somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুধবার বন্ধের নেপথ্য কারণ কি?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তথ্যটি মারত্মক রকমের বেদনাদায়ক। গণমানুষের কথা বলার শেষ কণ্ঠটি নিরবে শেষ নি:শ্বাষ ত্যাগ করেছে। হতাশ করেছে অসংখ্য সচেতন মানুষকে। বন্ধ হয়ে গেছে সাপ্তাহিক বুধবারের প্রকশনা। গত ১১ এপ্রিল শেষ সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে। তবে এই সংখ্যায় প্রকাশনা বন্ধের আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষনা ছিলো না।
নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই বুধবার (১১ এপ্রিল) সকাল বেলা পত্রিকার স্টল থেকে এক কপি বুধবার কিনে নিলাম। কিন্তু আশ্চার্য যতটুকু হওয়া সম্ভব হলাম এইদিন রাত ১১টায় বার্তা ২৪ ডটনেটে একটি সংবাদ দেখে। এই সংবাদটির শিরোনাম ছিলো- “বন্ধ হয়ে গেল সাপ্তাহিক বুধবার”।
এই সংবাদটিতে বুধবার বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য যে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই কারণটিকে অত্যান্ত দুর্বল যুক্তি বলে মনে হয়েছে। সংবাদটিতে বলা হয়েছে, “বন্ধ হয়ে গেল সাপ্তাহিক বুধবার। আজ যে সংখ্যাটি বের হয়েছে সেটিই শেষ সংখ্যা।ট্যাবলয়েট সাইজের ১৬ পৃষ্ঠার এই সাপ্তাহিকটি বোদ্ধা পাঠকমহলে বেশ জনপ্রিয় ছিল। অনেক ইনডেপথ প্রতিবেদন প্রকাশিত হতো। আর দেশ ও জাতির জন্য পত্রিকাটির ইতিবাচক ভূমিকা অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে পত্রিকাটি লেখা ছাপাতো। দেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিরা এই পত্রিকাটিতে লিখতেন। আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও ধরে নেয়া হতো বুধবার ইংরেজি দৈনিক নিউএজ-এর সহযোগী প্রকাশনা। নিউএজ-এর প্রকাশক এএসএম শহিদুল্লাহ খান ছিলেন বুধবার’র প্রকাশক। এর সম্পাদক ছিলেন নিউএজ-এর সম্পাদক নূরল কবির। নির্বাহী সম্পাদকের দ্বায়িত্বে ছিলেন আমীর খসরু। পত্রিকাটির সহযোগী সম্পাদক চন্দন সরকার বার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, ‘এটাই বাস্তবতা যে বুধবার আর বের হচ্ছে না। আমরা কষ্ট পেয়েছি। আমির খসরু আর আমি অন্য জায়গা থেকে এসেছিলাম। মালিক অর্থ যোগাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।’ শুরু থেকেই পত্রিকাটি বিজ্ঞাপন সংকটে ছিল। বলা চলে বিজ্ঞাপনবিহীন পত্রিকাটি প্রকাশ হতো।”

একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা যেটা নিউজ প্রিন্টে প্রকাশিত হয় তার প্রকশনা ব্যায় আর কতই। যে প্রতিষ্ঠান বা প্রকাশক প্রতিমাসে অর্ধ কোটি টাকা লোকশান দেয় নিউ এইজ চালাতে পারে, তারা কেন মাত্র দু চার লাখ টাকা লোকশান দিয়ে সাপ্তাহিক বুধবার চালাতে পারবে না!!!
