একটা প্রশ্ন করি, আপনার যদি একটা মেয়ে থাকে তো তাকে কখন বিয়ে দিতেন?
জানি এই প্রশ্নের উত্তর সবাই খুব সাজিয়ে গুছিয়ে মন রাখার মত করে দিবে। কিন্তু বাস্তব টা খুবই নোংরা । যা আমি গত কয়েক দিন ধরে খুজে বের করার চেষ্ঠা করেছি।
বর্তমানে একটা মেয়ে যখন এস এস সি পাশ করে তখনই তার বাবা মার মনে চিন্তার শুরু হয় , কিভাবে মেয়েকে একটা ভালো ছেলের হাতে বিয়ে দেওয়া যায়। চিন্তার ভাজ গভীর হয় যখন মেয়ে ইন্টার ১ম বা ২য় বর্ষে পড়ে। এক সময় অাত্মীয় স্বজনরা একের পর এক বিয়ের অফার আনে । মেয়ে বলে বাবা আমি পড়তে চাই । কিন্তু বাবা-মা বলে এমন ভালো ছেলে পাওয়া কঠিন । ছেলের ভালো চাকরি - টাকা পয়সাও আছে। কিন্তু মেয়ে যখন আবার বলে বাবা আমি পড়তে চাই। তখন বাবা মার মনে সন্দেহ হয় । তারা মেয়েকে বলে যে বিয়ের পর তুই পড়তে পারবি। ছেলে পক্ষের সাথে এমনই কথা হয়েছে। কিন্তু এইটা আসলে একটা ফাঁদ, যে ফাঁদে পা দিয়ে অনেক মেয়েই তার জীবনটা এক রকমের দাসীর মত পার করে দেয়। বিয়ের পর পড়ার সুযোগ পাওয়ার মত খুব কম মেয়ে অতটা ভাগ্যবান হয়। সংসার , বাচ্চা আর কর্তব্য পালন করতে করতে জীবন শেষ ।
একটা মেয়ের ওপর কেন এমন অবিচার ? সমাজ কেন তাকে একটা ছেলের মত শিক্ষা লাভের সুযোগ দেয় না ?
আমার যুক্তি হলো , আপনি আপনার মেয়ের বিয়েতে যে টাকা খরচ করবেন তার অর্ধেক খরচ করলেই আপনার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষা দিতে পারেন। তার পর আপনার মেয়ে ছোটখাটো হলেও একটা চাকরি করতে পারবে । নিজের পায়ে দাড়াতে পারবে । সমাজে তার একটা অবস্থান তৈরি হবে । মানুষ তাকে তার শিক্ষার জন্য সম্মান করবে।
হয়ত বলতে পারেন যে মেয়ের বিয়ের টাকা যদি , মেয়েকে পড়াতেই খরচ করি তো মেয়ে কে বিয়ে কিভাবে দিবো ? আমার উত্তর হলো আপনার মেয়ে যখন উচ্চ শিক্ষিত হবে আর চাকরি করবে তখন আপনার মেয়ের বিয়েতে টাকা দিতে হবে কেন? কারন আপনার মেয়ে নিজেই তখন উপার্জন করবে । আর বর্তমান সমাজে যে কোন বুদ্ধিমান ছেলে উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে তার ওপর যদি জব করে তবে বিয়ে করতে এক পায়ে খাড়া হবে।
আমাদের সমাজে আর একটা মানসিকতা দেখা যায় , ছেলে শেষ বয়সে বাবা মাকে দেখবে কিন্তু মেয়ে তো বিযে হলে পর হয়ে যাবে । তারা বাবা মাকে কোন সাহায্য করবে না । তাই বাবা মা ছেলে কে জোড় করে হলোও উচ্চ শিক্ষিত করে। কিন্তু বাবা মা এই টা বুঝে না , একটা অশিক্ষিত মেয়ে যখন নিজেকেই সাহায্য করতে পারে না তখন বাবা মা কে কিভাবে সাহায্য করবে। যদি মেয়েকেও ছেলের মত শিক্ষিত করা হয় , চাকরির সুয়োগ দেওয়া হয় তবে মেয়েও ছেলের মত বাবা মা কে সাহায্য করতে পারে । তখন মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনও কিছু বলতে পারবে না কারন মেয়ে তার নিজের উপার্জন করা টাকাতে বাবা মা কে সাহায্য করবে ।
জানেন এই পৃথিবী কেউ অন্যরে ঘাড়ে বসে খেতে চায় না । কিন্তু আমাদের সমাজের বাবা মা রা নিজেদের মেয়েকে অশিক্ষিত অবস্থায় বিয়ে দিয়ে অাধুনিক গোলাম করে দেয়। মেয়ে সারা জীবন তীব্র মনঃ কষ্টে ভোগে । কিন্তু যদি মেয়ে শিক্ষিত হয় আর জব করে তো সে মানসিক স্বাধীনতা পায়। এতে পরিবার ,সমাজ ও দেশ উপকৃত হয়।
তবে আশার কথা হলো সমাজ একটু একটু করে পরির্তন হচ্ছে। আমি চাই এই পরিবর্তন আরও দ্রুত হউক। প্রত্যেকটা মেয়ে তার মেধার যথাযত ব্যবহার করুক। সমাজকে আলোকিত করুক । মেয়েদের বোঝা মনে না করে তাদের সম্পদে রুপান্তর করার সুযোগ করে দিন।
( আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ থাকবে পারলে আমার এই লেখাটাকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন । আমার নাম দেওয়া লাগবে না। আপনারা নিজের নাম দেন তাতে আমার কষ্ট নাই। শুধু শেয়ার করুন একজন অভিবাকও যদি আমার এই লেখা পড়ে নিজেদের চিন্তা বদলায় তবেই আমার লেখা সার্থক হবে)
ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৩০