প্রতি বছর নারী দিবস আসলেই
নাস্তিকরা লাফালাফি শুরু করে দেয়
যে দ্বীন ইসলাম ধর্ম নাকি মেয়েদের
কে নানা বিষয়ে ছোট করেছে।
কোরআনের আয়াত বিকৃত করে হাদীস
বিকৃত করে নাস্তিকরা তাদের মন মত
করে ইসলাম ধর্মের ব্যাখ্যা দেয়। কিন্তু
এই ২০১৪ সালেও যে হিন্দু
মেয়েরা তাদের বাপ মা স্বামীর কোন
স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি পায় না,
কোটিপতি বাপের মেয়ে হলেও
যে একটা হিন্দু মেয়ে তার বাপের কোন
অস্থাবর সম্পত্তি পায় না এ
নিয়ে নারী দিবসে কারো একটা বাণীও
নাই। কিন্তু
বাংলাদেশে নারী দিবসের
দিনটিতে অবশ্যই বলিষ্ঠ কণ্ঠে সবার
উচ্চারন করা উচিত যে একটা মুসলিম
মেয়ে যেইসব অধিকার পায় একটা হিন্দু
মেয়েরও উচিত আছে সেইসব অধিকার
পাওয়া। একটা মুসলিম মেয়ে চাইলেই
তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে,
বিয়ের সময়ে একটা মুসলিম মেয়ে তার
স্বামীর কাছ
থেকে একটা মোটা অংকের দেনমোহর
পায়, একটা মুসলিম মেয়ে তার বাপ, মা ও
স্বামীর অস্থাবর স্থাবর সম্পত্তির
মালিকানা পায়।
এক্ষেত্রে একটা মুসলিম মেয়ে কতটুকু
সম্পত্তি পাবে তা কোরআনের আইন
দ্বারাই সংরক্ষিত। কিন্তু এর
বিপরীতে একটা হিন্দু
মেয়ে বা একটা বৌদ্ধ মেয়েকে তার
ধর্ম কি অধিকার দিয়েছে ? একটা হিন্দু
মেয়ে কখনই তার স্বামীকে তালাক
দিতে পারে না, একটা হিন্দু
মেয়ে বিয়ের সময় কোন দেনমোহর পায়
না, একটা হিন্দু মেয়ে কখনই তার বাপ,
মা ও স্বামীর কোন স্থাবর অস্থাবর
সম্পত্তি পায় না, শুধু তাই নয় হিন্দু
মেয়েদের বিয়ের সময়ে কোন সাক্ষীও
থাকে না। অগ্নিকে সাক্ষী রেখে এই
হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হয়। যারা Law
তে পড়াশুনা করেছেন তারা জানেন
যে হিন্দু আইনে বিয়েকে কোন
চুক্তি বলা হয় নাই হিন্দু
আইনে বিয়েকে বলা হয়েছে একটি সামাজিক
অনুষ্ঠান। তাই স্বাভাবিক ভাবেই হিন্দু
মেয়েদের বিয়ের সময়ে কোন সাক্ষীও
থাকে না ও হিন্দু মেয়েরা বিয়ের
সময়ে কোন দেনমোহর পায় না।
আচ্ছা আপনারাই বলেন
বাংলাদেশে যারা সারাদিন
নারী অধিকার নারী অধিকার
বলে চিল্লায়ে গলা ফাটিয়ে ফেলে তাদের
কি উচিত না এই হিন্দু
ধর্মে যে মেয়েদের কে কোন অধিকারই
দেয় নাই তা নিয়ে কিছু বলা।
সত্যিকথা বলতে হিন্দু ধর্মে মেয়েদের
কে এক টুকরা মাংস ছাড়া আর কিছুই
মনে করা হয় না। তাই হিন্দু
ধর্মে মেয়েদের নূন্যতম অধিকার
বলতে কিছু নাই। কিন্তু আপনারা কি কখনই
দেখেছেন তথাকথিত এই
নারী নেত্রীবৃন্দরা এই হিন্দু
পারিবারিক আইন সংস্কার
করা নিয়ে কিছু বলতে। কিন্তু দ্বীন
ইসলাম কে জড়িয়ে মিথ্যা কথা বলার
যেন শেষ নাই এই তথাকথিত
