রের তলদেশে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে ওই প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস উঠে আসছে, শুধু তাই নয়। সমুদ্রের তলদেশে একেবারে শক্ত বরফ হয়েও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিথেন। আগ্নেয়গিরির লাভাস্রোতের গরমে তা গ্যাস হয়ে গিয়ে অসম্ভব রকমের গরম মিথেন গ্যাসের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাতেই ঘটছে যাবতীয় বিপত্তি।
কেন ওই এলাকাটিকে বলা হয় ‘বারমুডা ট্র্যাঙ্গেল’? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অতীতে জাহাজ আর বিমানগুলো হারিয়ে গিয়েছে সমুদ্রের যে যে এলাকার কাছাকাছি, সেই এলাকাগুলোকে কোনও এক অদৃশ্য লাইন দিয়ে জুড়লে, তা একটা ত্রিভুজ বা ‘ট্র্যাঙ্গেলে’র চেহারা নেয়।
সেই জায়গাগুলো হলো পুয়ের্তো রিকো, মিয়ামি আর বারমুডা।
প্রথম ১৮০০ সাল মার্কিন নৌ বাহিনীর জাহাজ ইউএসএস পিকারিং নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর আরো ৯টি বড় জাহাজ নিখোঁজ হেয়েছে এখানে। ১৯৪৫-এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পাঁচটি মার্কিন বোমারু বিমান এই বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গলেে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। নিখোঁজ পাঁচটি বিমানের সন্ধানে আরও তিনটি বিমান পাঠারো হয়। হয়। ফোর্ট লডরডেলের বিমানঘাঁটিতে ফেরেনি এই বিমানগুলিও। ১৯৪৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০টি জাহাজ নিখোঁজ হয়েছে এখানে।২০১৫ সাল মার্কিন বানিজ্য জাহাজ এসএসএল ফারো নিখোঁজ হয়ে যায় এই বারমুডা ট্রায়্যাঙ্গলে। অতিসম্প্রতি ২০১৭ সালরে ১৫ মে চালক সহ মোট চারজনকে (এদের মধ্যে তিন জন একই পরিবারের সদস্য)।ফের বারমুডা ট্র্যাঙ্গলে রহস্যজনভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল একটি চার্টার্ড বিমান।
তথ্য ও ছবি নেট থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০৯