অতএব ষ্পষ্টতই প্রতিয়মান হয়, বুধবার বন্ধের পেছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে। প্রকাশনার প্রথম সপ্তাহ থেকেই বুধবার ‘ছাড় দিতে নারজ’ অবস্থানে থেকে সংবাদ প্রকাশ করছিলো। এই পত্রিকাটি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সরকারের অধিকতর ভারত তোষন নীতি, জাতীয় সম্পদ, জনদুর্ভোগ, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সোচ্চার থেকে সংবাদ পরিবেশন করেছে। দেশের, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়ে বুধবার যে ধরনের বিশ্লেষণধর্মী সংবাদ প্রকাশের সাহস দেখিয়েছে অন্য কোন পত্রিকা তার সীমান্ত রেখা দিয়েও হাটার চিন্তা করে না।
এমন অবস্থানের কারনেই অল্প সময়ে সচেতন পাঠকের আপন কাগজ হয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে পত্রিকাটি। প্রথম দিকে বুধবারের পাতায় তেমন কোন বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি। পরবর্তীতে ( বন্ধ হয়ে যাওয়ার কয়েক মাস আগ থেকে) বেশ কিছু নিয়মিত বিজ্ঞাপন আসতে শুরু করেছিলো। যা বুধবারকে আর্থীক সমস্যা থেকে নিশ্চিতই উদ্ধার করতে পারতো।
প্রশ্ন এখানেই। তবুও বুধবার কেন বন্ধ হয়ে গেল? তাহলে কি ধরে নেয়া যায় না- বুধবার বন্ধের প্রকাশ্য কারণ আসলে প্রকৃত কারণ নয়।
কেন বুধবার বন্ধ হতে পারে:
বুধবার কেন বন্ধ এ বিষয়ে পত্রিকাটিতে যেহেতু আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষনা আসেনি। তাই এটা বলা যায় আর্থীক কারণে বুধবার বন্ধ হয়নি। বুধবারের যে পাঠক সমাজ তারা যদি জানতো বুধবার অর্থ সংকটের কারণে প্রকাশনা চালাতে পারবে না। তাহলে মুষ্টি চালের টাকা দিয়ে হলেও বুধবারকে বাঁচিয়ে রাখতো।
বুধবারের শেষ সংখ্যায় প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদের শিরোনাম এবং কিছু অংশ তুলে ধরে কারণটি বের করার একটু চেষ্টা করা যেতে পারে।
‘অপ্রতিরোধ্য র্যা ব এবং পুরনো সেই গল্প’ এই শিরোনমটির পর নিশ্চই বলার পর কি সংবাদ এখানে ছিলো তা বলার প্রয়োজন পড়েনা।
‘তেলের ইতিহাসে একটি নাম : মোসাদ্দেক (তেল-গ্যাস লুণ্ঠন দেশে দেশে)’ এই লিখাটি ধারবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছিলো। এই লেখাটি কাদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে বা করছিলো তা সম্ভবত ব্যাখ্যা করার কোন প্রয়োজন নেই।
‘দুই ভারত দুই বাংলাদেশ’ বাংলাদেশে ভারত প্রসঙ্গে এই লেখাটি ছিলো আনু মুহাম্মদের শেষ পর্ব। এই লেখাটির শুরুর দুই তিনটি লাইন হবহু তুলে ধরছি- “গত এগারোটি পর্বে বাংলাদেশে ভারতের অবস্থান ও ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমি ভারত রাষ্ট্রের রূপ ও জনগণের অবস্থার বিভিন্ন দিক সামনে আনার চেষ্টা করেছি। আর সেই সঙ্গে বাংলাদেশে ভারত সম্পর্কে মোহ, ভক্তি ও ঘৃণার দৃষ্টিভঙ্গী অতিক্রম করে এদেশে তাদের বৃহৎ পুঁজির সম্প্রসারণের বস্ত্তগত দিক, এবং এদেশের শাসকশ্রেণীর অবনত অবস্থানের ভাবগত দিক আলোচনায় এনেছি, সামনে এনেছি ভারতের জনগণের জীবন ও লড়াইয়ের দিকটিও। বলতে চেয়েছি যে, ভারত রাষ্ট্র ও সেখানকার জনগণ এক নয়।”
আর বেশী বিশ্লেষনে না গিয়ে যে কথাটি বলতে চাচ্ছি, তা হচ্ছে সাপ্তাহিক বন্ধ হয়ে যায়নি। এই পত্রিকাটিকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এখন আমরা কি করবো:
বুধবার বন্ধ হয়ে যাবে আর সমাজ ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশের স্বার্থে কেউ কোন কথা বলবেন না এমনটি ভাবনার বিশেষ কোন কারণ আছে বলে মনে করি না।প্রয়োজনীয়ত এবং দায়ীত্ব অনুভব করি নতুন কিছু করার। আবার এইক প্লাটফর্মে আসতে হবে বুধবারের লেখক পাঠকদের। আমি মনে করি বুধবারের কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে হয় আবার বুধবার চালু নয়তো নতুন ভাবে কিছু করার অনুরোধ করতে পারি। অথবা নিজেরাই নতুন করে কিছু ভাবতে পারি। যেখানে আবারো লিখবেন, ব্যারিষ্টার রফিকুল হক, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী,হায়দার আকবর খান রনো, ড. সালেহ উদ্দীন আহমেদ, ড. আকবর আলী খান, আনু মুহাম্মদ, ড, শাহদীন মালিক, আদিলুর রহমান খান, ম.ইনামুল হক, বি ডি রহমত উল্ল্যা, পিয়াস করিমসহ অসংখ্য সমাজ সচেতন লেখক।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×