জার্মান সেনাবাহিনীতে অসাধারণ একটা নিয়ম চালু আছে। সৈনিকদের মধ্যে কোন ঝামেলা হলে অথবা কোন ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে কোনরকম অভিযোগ তারা করতে পারবেনা এবং কারো সমালোচনাও তারা করতে পারবেনা। সমালোচনা বা অভিযোগ করলেই তাদেরকে শাস্তি দেয়া হয়।
তাদের নিয়ম হচ্ছে, কোন ঘটনা ঘটলেই প্রথমে তাকে বলা হয় নিজের রাগ ক্ষোব কমাতে অথবা মাথা ঠান্ডা করতে।
এর জন্য তাদেরকে সময় দেয়া হয়। ভাবতে বলা হয়।
পরে সমস্যা সমাধান করা হয়।
বাস্তবে সাধারণ মানুষের জন্য ও এমন কিছু আইন বা সীমা থাকলে কতই না
ভাল হতো।
আপনার আশেপাশে তাকালেই দেখবেন, এমন অনেক মানুষ আছে যারা শুধু পরের ছিদ্র খুজে বেড়াবে। তাদের চরিত্রের আরেকটা দুর্বল জায়গা হচ্ছে তারা কখনোই নিজের সমালোচনা করতে পারেনা। তারা মনে করে,নিজের সমালোচনা করা মানেই নিজের দুর্বলতা অন্যের কাছে ধরিয়ে দেয়া।
উত্তম ব্যাক্তি সে, যে নিজের দোষ স্বীকার করে নিতে পারে। এরা যে কোন জায়গাতেই সৌভাগ্য বয়ে আনে।
আমাদের রাজনীতিবিদরা যদি এই গুণে গুণান্বিত হতো মন্দ হতোনা। আজ পর্যন্ত কখনো কোন দলের ব্যাক্তিকেই দেখিনি নিজের কাজের সমালোচনা করতে বিপক্ষের সমালোচনা আর দোষ চাপানোর মত কাজ করেই মুল্যবান সময় অপচয় করে তারা।
.
যে অন্যের সমালোচনা করে সে নিজের দোষ চাপা দিতে সর্বউত্তম থেকে সর্বনিন্মে পর্যন্ত নামতে পারে।
.
কেমন হবে যদি এরকম কারো সাথে আপনার বিয়ে হয় ? যে প্রতিটা মিনিটে।ঘ্যানর ঘ্যানর করবে। আপনার দোষ পাওয়ার সাথে সাথে ছিদ্র বুঝে পেরাক মারতে শুরু করবে। যা আপনাকে জীবনের প্রতি হতাশ করে
দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
আবার ভেবে দেখেন যদি এরকম কেউ পেয়ে যান যে নিজের দোষ আগে
দেখবে এবং অযথা ঘ্যানর ঘ্যানর থেকে বিরত থাকবে। আপনার দোষ, ভুল ও সে সম্মানের সাথে দেখবে এবং সমালোচনা না করে সমাধানের চেষ্টা করবে।
ভাল হবেনা ?
পৃথিবীতে প্রাথমিকভাবে সব ঝামেলার শুরুটা হয় নিজের ভুল বুঝতে না পারার কারনে। যে কোন কিছুই হোক, যত সমস্যাই থাক। কেউ যদি সেই সমস্যাতে নিজের দোষ নিজের ভুল বের করতে পারে তাহলে সেই ঝামেলা আর ঝামেলা থাকেনা। কার জন্য কি হয় জানিনা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই
বলছি।
এই ব্যাপারে আমার খুব পছন্দের একটা
উক্তি রয়েছে -
"সমস্যা তখন আর সমস্যা থাকেনা,
যখন আপনি সেটাকে চিহ্নিত করে ফেলবেন"
এই উক্তিটি কেউ তেমন না জানলেও এই উক্তি সবাই জানে -
when you have nothing to hide
you have nothing to fear.
তাহলে আত্নসমালোচনা কি একটা অসাধারণ পন্থা না নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে নির্ভয় থাকার জন্য ? ভয় কিসের দোষ স্বীকার করে নিতে ? আর এতে করে আপনি আরো সচেতন হবেন এবং নির্ভয়ে জীবন যাপন করতে পারবেন।
আমি জানি বলা যতটা সহজ হুট করে সেইটা রপ্ত করাটা অনেক কঠিন।
আমি নিজেই একটা বিশাল পথ অতিক্রম করে এসেছি।
আত্নসমালোচনা করাটা অসাধারণ এক চারিত্রিক গুণ। অন্যের সমালোচনা না করা যে মানসিক প্রশান্তি ও বজায় রাখে তা কি জানেন ?
আপনি কি পারবেননা এই অসাধারণ গুণ নিয়ে
অন্যের জীবনে, সমাজের জন্য সৌভাগ্য হতে ?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:০২