আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির যুগে জাতীয় পরিচয়পত্র অন-লাইনে সংশোধনের সব ব্যবস্থা করেছিল সরকার। কেউ যেন দুর্ভোগে না পড়ে সে জন্য সংশোধনের ওয়েব সাইটটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সেই ওয়েব সাইটে ঢুকে নিজের পরিচয়পত্র সংশোধন করতে পেরেছেন এমন মানুষের সংখ্যা খুঁজে পাওয়া যাবে না। সে কারণে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন, নতুন পরিচয়পত্র গ্রহণ বা হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্র পেতে প্রতিদিন রাজধানীর আগারগাঁও ইসলামী ফাউন্ডেশনের সাত তলায় ভিড় জমাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। সেখানকার নানা বিড়ম্বনার চিত্র আমাদের সময় ডটকমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ লাইন ধরে সংশোধনী ফরম সংগ্রহ করছেন। সেক্ষেত্রে ফরম সংগ্রহকারী ব্যক্তিকে নানা কাগজপত্র দেখাতে হচ্ছে। তবে ফরম বিতরণকারী ব্যক্তির হাতে কিছু অর্থ গুজে দিলে তার জন্য সব নিয়মকানুন মাফ হয়ে যাচ্ছে। ফরম পূরণের পর তা জমা দিতে ভবনটির সাত তলায় পৌঁছতে লিফটের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা। সারিবদ্ধভাবে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অনেককে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে আগেই চলে যাচ্ছেন গন্তব্যে। সেখানে গিয়ে ফরম জমা দিতে আরও বিড়ম্বনা। যার ক্ষমতা বা লোকবল বেশি সেই সবার আগে ফরম জমাদিয়ে তা সংগ্রহের জন্য সংক্ষিপ্ত সময় পাচ্ছেন। আর যার কেউ নেই, তাকে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ফরম জমা দেওয়ার পর তিন থেকে সাত দিন পর নতুন আইডি কার্ড সংগ্রহের তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিবাসিদের জন্য নতুন নিয়ম তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হয়েছে, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কারও জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন বা নতুন পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে না। ফলে, বহু গ্রাহককে সংশোধনী কেদ্রে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে আসা মানিক মিয়া নামের এক ব্যক্তি আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, কয়েকদিন ধরে বহু চেষ্টা করেও আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্রটি সংশোধন করতে পারিনি। অথচ জরুরি পাসপোর্ট করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র আমার খুবই প্রয়োজন। আজ না পেলে তার অনেক ক্ষতি হবে বলেও জানান তিনি।১১১০৬৩৯৬থ৮৭৪৫৬৪৭৯৫৯৩৫৩২১থ১৬৩৯৬৫৫৪৪৭থহ
বিনা পয়সায় জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার বিধান থাকলেও শ্রী মতি নামে এক নারীকে দেখা গেছে দ্রুত পরিচয়পত্র পেতে এক কর্মচারির হাতে অর্থ গুজে দিচ্ছেন। বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রী মতির পরিচয়পত্রে ব্যাপক ভুল আছে। এটি সংশোধনের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হবে। সে কারণে নাস্তা খাওয়ার জন্য তিনি কিছু অর্থ দিয়েছেন।
সজিব হোসেন নামে এক ড্রাইভার বলেন, আমার মানিব্যাগসহ পরিচয়পত্র চুরি হওয়াই নতুন চাকরি পেতে আমাকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নতুন পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে এক মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে কোনো লাভ হয়নি। আজ আবার এসেছি, যে কোনো উপায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে চান তিনি।
নানা অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা এইচ এম আশিকুর রহমান সব অনিয়মের কথা অস্বীকার করে আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, লোকবলের অভাবে নির্ধারিত সময়ে সংশোধিত পরিচয়পত্র দিতে বিলম্ব হলেও সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই সব সমস্যার সমাধান কবে বলেও জানান তিনি।
সুত্রঃ আমাদের সময়