এক বন্ধু এসে বলল: শুনেছিস অমুকের বউ কোকিলের বাচ্চা প্রসব করেছে। চল দেখে আসি। শুনে থ হয়ে গেলাম, হটাত করেই মনে হল কাক কোকিল হয়েছে যা। গল্প আগের টাই। আসল কাহিনী সবাই জানি। এক গ্রামের এক মহিলার বাচ্চা হয়েছে। আর সেই সন্তান দেখতে একটু কাল । সেই কাল সন্তান হবার খবর অন্য-গ্রাম এ কাঁকের বাচ্চা হয়ে গেল। আর আজ শুনলাম কোকিলের বাচ্চা, দেখতে কাল কিন্তু কান্নার সুর নাকি খুব সুন্দর। এখন আজকের দুটি বাস্তব চর্চা বলি। মানে এই ক্যাম্পাসে শিক্ষিত মানুষগুলো কেমন সেই চর্চা ধরে রেখেছে সেই কাহিনী বলি।
কাহিনী -১
গত কাল সোমবার মাশুক মামার টং এ বসে গল্প করতেছি এক আপু কৌতূহল নিয়ে জিগ্যেস করল। তোদের ব্যাচে নাকি এক ছেলে একশতটা প্রেম করছে। শুনে আমি আহাম্মক হয়ে গেলাম। আমার ব্যাচে কিন্তু আমি জানিই না! এর পরের অংশ শুনে বোকার মত তাকিয়ে রইলাম। এবার নাকি মৌলভীবাজার এ গিয়ে এক মেয়ের সাথে কাহিনী করে আসছে। তাকে বললাম জানি না। তখন নিজেরই জানার আগ্রহ বেড়ে গেল। জিগ্যেস করলাম উৎস কোথায়? দেখি যিনি বলছেন তাকে চিনি কিনা। চিনলে তার আড্ডার সার্কেল সম্পর্কে জানতে পারব। নাম শুনে বেশি কিংকর্তব্যবিমুর হয়ে গেলাম, ওনাকে জানি এবং আমার এক সময়ের খুব ভাল বন্ধু ছিল। এখন তেমন কথা হয় না।
আসল কাহিনী বন্ধুকে বলতে বললাম। যার সারমর্ম হল। ছেলেটা আগে অনেক গুলো মেয়েকে পছন্দ করত, একটা বা দুইটা সম্পর্কও ছিল কিন্তু এখন পুরো থিতু। অনেক “গুলো শব্দ” একশত বা এর বেশি সংখ্যার সংবাদ হয়ে আমাদের এন্টেনায় ধরা দিয়েছে।
কাহিনী-২
আজ ডিউটি করে পানসী নামক রেস্টুরেন্টে খেয়ে ভাবলাম আজ সারে আটটার বাস দিয়ে ক্যাম্পাসে যাব। সেই অনুসারে হাঁতে একটা কদবেল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্ট এ দাঁড়িয়েছি মাত্র এক সিনিয়র আপুর সাথে দেখা। ভাল মন্দ কথা শেষে কেন দাড়িয়ে আছি সেই কথা উঠল। একা কেন জিগ্যেস করতে আমি উত্তর দিলাম, আমার তো কেউ নেই যে আমাকে এখানে সঙ্গ দেবে তাই। তিনি যা বললেন শুনে একটু মজা পেলাম। “তোমাকে নাকি কখনো একলা দেখব না শুনলাম । একজন না একজন থাকবেই তোমার পাশে ।” কিন্তু পরের কথা টা তীরের মত বিঁধল যদিও তাঁর কথা হাসিমুখেই জবাব দিয়েছি। তাঁর বক্তব্য, আমি নাকি এক ভাবীর পিছনে সারাদিন টাংকি মারছি। তাঁর কাছে এই সংবাদ টা যেভাবে উপস্থাপন হয়েছে তিনি সেভাবেই বলছেন। প্রশ্ন হল সাংবাদিকটা কে? এত সুন্দর একটা নিউজ কভার করল। তাকে তো একটা নোবেল প্রাইজ দেয়াই দরকার।
আসল কাহিনী—ক্যাম্পাস এ বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় এক মেয়ের গ্যাং এলো। দেখে ভাল লাগলে খোজ নিলাম ইনস্ট্যান্ট, শুনলাম মেয়ের বিয়ে ঠিক। আর একটা উচ্চবাচ্য করার দরকার হল না। আমরা আমাদের আড্ডা নিয়ে চলে গেলাম গেট এ। পনের মিনিটের ও কম সময় সেখানে তারা অবস্থান করছে। মেয়ের সাথে কথাই হল না, দশ মিনিট একটা মানুষ বসে চলে গেল। তাঁর সম্পর্কে জেনেছি বলে টাংকি মারা হল? পরে একদিন শুনলাম উনি এখন ভাবি তাও নামের। যাই হোক এমন বয়সে শত শত মানুষকে ভাল লাগে। কিন্তু ঠিক কে হবে জীবন সঙ্গিনী তা খুব কম মানুষই জানে। ভাল লাগতেই পারে। অন্যের ভাল লাগা নিয়ে অনেকেই বিকৃত আনন্দের উৎস বানিয়ে নেয়। আমি ওপেন মনের মানুষ কিনা তাই আপন ঘরের বাসিন্দা কে অতি উৎসাহে বলে ফেলেছিলাম। তাদের আবার লেদিস হল এর বাসিন্দার সাথে আছে।
বেশ জমে উঠেছে কাণ্ড কাঁরখানা। একটা জিনিস উপলব্ধি করলাম । আপন চোখে যা দেখেছি সেটা সত্যি কিন্তু আপন কানে তৃতীয় ব্যক্তি থেকে যা শুনলাম তা মিথ্যা।