নারী নেত্রীবৃন্দের ও নাস্তিকরা। এই
নারী দিবস আসলেই অভিজিৎ রায়,
মুক্তমনা ব্লগ, আসিফ মহিউদ্দীন
গংরা অনেক মিথ্যা অভিযোগই
করে যে ইসলাম ধর্মে নাকি মেয়েদের
কে ছোট করা হয়েছে। তাই
আমি কয়েকটা status দিয়ে তাদের
অভিযোগ গুলি খন্ডন করব।
নাস্তিকরা প্রায়ই একটা অভিযোগ
করে যে জাহেলিয়াতের
যুগে যদি সত্যিই মেয়েদের
কে মাটিতে পুতে ফেলা হত অর্থাৎ
জীবন্ত কবর দেওয়া হত
তাইলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
সাথে খাদিযা রাযিয়ালালহু আনহার
বিয়ে হল কিভাবে ? সব মেয়েদের কেই
যদি আরবরা মাটিতে পুতে ফেলত
তাইলে সেই সময়ে আরবের
মানুষেরা বিয়ে করার জন্য
মেয়ে খুঁজে পেত কিভাবে ? দেখেন কত
হাস্যকর একটা কথা। চীন ও
ভারতে তো প্রচুর পরিমানে কন্যা ভ্রুন
হত্যা হয় তাই বলে কি চীন ও
ভারতে মেয়ে শিশু জন্ম নেয় না ? অবশ্যই
জন্ম নেয়। তাইলে আপনি যদি এখন বলেন
যে চীন ও ভারতে যেহেতু মেয়ে শিশু
জন্ম নেয় তাই চীন ও ভারতে কখনই
কন্যা ভ্রুন হত্যা হয় না। তাইলে আপনার এই
কথাটা অবশ্যই ভুল।
তাইলে আমরা ধরে নিতে পারি যে এই
চীন ও ভারতে প্রতি বছর শতকরা ৪০
ভাগের মত কন্যা ভ্রুন হত্যা করা হয়। ঠিক
তেমনি জাহেলিয়াতের যুগেও
কন্যা শিশুদের কে মাটিতে জীবন্ত
পুতে ফেলা হত কিন্তু তাই
বলে তা শতকরা ১০০ তে ১০০ না। কেন
অনেক সাহাবীও তো স্বীকার করেছেন
যে জাহেলিয়াতের
যুগে আমি নিজে আমার
মেয়েকে জীবন্ত অবস্থায় মাটিতে কবর
দিয়েছি। ব্যাপারটা একটু সহজ
ভাবে বুঝাই। আমাদের সমাজে যৌতুক
প্রথা প্রচলিত তার মানে কি এই যে সব
মেয়েকেই বিয়ের সময়ে যৌতুক
দিতে হয় ? বা যৌতুক প্রথার
কারনে অনেক সময় শ্বশুর বাড়ির
লোকেরা ঐ মেয়েটাকে হত্যাও
করে ফেলে তার মানে এই নয় যে সব
মেয়েই যৌতুক প্রথার কারনে শ্বশুর
বাড়ির লোকদের দ্বারা নিহত হয়। আল
কোরআনে যখন শিশু হত্যার
বিষয়ে আয়াতগুলি নাযিল হয়েছিল
তো আরবে যদি সেই সময়ে শিশু
হত্যা নাই হত তাইলে তো এই কথা দিয়েই
আরবের কাফেররা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কে মিথ্যাবাদী প্রমান করে ফেলত।
তাইলে ব্যাপারটা হল এই যে ভারত ও
চীনের কন্যা ভ্রুণ হত্যার ন্যায় সেই
সময়ে আরবেও মেয়েদের কে জীবন্ত
অবস্থায় মাটিতে পুতে ফেলা হত।
আশাকরি ব্যাপারটা আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
নাস্তিকদের ২য় অভিযোগ হল যে সেই
যুগে আরবে মেয়েরা যদি সত্যিই
সম্পত্তির অংশীদার না হত
তাইলে খাদিযা রাযিয়ালালহু
আনহা কিভাবে এত বিপুল সম্পত্তির
মালিক হলেন বা উনি কিভাবেই
স্বাধীন ভাবে উনার ব্যবসা বাণিজ্য
পরিচালনা করতেন ? আসলে আমরা সবাই
এইখানে একটা ভুল করি আর তা হল
