somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের সিনেমা শিল্প উন্নয়নের জন্য ৮ দফা : আগে আমাদের শিল্পের উন্নয়ন ঘটান, তারপর কেবল ভারতীয় কেন, সকল সিনেমার জন্য আমাদের দরজা খুলে দিন

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সরকার বার বার ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি করার চেষ্টা করছে। যুক্তিটা হল, ভারতীয় সিনেমা এলে আমাদের সিনেমা হলগুলিতে প্রচুর দর্শক যাবে। প্রদর্শকরা প্রচুর টাকা আয় করবে, তাদের আর সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে হবে না। সুন্দর যুক্তি ।

কিন্তু ভারতীয় সিনেমার সঙ্গে পাল্লা দেয়ার মতো অবস্থা দেশীয় সিনেমার নেই। ফলে ভারতীয় সিনেমার ঠেলায় দেশীয় সিনেমা শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে পুরোপুরি। দেশীয় সিনেমা না থাকলে প্রদর্শকরা তো চিরকালের জন্য বিদেশী সিনেমা নির্ভর হয়ে যাবে।

তাই ভারতীয় সিনেমা আমদানির আগে আমাদের নিজস্ব সিনেমার উন্নয়ন করতে হবে। প্রকৃত উন্নয়ন। যাতে করে ভারতীয় সিনেমা আমদানি করলেও আমাদের সিনেমা শিল্প টিকে থাকতে পারে।

তবে আমার মতে, নিজের সিনেমা শিল্পকে শক্ত ভিত্তির উপর দাড় করানোর পর দরজাটা খুলতে হবে পৃথিবীর যে কোন সিনেমার জন্য, কেবল ভারতীয়দের জন্য নয়। তাহলে হবে প্রকৃত উন্নয়ন। তাহলে হবে প্রকৃত প্রতিযোগিতা। তখন দেশের সিনেমা শিল্পেরও উন্নয়ন হবে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে সেই সিনেমাগুলো যাদের পেছনে থাকবে মেধাবী নির্মাতারা।



আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প উন্নয়নে নিচে ৮ দফা প্রস্তাব দিলাম :

০১. একটি সরকারী ফিল্ম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা। এই ফিল্ম ইনস্টিটিউটে দেশী বিদেশী যোগ্য শিক্ষক ও আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। শুনেছি, এই সরকার একটা আইন পাশ করেছে।

০২. সরকারী খরচে বড় পরিসরে একটা আধুনিক ফিল্ম সিটি তৈরি করতে হবে। এই ফিল্ম সিটিতে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে। পত্রিকায় দেখেছিলাম, গত বিএনপি সরকার গাজীপুরে একটা ফিল্ম সিটির কাজ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছিল। সেটা এখন পর্যন্ত শেষ হয় নাই।

০৩. নতুন নতুন মেধাবী লেখক, পরিচালক ও অভিনেতা খোঁজা দরকার। প্রতি বছর একটা আয়োজন করে নতুনদের ব্যাপক মাত্রায় সুযোগ দেয়া এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। এই আয়োজনটা প্রতি বছর হওয়া দরকার। 'নতুন মুখের সন্ধানে' নামে এফডিসি একটা অভিনয় শিল্পী খোঁজার কার্যক্রম চালায়। কিন্তু সেটা এত অনিয়মিত যে, ওটার মূল উদ্দেশ্য নষ্ট হয়ে গেছে।

০৪. মেধাবী নতুন নতুন চলচ্চিত্রকার তৈরির উদ্দেশ্যে সরকারী অনুদান চালিয়ে যেতে হবে। এখন অনুদান দেয়া হয় ৩৫ লাখ টাকা। এত অল্প টাকা দিয়ে ভালো সিনেমা তৈরি করা সম্ভব না। অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে পুরো ফিল্মের বিনিয়োগ দিতে হবে।

