আমি ফেসবুকে প্রবেশ করেছি ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে । তখন ফেসবুকে দেখতাম মানুষ ছবি আপলোড করত । এই সেই হাবিজাবি স্ট্যাটাস দিত । আমার আকর্ষণ ছিল না কোনটাতেই । আমি শুধু ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতাম, যাকে ভাল লাগত তাকেই । আর ছবি দিতাম । এই ছবি দেয়ার জন্য নানা জায়গায় ঘুরতাম আর ছবি তুলতাম । অনেকের লেখালেখি করার অভ্যাস আছে । অভ্যাস না বলে প্রতিভা বলাই ভাল । তারা কেউ কেউ ফেসবুকেই লেখালেখি করতেন, এখনো করেন । এমন অনেক লেখককে চিনি আমি, যাঁদের লেখা বই বের হয় না । কিন্তু ফেসবুকে নিয়মিত লেখালেখি করেন । আমি তাঁদের লেখা পড়ি । খুব ভাল লাগে বলেই পড়ি । একসময় মনে হত ফেসবুক আসলেই খুব ভাল একটা প্লাটফর্ম, যেখানে ভাল লেখক তৈরী হয় । ২০০৪ সালে এই ফেসবুকের জন্ম । বাংলাদেশে পরিচিতি পেতে এর প্রায় ৩-৪ বছর লেগে গিয়েছিল । ২০০৮ থেকে ২০০১০/১১ পর্যন্ত ফেসবুক ছিল একটা প্লাটফর্ম যেখানে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করত ভার্চুয়াল বন্ধুদের সাথে । এরপর থেকে ফেসবুকটা হয়ে যায় আমজনতার । মানে ছাত্র, শিক্ষক, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, হকার কেউ বাদ নেই । সবার ফেসবুকে আইডি আছে । যেন জন্মের পর জন্ম নিবন্ধন করানোর আগে ফেসবুকে আইডি খোলা উচিৎ ।
কি ভাবছেন ? আমজনতা ফেসবুকে আসলে আমার কি সমস্যা ? আরে ভাই, আমার কোন সমস্যা নাই । আমার সমস্যা থাকবে কেন ? আমি তো খুশি । জুকারবার্গ ভাই আমার চেয়েও বেশি খুশি । কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায় । ফেসবুক ইউজ করেন । কে নিষেধ করেছে আপনাকে ফেসবুকে ঢুকতে ? কিন্তু মিসইউজ করবেন না । কোন কিছুই অতিরিক্ত হওয়া ভাল না । এমনকি অতি ভালও ভাল না । ফেসবুকের মিসইউজের একটা উদাহরণ দেই ।
**PSC, JSC, SSC, HSC – যেকোনো পরীক্ষার প্রশ্নের জন্য যোগাযোগ করো । আগে কমন, তারপর টাকা । ২০% অগ্রীম দিতে হবে । যারা প্রশ্ন পেয়েছ তারা লাইক দাও । যারা পাওনি কমেন্ট কর । যাদের প্রশ্ন লাগবে তারা ইনবক্সে যোগাযোগ কর ।**
এটা ফেসবুকের একটা পোস্ট । যেই মহৎপ্রাণ(!) ব্যক্তি এই পোস্ট করেছেন তার সাহস দেখে আমি মুগ্ধ । কারণ আমার বাবাও যদি প্রধানমন্ত্রী হতেন তবু আমার সাহস হত না এই পোস্ট দেয়ার । আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি বাংলাদেশে আইন আছে । সেই আইন প্রয়োগ করার মত শক্ত-সমর্থ সরকার আছে । আর আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী আছে । তবু কেন এবং কিভাবে এইসব পোস্ট দেয়ার সাহস মানুষের হয় তা বোধগম্য নয় । আমি জানি মন্ত্রীসাহেব ফেসবুকের এইসব পোস্ট পড়েন না । কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কারো চোখেই কি পড়েনা ?