somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিরিয়ড চলাকালিন সময় কৃত্রিম উপায়ে তৈরি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা উচিৎ নাকি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা শেখানোটা বেশী জরুরী?

০৫ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রক্তমাখা স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদর্শন করা একটি কু'রুচিপূর্ণ কাজ বলেই মনে হয় আমার কাছে । হতে পারে অন্যের কাছে ভীষণ আধুনিক এবং উৎকৃষ্ট রুচির পরিচায়ক । কিন্তু আমি নানান ভাবে চিন্তা করে দেখলাম এটা কোন কাজের কাজ নয় । এ দিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি তো নয়ই বরং ব্যপারটি হাস্য তামাশায় পরিণত হয়েছে।অথচ বিষয়টি হাস্য তামাশার নয়, সচেতনতার বিষয়। মেয়েদের পিরিয়ড হওয়ার ব্যপারটি খুব স্বাভাবিক নিয়ম। এ বিষয়টি লুকিয়ে রেখে অসচেতন থেকে নিজের ক্ষতি যেমন করা উচিৎ নয় তেমনি নিজের শরীরের body waste পাবলিকের মুখের সম্মুখে ধরে সচেতন করাও যায় না। এর সহজ সুন্দর উপায় এবং স্বাভাবিক পদ্ধতি রয়েছে এবং সে পথ ধরলেই ভালো ফল পাওয়া যাবে। আর আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশের মানুষ এখন যথেষ্ট না হলেও আশানুরূপ পরিমাণে সচেতন এ বিষয়ে। সহজ সুন্দর উপায় থাকতে আউটরেজ সৃষ্টি করার তো কোন প্রয়োজনই নেই এবং উগ্রতারও কোন প্রয়োজন নেই । জানি, উগ্রতা ভীষণ সেক্সি এবং বেশ চমকপ্রদ কিন্তু এসব কোন কাজের নয় ।

বাংলাদেশ খুব ছোট একটি দেশ, এ দেশটিকে যে কোন বিষয় দিয়েই প্রভাবিত করা খুব অল্প সময়ের কাজ , যেটা আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়াতে সম্ভব নয়, একেক রাজ্যের একেক সামাজিক রীতিনীতি থাকার ফলে। সেখানে একই ধর্মের অনুসারী হয়েও প্রত্যেকটা রাজ্যেরই সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং ধর্মীয় নিয়ম কানুন গুলোও আলাদা হয় । ধর্মের উপর ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক কাস্টমস অনেকটাই প্রভাব বিস্তার করে বলেই এমনটা হয় ।তাই ইন্ডিয়ার সব জায়গায় অনেক বছরের এই টাবুকে (taboo) সম্পূর্ণ ভাবে উপড়ে ফেলাটা অনেক কঠিন কাজ ।কিন্তু আমাদের দেশে এটা অনেক সহজ।তাই , রক্তমাখা প্যাড নিয়ে আমাদের মেয়েদের রাস্তায় অথবা ফেইস বুক গরম করাটা একেবারেই দরকার নেই।

হ্যাঁ নাদিয়া ইসলামের পোস্টের কথাই বলছি। তিনি রিসেন্টলি তার একটি রক্তমাখা প্যাড নিয়ে ছবি দিয়ে সামাজের এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন ফেইস বুকে । তার উদ্দেশ্য হয়তো ভালোই ছিল , কিন্তু এটা আমার মনে হয়েছে একেবারেই অদরকারি কাজ । নাদিয়া ইসলাম বলেছেন " ছবি দেওয়ার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ট্যাবু ভাঙ্গা। এর সাথে প্রান্তিক মেয়েরা প্যাড পাচ্ছেন না, প্যাডের দাম বেশি- এইসব বিষয় জড়িত না। হ্যাঁ, ট্যাবু ভাঙ্গা হলে স্বাভাবিকভাবে এই নিয়ে আন্দোলন তৈরি হওয়ার রাস্তা তৈরি হবে, সরকার প্যাডের উপর থেকে ভ্যাট কমাতে বাধ্য হবে, প্যাডের দাম কমবে, স্কুলে সেক্স এজুকেশান শুরু হবে- ইত্যাদি ইত্যাদি।"

তার পোস্টটি পড়ে যতটুকু বুঝলাম, সে প্যাডের ব্যবহারটিকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে, মনে হচ্ছে প্যাড ব্যবসায়ীদের পকেট ভারি করাটাই মুল উদ্দেশ্য । হ্যাঁ এটা অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত , কিন্তু নিম্নমানের প্যাড ব্যবহার করার চেয়ে হাইজিনিক কাপড় ব্যবহার করাটা বেশী উত্তম ,এটি জানার জন্য ফিজিশিয়ান হবার প্রয়োজন নেই , হাইজিন জ্ঞানসম্পন্ন একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেই তার বোঝার কথা কোনটি উত্তম এবং কোনটি নয় । মেয়েদের হাইজিন অথবা পরিষ্কার পরিচ্ছতা শিক্ষা দেয়াটা বেশী জরুরী।সুতরাং প্যাড ব্যবহারে জ্ঞানদীপ্ত করার চেয়েও বেশী প্রয়োজন মেয়েদের সচেতন করা কিভাবে তারা পিরিয়ড চলাকালিন সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পারে।সেটা এমনকি পুরাতন নরম কাপড় পরিষ্কার করে ব্যবহার করলেও হাইজিনিক থাকা যাবে।

প্যাডের উপর ভ্যাট কমালেই প্যাডের দাম কমবে না, বরং প্যাডের মান আরও খারপ হতে থাকবে । কারণ তো সবারই জানা - ' ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়' , যে দেশে অনেক ক্ষুধা রয়েছে সেখানে অন্যায় ভাবে মুনাফা লাভের ইচ্ছা বেশিভাগ মানুষেরই রয়েছে , ক্ষুধার কাছে কোন প্রকার নীতি কাজ করে না ।যেখানে ক্ষুধা নিবারণই সম্ভব হচ্ছে না সেখানে সুশিক্ষা আশা করাটাও বোকামি। কারন মৌলিক চাহিদার চার নম্বরে রয়েছে শিক্ষা - অন্ন, বস্র , বাসস্থান , তারপরে শিক্ষা । দেশে মৌলিক চাহিদা শিক্ষা হয়তো নিশ্চিত হয়েছে কিন্তু সুশিক্ষা এখনো নিশ্চিত হয়নি। কাজেই প্যাড ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ না করে যার যার সামর্থ্য অনুসারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন উপায়ে পিরিয়ড মোকাবিলা শেখানোটাই বেশী জরুরী।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:১৯
১৩টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×