somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুম

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম ডেটিং বলে কথা। কিচ্ছু জানি না, নার্ভাস লাগছে, কিভাবে শুরু করব এটা নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছি। কাউকে বলতেও পারছি না।না বলেও পারছি না। তাই নিভাকে বললাম তোর প্রেমের অভিজ্ঞতা আছে নাকি?
সে যেটা উত্তর দিল তাতে আক্কেল গুড়ুম। আমি কি প্রেম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে বেরাই নাকি ? ওর কথা শুনে দ্বিতীয় কথা বলার সাহস দেখাই নি। অনেক চিন্তার পরে মাথায় এলো আমার এক সারের কথা । স্যার বলেছিল তোমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হচ্ছে,সেই যে তোমার পাঁশে থাকবে, তুমি যখনই চাইবে আর যা চাইবে পেয়ে যাবে। সেটা হচ্ছে গুগোল। প্রেমিকার সাথে প্রথম দিন কিভাবে কথা বলা শুরু করব, কি বলব? এইসব প্রশ্নের ভাঙ্গা ভাঙ্গা উত্তর ছাড়া আমার কাছে আর কোন উত্তর ছিল না। গুগোল এ সার্চ দিয়েও লাভ হল বলে মনে হয় না। সব লেখাই প্রেমের দীর্ঘ কাহিনী। শুরুটা কি ভাবে করা যায়, সেটা দুএকটা কথায় শেষ করেছে । প্রেমিক কবিদের কবিতা পরলাম কিন্তু এসব বললে তো সে বলবে কপি করে চালিয়ে দিচ্ছি। সারারাত ভেবে বের করতে চেষ্টা করলাম কি বলা যায় কিন্তু মোটা মাথায় কিছুই বলার মত পেলাম না। মানুষ যখন অপরাধ করে তখনো নাকি ঈশ্বর কে ডাকে। আমার মা জানলে মেরে ভুত বানিয়ে ফেলবে। সুতরাং আপাতত এটা অন্যায় মনে হচ্ছে তাই আল্লার নিকট সাহায্য চাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। যদি বেরা(আবোল-তাবোল) লাগিয়ে দেন তিনি!
সকাল থেকে বসে আছি বিকাল হয়ার জন্য। কখন বিকাল হবে আর আমি দেখব সুন্দরী এক নতুন মানুষকে রাগিব রাবেয়া মেডিকেল এর চা বাগানে, যে আমাকে মাত্র তিন মাসে অনেক আপন করে নিয়েছে।
দুপুরে খাবার সময় হয়ে গেছে বিছানা থেকে আর ওঠা হয় না। আমার কাল রাতে ঘুম হয়নি, সকালে একটু ঘুম পেয়েছিল কিন্তু মেসের বড় ভাই খাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে ডেকে দিল। খেয়ে আবার শুয়ে ভাবছি।
সব চিন্তার সারমর্ম আমি একটা গোলাপ হাতে নিয়ে উপস্থিত হলাম রাগিব রাবেয়া মেডিকেল এর পাঁশে চা বাগানের ভিতর সাজানো সিরিতে। কিন্তু কেউ এলো না। সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে রইলাম কাউকে না পেয়ে রুমে ফিরে যাব । কিন্তু এই গোলাপ কি করে ঘরে নিয়ে যাই? আমি দুচোখে অন্ধকার দেখছি, গাল বেয়ে জল টপ টপ করে শার্ট ভিজে যাচ্ছে ।ফুল টা ছুড়ে ফেলে দেব ভাবছি কিন্তু ফুল কোন দোষ করে নি তাই হাতে রেখে দিলাম। কোন সান্ত্বনায় আমার মন মানছে না। রাগে দুঃখে ফুল ছুড়ে ফেলে দিলাম। টাস করে একটা শব্দ হল। শব্দের সাথে সাথেই ঠাস করে গালের উপর একটা থাপ্পড় পরল। চেয়ে দেখি বড় ভাই বিছানার সামনে দাড়িয়ে। ভয়ে কিছু বললাম না,
মোবাইল কি অন্যায় করছে?
না।
তাহলে কল না ধরে ঢিল মারলি কেন?
আমি...... মানে ফুল, আর বলতে হল না । উঠে মোবাইল টা কুরিয়ে নিয়ে চালু করলাম। দেখি বিকাল পাঁচটা বাজে। সন্ধ্যার বেশি বাকি নেই। সাজি একত্রিশ বার কল করছে। তাড়াহুড়ো করে বেরুলাম। গিয়ে দেখি মেয়েটার কান্না কান্না অবস্থা, আমার হাতে তিনটা ফুল সমেত একটা ডাল। এই চা বাগানের চায়ের সাদা ফুল। আমি এর আগে কখনো দেখিনি। বাগানে প্রবেশ করার সময় মনে হল হাতে কোন ফুল নেই, এখন ফিরে গিয়ে ফুল আনার মত বোকামি করার মানে হয় না। একটু খুজতেই পেয়ে গেলাম একটা ছোট্ট সাদা ফুল। কাছে গিয়ে দেখি একটা না তিনটা ফুল। ওর চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা হচ্ছে। আজ প্রথম দিন আর আজকেই সাজিকে অপেক্ষায় রাখলাম! মাথা নিচু করে হাত টা বারিয়ে দিয়ে বললাম সরি। সাজি সিরিতে দাড়িয়ে আছে , আমি নিচের সিরিতে । ফুল দেখে বলল এটা কি ফুল।
চা ফুল।
খুব সুন্দর তো!
আমি এবার মাথা তুলে দেখলাম অন্ধকার মুখে আলোর দ্যুতি। অভাগ হওয়া চাহুনিতে বলল আগে কখনো দেখিনি। চা ফুল এমন হয়? যদিও কোন ঘন্ধ নেই কিন্তু খুব ভাল লাগছে নতুন ফুল হাতে পেয়ে। তাও তুমি দিলে আমায়।
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম। তুই থেকে তুমিতে চলে এসেছে সাজি। এতক্ষণ দেরি করে এসেছি তবুও কোন অভিযোগ নেই। এ কি করে সমভব? ভাবছি।
এভাবে কি দেখছ?