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
পিতা মাতা, দাদা,
খাদিযা রাযিয়ালালহু
আনহা উনারা কেউই মুশরিক
বা মূর্তিপুজারী ছিলেন না।
উনারা ছিলেন দ্বীনে হানিফ বা হযরত
ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের
অনুসারী। অর্থাৎ উনারা মুসলমান
ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের নব্যুয়ত
পাওয়ার আগ পর্যন্ত আরবের বুকে হযরত
ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের
রিসালতটাই হক্ক ছিল। শুধু তাই নয় হযরত আবু
বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুও এই
দ্বীনে হানিফের অনুসারী ছিলেন।
তাই হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস
সাল্লামের উম্মত হিসাবে হযরত
খাদিযা রাযিয়ালালহু
আনহা পারিবারিক সম্পত্তির মালিক
হয়েছেন। আমরা হয়ত
নওরাকা ইবনে নওফেলের নাম শুনে থাকব
যিনি ছিলেন হযরত
খাদিযা রাযিয়ালালহু আনহার আপন
চাচাত ভাই। উনি ছিলেন হযরত ইব্রাহিম
আলাইহিস সাল্লামের একজন একনিষ্ঠ
উম্মত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের নব্যুয়ত
পাওয়ার পর হযরত
খাদিযা রাযিয়ালালহু
আনহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কে নওরাকা ইবনে নওফেলের
কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তখন
নওরাকা ইবনে নওফেল বলেছিল
যে আপনি মুহাম্মদই হচ্ছেন শেষ নবী।
অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
পিতা মাতা দাদা ও হযরত
খাদিযা রাযিয়ালালহু
আনহা উনারা কেউই মুশরিক
বা মূর্তি পুজারী ছিলেন
না উনারা সবাই ছিলেন মুসলমান। তাই
জাহেলিয়াতের যুগের আইন কানুন
গুলি উনারা অনুসরন করতেন না। কিন্তু
সেই যুগে আরবের কাফেররা তাদের
মেয়েদের কে কোন সম্পত্তি দিত
না এটা দিনের আলোর মত পরিস্কার।
সূরা নিসার তাফসীর টা পড়লেই এর
সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়।
আর কোরআনে মেয়েদের কে শস্যক্ষেত্র
কেন বলা হয়েছে এ নিয়ে নাস্তিকদের
অভিযোগের শেষ নাই।
আরে গাধা একটা কৃষক যদি তার
কৃষি জমিতে ভাল করে পানি দেয়,
ক্ষেতের
জমি ভালভাবে পরিচর্যা করে তাইলেই
সে ক্ষেত থেকে ঐ কৃষক ভাল ফসল পাবে।
ঠিক তেমনি যেই স্বামী তার স্ত্রীর
সাথে ভাল ব্যবহার করবে, স্ত্রীর ঠিকমত
যত্ন নিবে সেই স্বামীই স্ত্রীর কাছ
থেকে ভাল ভাল সন্তান উপহার
হিসাবে পাব। ব্যাস এতটুকুই। আর শস্যক্ষেত্র
এই কথার মাঝে অশ্লীলতার
কি আছে এটাই তো আমি বুঝি না।
নাকি শুধু কোরআনে এই শস্যক্ষেত্র
শব্দটি উল্লেখ আছে বলে নাস্তিকদের
চোখে এখন এই শস্যক্ষেত্র শব্দটি অশ্লীল
হয়ে গেছে। আসলে নাস্তিকরা ইসলাম
ফোবিয়াতে ভুগছে। কপিড ৷