যাগগে সে সব কথা। আসল কথায় আসি।
রেগে যাওয়ার চুড়ান্ত পযর্ায় হচ্ছে মারামারি। মারামারির জন্য মাধ্যম প্রয়োজন। যেমন ধরুন, দুই বন্ধুতে তকর্াতর্কি, এর পর রাগারাগি অবশেষে মারামারি। বয়স ভেদে এর রকম আলাদা হয়। বাচ্চাদের কথাই ধরুন। ছেলে বেলায় আমরা কত তকর্াতর্কি, রাগারাগি এবং পরিশেষে মারামারি করেছি। কখনও লাঠি, চামচ, বই, কলম, জুতো, হাত, নখ এমনকি দাতও ব্যবহার করেছি। কি, আপনারা চুপ করে আছেন যে? মনে হচ্ছে একদমই করেন নি। আরে ভাই স্বীকার করেন, স্বীকার করেন। এখনতো আর কেউ আপনার বিচার করতে আসছে না।
আমরা রেগে গিয়ে কাউকে মারতে উদ্যত হলে সাধারণত কোন কিছুর সাহায্য নিয়ে মারতে চাই। একদম কিছু না পাওয়া গেলে হাত ব্যবহার করি। অনেকেই নখ কিংবা দাত ব্যবহারে বেশ পারদর্শি। যাহোক, আমি যদি রেগে গিয়ে কাউকে মারতে উদ্যত হই তখন পানির গ্লাস ব্যবহার করার চেষ্টা করি। এইতো সেদিন আমার সেজ বোন ফোন করে বলল- "ভাইয়া, তানিয়া (আমার আরেক ছোট বোন) ঠিক মত লেখা পড়া করতে চায় না। শুধু ঘুমায় আর খায়।" কথাটা শুনে আমি বললাম- "পানির গ্লাস দিয়ে ওর মাথার উপর ঠাস করে একটা বারি দাও।"
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কাঁচের গ্লাস নাকি স্টিলের গ্লাস? অবশ্যই স্টিলের গ্লাস। (স্টিলের গ্লাসের ছবি খুঁজে পেলাম না বলে কাচেঁর গ্লাসের ছবি দিলাম) কাঁচের গ্লাস কারো কারো মাথায় ভেঙ্গে যেতে পারে। যিনি মারছেন তার উপরেও বিষয়টি নির্ভর করে অনেকটা। আমি ঝুঁকি নিতে রাজি নই।
এবার আসেন, [গাঢ়]কেন এই গ্লাস প্রীতি?[/গাঢ়]
আমি তখন ক্লাস টুতে পড়ি। আরেকটি কথা বলে রাখা ভাল, ক্লাস ওয়ানে পড়ার ভাগ্য আমার হয়নি। সরাসরি ক্লাস টু তে। স্কুলে যেতে তেমন ইচ্ছে করত না আমার। অবশ্য আব্বুর ঘোষণা ছিল প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে একটি করে টাকা পাওয়া যাবে। টাকার প্রতি লোভ আমার বরাবরই ছিল না। সুতরাং স্কুলে যাওয়ার ব্যপারে অনাগ্রহ চলতেই থাকল।
একদিন আব্বু দুপুরে বাসায় খেতে এসেছেন। আমি বাইরে কোথাও খেলতে গিয়েছিলাম। দুপুরে মধ্যপ্রাচ্যে যখন আন্দোলন শুরু হলো তখন বাসায় ফিরে দেখি আব্বু খাটের উপরে বসে খাচ্ছেন। আমি ঘরে ঢুকতেই প্রশ্ন- 'স্কুলে গিয়েছিলে?' আমি ভয় মিশ্রিত লাজুক হাসি হেসে দুদিকে মাথা নাড়লাম। সঙ্গে সঙ্গে আব্বু যে গ্লাস থেকে পানি খেয়েছেন সেই গ্লাসটি ছুড়ে মারলেন আমার দিকে। আমি 5 হাত দুরে। একটু ঘুরতে সময় পেয়েছিলাম মাত্র। তখনতো দুই মাসের মার্শাল আর্ট ট্রেনিং ছিল না। গ্লাসটি সোজা আমা বাহুতে আঘাত করল। সিনেমাতে নায়কদের যেখানে গুলি লাগে সেখানে। সেটি ছিল স্টিলের গ্লাস। গ্লাসের উপরের অংশ লেগে অনেখানি কেটে গেল। এরপর যা হবার তাই হলো। তারপর থেকে আমি নিয়মিত স্কুলে যাওয়া শুরু করি।
[গাঢ়]আমার থিওরি হলো, কাউকে যদি কথা শোনাতে হয় তাহলে লাঠি কিংবা অন্য কোন অস্ত্র ব্যবহার করে মারার চেয়ে পানির গ্লাস দিয়ে মারলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়।[/গাঢ়]
এবার বুঝলেন তো, পানির গ্লাসের ভিন্ন রকম ব্যবহারও আছে।
বি:দ্র: কিছু দিন আগে [link|http://www.somewhereinblog.net/arobd/post/12977|M
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০০৭ রাত ২:৫২