০৫. প্রতিষ্ঠিত প্রযোজক/পরিচালকদের সিনেমা নির্মাণে ব্যাংক ঋণ দিতে হবে। ভারতসহ পৃথিবীর সব বড় বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত সিনেমা পরিচালক/প্রযোজকরা ব্যাংক ঋণ পান।

০৬. সরকার এই সেক্টরে পিপিপির মাধ্যমে দেশী বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে। বিনিযোগের ক্ষেত্রে যৌথ প্রযোজনা একটা ভালো বুদ্ধি। এর আগেও ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে এবং সেগুলো ভালো রকম ব্যবসা সফল হয়েছে।

০৭. সিনেমা হলগুলোকে ভেঙ্গে মার্কেট বানাতে হবে। তবে প্রতিটি মার্কেট হবে বহুতল বিশিষ্ট।তবে শর্ত থাকবে প্রতিটি মার্কেটের উপর তলায় মাল্টিপ্লেক্স থাকতে হবে। কোন সিনেমা হল মালিক যদি এই রকম মার্কেট করতে চান, তবে অবশ্যই সরকার তাকে ঋণ দেবে। মাল্টিপ্লেক্সসহ নতুন মার্কেট বানালে সিনেমা হলের সংখ্যাও বাড়বে এবং অন্য দিকে হল মালিকরাও মার্কেট থেকে ভাড়া বাবদ প্রচুর আয় করবেন।

অথবা পুরোনো জীর্ণ সিনেমা হলের মালিকরা তাদের সিনেমা হলের জায়গাটা ডেভেলপারকে দিয়ে দিতে পারেন। ৫০-৫০ রেশিওতে ডেভেলপার পুরোনো সিনেমা হলটা ভেঙ্গে সেখানে বহুতল মার্কেট বানাবে। তবে শর্ত থাকবে যে, একেবার বসুন্ধরা সিটির মতো মার্কেট বানিয়ে তার উপর তলায় একটা সিনেপ্লেক্স বানাবে। এতে করে সিনেমা হল মালিকদের আর লস নিয়ে ভাবতে হবে না। এই কাজটা করতে হলে কোন ঋণ নেয়ারও দরকার নাই। কোন ঝুঁকিও নাই। বরং মার্কেটের দোকানের সালামী থেকেই বিনিয়োগের টাকা উঠে যাবে। আর মাস শেষে বিপুল পরিমাণ ভাড়া তো আসবেই।

০৮. আপাতত ভারতীয় সিনেমা কেবল মাল্টিপ্লেক্সে চলতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, ভারতকেও বছরে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক বাংলাদেশী সিনেমা তাদের সিনেমা হলে চলার অনুমতি দিতে হবে। সারা বিশ্বের সিনেমা তাদের সিনেমা হলে চলতে পারলে আমাদের সিনেমা কেন পারবে না ?

আমাদের সিনেমা শিল্পের উন্নয়ন না করে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি বন্ধ করা হোক।
আমরা ফেসবুকে আমাদের কভার ফটো এবং প্রোফাইল পিক বদলে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নিচের দুটি পিক আপনাদের কভার ফটো ও প্রোফাইল পিক হিসেবে ব্যবহার করে আমাদের আন্দোলনে আপনারাও একাত্ম হোন।

ইচ্ছে করলে ব্লগের প্রো পিকও পরিবর্তন করতে পারেন। আমি করেছি।

কভার ফটো ও প্রোফাইল পিকের ডিজাইন করেছেন বাংলা চলচ্চিত্র ও পাণ্ডুলিপি গ্রুপের এডমিন অন্তর রায় । তাকে মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানাই।

ছবির লিংক :
http://www.mediafire.com/?6ugt5gqug29sopy

ফেসবুক ইভেন্টে যোগ দিন :
Click This Link


এই একই বিষয়ে আমার পুরোনো লেখা :
আপনি কি বাংলা চলচ্চিত্রকে ভালোবাসেন
ভারতীয় চলচ্চিত্রের আমদানি বন্ধ করা হোক
৩৮ বছর কাটল একটি ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের অপেক্ষায়
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৩
১২টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×