তুমি ছাড়া সামনে দেখার মতো কিছু নেই!

এই তিন মাসে সাজি নামে অন্যকেউ ছিল নাকি?

না, তবু আজ কেন জানি তোমাকে নতুন মনে হচ্ছে।

তাই? তুমি আসছ না দেখে তো ভয় পেয়ে গেছিলাম। ভাবছি তুমি বিপদে পড়েছ কিনা। তাই চিন্তা হচ্ছিল।

হুম, আমি ঘুমিয়ে

না, বলতে হবে না। পরে শুনব সে কথা আজ তোমাকে আমার অনেক কিছু বলার আছে। তুমি এখানে দাড়াও।

আমাকে যা বলার বসেই বল। এখন আবার দাঁড়াব?

যা বলছি তাই করতে হবে, শুধু আজকের জন্য সামিত প্লিস।

আচ্ছা দাঁড়ালাম। আমি দাড়িয়ে আছি ব্যাগ থেকে একটা লাল গোলাপ বের করে সামনে বসে সাজি বলল তোমার জন্য এই ফুল এনেছি সেই চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে। সাত সাগর পারি দিয়ে কোন কিছু এনে দেবার মত আমার ক্ষমতা নেই। এই ভুবনে আমার জীবন তোমার জন্য। পরকালেও আমি তোমার সঙ্গী হতে চাই। আমি ছাড়া আর কেউ তোমায় ভাল জানে না। তুমি আমার সব সামিত।

আমি কথাগুলো শুনে যাচ্ছিলাম ফুলটা নিতে আমি বসলাম, বসে বললাম এইভাবে বসে বলার কথা ছিল আমার কারণ আমি তোমায় প্রস্তাব দিছি।

তুমি প্রস্তাব দিছ প্রথম দেখে আর আমি দিলাম এতদিন জেনে শুনে এত সুন্দর একজন মানুষকে জীবন সাথী হিসেবে গ্রহণ করার আনন্দে।

আমি ফুল নিয়ে বসে রইলাম।
অনেকক্ষণ পাশাপাশি বসে থাকার ইচ্ছে ছিল কিন্তু সন্ধ্যা হওয়ায় আজ আর বসা হল না। হলে রেখে চলে এলাম রুমে। বলা হল না মনের অব্যক্ত কথাগুলো।

রাতে এসে এসএমএস চলছে। কথা হল অনেক, কিন্তু ওই বসে থাকার অনুভূতি অন্যরকম, বলে বোঝানোর ক্ষমতা এখনো হয়নি। মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীতে এই একটা সুখের জন্য জন্ম হয়েছে। এটা না পেলে জন্ম বৃথা।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×