ঃ কিরে কই তুই ?
ওপাশ থেকে কি যেন বললো ।এপাশ থেকে
ঃ আমি সৌদি আরব থেকে চলে আসলাম আর তুই আব্দুল্লাহপুর থেকে এখনো আসতে পারলি না ?
রাগে গজ গজ করে ফোন রেখে দিলো । এয়ারপোর্ট এ বসে আছি । হাজারো মানুষের ভীরে একাকি । এয়ারপোর্ট বড় অদ্ভুত এক আবেগের যায়গা । এখানে হাজারো মানুষের আবেগের দেখা মেলে । কেউ কাদছে প্রিয়জন দূরে যাচ্ছে এই আনন্দে, এই কাছে ফিরে পাওয়ার আনন্দে । আমি বসে শুধু দেখছি । একটা যুবক ছেলে বের হলো । আন্দাজে যা বুঝলাম মা আর বোন অপেক্ষা করছে । মাকে দেখেই দৌরে এসে জড়ায়ে সেকি কান্না । ছোট বোনটাও কান্না । একজন বিদেশি বের হয়েই ছিগারেট ধরিয়ে টানতে শুরু করলো । আমার পাশে গ্রাম থেকে আসা একটা ফ্যামিলি । বাবাটা বৃদ্ধ । পুরোনো জামা খুব সুন্দর করে ধোয়ার চেষ্টা করেছেন । ওতটা পড়েই এসেছেন । ছোট একটা মেয়ে সাথে আর মেয়ের মা । গ্রামের মানুষ । যতদুর শুনলাম ছেলে দুবাই থেকে আসতেছে । তাকে নিতে এসেছে । চোখে মুখে অব্যক্ত আনন্দ । বার বার সামনে তাকায়া দেখতেছে । একজন বাসায় ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করতেছে ঠিক মত সব রান্না হইছে কিনা । বুঝলাম ফোন বাড়িতে দিয়েছিল । একজন কে দেখলাম বাইরে যাচ্ছে । বাবা সাথে এসছে । ফোনে সম্ভবত মায়ের সাথে কথা বলছে " মা আমি খুব তারাতারি আসবো । টেনশন কইরো না । টাকা পাঠাইলে কিস্তি শোধ করবা । আর ঠিকমত ওষুধ খাইবা । আর একদম কান্না করবানা । তুমি কাইনলে কিন্তু আমিও কানমু । " খেয়াল করলাম ঘুরে ছেলেটা চোখ মুছলো ।
এয়ারপোর্টে একটা বিষয় খেয়াল করলাম । যদি কখনো কোন বিমান নষ্ট থাকে তাহলে বিকল্প ব্যাবস্থা আছে । আমারেতো বিকল্প ব্যাবস্থায় পাঠাইতে চাইতেছিল ফ্রি । এখানে যে পরিমান মশা , তাতে এরা উড়ায়া নিয়া আপনারে কুয়েত রাইখা আসতে পারবে ।
একটা ছেলে বের হলো । বাইরে তার বৃদ্ধ বাবা আর ছোট ভাই মেবি । আইসাই ভুল ইংরেজি বলা শুরু করলো ।" একচুয়ালি আই নট বাংলা টকিং , লটস অফ ইয়ার্স লিভ ফরেন দুবাই । সো স্পিক নট বাংলা । দুবাই ইজ অলয়েজ ইংলিশ । দুবাই ইন্টারন্যাশনাল কান্টি সো ইন্টার ন্যাসনাল টকিং। দোন্ট মাইন্ড ইংলিশ টকিং, ইউ বাংলা টকিং । "একদমে বললো । আমি হা কইরা চায়া রইলাম । এরপর চোখ গেলো বাপের দিকে । "ম্যান, হোয়াট জুব্বা ডার্টি ইউ । মা বালো আচে ? " পোলার বাপ কইলো হ বাপ । চল বাড়ি যাই ।