সম্রাট হুমায়ূন রাজ্য হারা হয়ে পথে পথে ঘুরছেন। তাকে হিন্দুস্তান থেকে তাড়িয়ে দেয়াই শের শাহ এর লক্ষ। হুমায়ূনকে সে মারবেনা। হুমায়ুনের মত মানুষকে শের শাহ ক্ষতি করতে চায়না বিধায় সুযোগ থাকতেও শের শাহ হুমায়ূনকে কিছু করেনি।
শের শাহ বলেছিলো হুমায়ূন এমন মানুষ যে তার ভালবাসা দিয়ে পৃথিবীর সবকিছু জয় করতে পারবেন। মানুষ হিসেবে সে হুমায়ুনকে যথেষ্ট সম্মান করেন।
পথে পথে ঘুরতে ঘুরতে হুমায়ূন এখন সিন্ধুর নাদান দূর্গে। এই দুর্গের গভর্নর উছি বেগ সম্রাট হুমায়ূন এবং তার ক্লান্ত সৈন্যবাহিনীকে সাহায্য করেছেন। হুমায়ুনের সাথে আছেন তার সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী হামিদা বানু। হামিদা বানু তখন অসুস্থ এবং সন্তান সম্ভাবা। এই হামিদা বানুর গর্ভেই জন্ম নিয়েছিলেন "দ্যা গ্রেট আকবর।"
উছি বেগ কেন সম্রাটকে এই দুঃসময়ে সাহায্য করেছে তার কারন জানতে বেশি দেরি হলোনা। দুর্গে পানি এবং খাবারের অভাব। যার বিনিময়ে উছি বেগ চেয়ে বসলে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি রত্ন কোহিনুর।
সম্রাট হুমায়ুনের সবচেয়ে চতুর এবং প্রধান সেনাপতি হলেন বৈরাম খাঁ। সে উছি বেগকে বললো সে কোহিনুর দিবে তার বদলে খাদ্য এবং পানির ব্যবস্থা করবেন এবং সিন্ধুনদ পার হতে সাহায্য করবেন। উছি বেগ রাজি হলে এবং সাথে মাহবীর নামক একজন রত্নব্যবসায়ী পাঠালেন বৈরাম খাঁ এর সাথে। যেন নিশ্চিত হতে পারে এটিই কোহিনুর।
পরে বৈরাম খাঁ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে উছি বেগেকে পরাস্থ করে সিন্ধুনদ পার হয়। রত্নব্যবসায়ী মহাবীর ছিল অহিংস। ইচ্ছা করে সে একটা পিপড়াও মারেননা। অথচ তাকে দেখতে হলো মানুষের মৃত্যু। পরে মহাবীর হুমায়ুনের সাথেই চলে এসেছিলেন।
বৈরাম খাঁ মহাবীরকে জিজ্ঞাসা করলেন
তুমি কেন আমাদের সাথে এসেছো ?
মহাবীর বললো, আমি একজন রত্নব্যাবসায়ী। আমি কোহিনুর হিরা দেখতে চাই। আমার পরম সৌভাগ্য হবে যদি দেখতে পাই। বৈরাম খাঁ হেসে বললেন, দেখতে দিবো যদি তুমি পিপড়া মারতে পারো।
মহাবীর অনেক চিন্তা করে বললেন, মারতে পারবো তবে একটি পিপড়া। এর বেশি পারবোনা।
তখন বৈরাম খাঁ কয়েকটি কথা বললেন।
পিপড়া মারতে হবেনা। আপনাকে কোহিনুর দেখতে দেয়া হবে। তবে কোহিনুর সামান্য পাথর ছাড়া কিছুইনা। জীবন্ত সঠিক মানুষ হলেন কোহিনুর। পিছনের নৌকার দিকে তাকান। রাজ্যহারা হুমায়ূন স্ত্রীর হাত ধরে বসে আছেন। উনিই আসল কোহিনুর। দেখেছেন ?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