আমাদের দেশ বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এটা ভাবতে ভালই লাগে । দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ নভোথিয়েটার নির্মিত হয়েছে আমাদেরই ঢাকা শহরে । যার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান নভোথিয়েটার । যদিও নামকরন নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই তারপরও এই মহাকাশ পর্যবেক্ষণ ও মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান সমৃদ্ধ কিছু বিষয় নিয়ে নিয়মিত প্রদর্শনী আমাদের শিশু কিশোর ও ছাত্রসমাজের বিশেষ উপকারে আশে এই ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই ।
আজ ২৫শে অক্টোবর ২০১৪ ইং রোজ শনিবার আমি সপরিবারে ঢাকা শহরের যানজট অতিক্রম করে নভোথিয়েটারের পূর্বনির্ধারিত ৬.৩০ মিনিটের প্রদর্শনীর টিকেট ক্রয়ের জন্য ৫.৩০ মিনিটে কাউন্টারে গিয়ে প্রথম হোঁচট খেলাম টিকেটের মূল্য দেখে । জন প্রতি ১০ টাকা থেকে শুরু হয়ে পরে ২০ টাকা, ৩০টাকা ও ৫০ টাকায় ঠেকেছিল গত সপ্তাহ পর্যন্ত । কিন্তু আজ কোন রকম পূর্ব ঘোষণা ছারাই তা বাড়িয়ে জনপ্রতি ১০০ টাকা করা হয়েছে । টিকিটের এই মূল্য দেখে কয়েকজন লোক আক্ষেপ করে চলে গেলেও আমরাসহ প্রায় ৩০ জন লোক টিকিট ক্রয় করি ৫.৪৫ মিনিটে । কাউন্টারের লোক এবং নিরাপত্তা কর্মীরা জানালেন যে নিরাপত্তাজনিত কারনে আজকের প্রদর্শনী কিছুটা তারাতারি শুরু হবে তাই টিকেট নিয়ে ভিতরে ঢুঁকে পরুন । আমরা যথারীতি ভিতরে ঢুঁকে দেখি প্রদর্শনী চলছে । “আমাদের এই বাংলাদেশ” এই শিরোনামে কিছু দেখানো হচ্ছে । আমার খুব ভাল লাগলো এই ভেবে যে এখানে বাংলাদেশের উপর প্রদর্শনী আগে দেখানো হচ্ছে । কিন্তু আমার ভাল লাগা এক্কেবারে উবে গেলো যখন দেখলাম ৬.০০ টায় প্রদর্শনী সমাপ্ত । অনেকে বের হয়ে গেলেও অধিকাংশ লোক হতভম্বের মত কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি এবং দায়ীত্বপ্রাপ্ত লোক খুজাখুজি করে কাউকে না পেয়ে থিয়েটার, বঙ্গবন্ধু এবং সরকারের গুস্টি উদ্ধার করতে করতে খিস্তি খেওড় করতে করতে চলে গেলো । কিন্তু আমি কেন জানিনা খিস্তি খেওর দিতে পারলাম না । আমি খোঁজ করে একজন নিরাপত্বা কর্মীকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই এসবের মানে কি? তিনি জানালেন এ ব্যাপারে তিনি কোন উত্তর দিতে পারবেন না । কারন তিনি শুধু গেটের দায়ীত্ব পালন করেন । তবে তিনি একটি মলাটছারা নোংরা খাতা এগিয়ে দিয়ে বললেন আপনাদের কোন অভিযোগ থাকলে এখানে লিখে যান । কিন্তু খাতার অবস্থা এবং এর কয়েকটা মন্তব্য পরে আমার আর কিছু লিখার রুচি হয় নি । পরবর্তীতে আমি ঐ খাতা এবং অব্যাবস্থাপনার কয়েকটি ছবি তুলে নিয়ে ৪০০ টাকায় সপরিবারে(৪ জন) ১০ মিনিট প্রদর্শনী দেখার আফসোস বেমালুম হজম করে চলে আসি ।
আন্তর্জাতিক মানের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের এহেন দুরাবস্থা এবং শঠতামুলক আচরন আমাকে সত্যই খুব হতাশ ও মর্মাহত করেছে । কারন আমার তৃতীয় শ্রেণী পরা ছেলেটি বার বার বলছিল “বাবা, ও বাবা, ৪০০ টাকা দিয়ে এটা কি সিনেমা দেখাইলা?”