প্রিন্সেস ডায়ানার ছেলেরা দুজনেই তাদের থেকে বয়সে বড় মেয়েদের বিয়ে করেছেন । উইলিয়াম তার থেকে প্রায় ১ বছরের বড় মেয়েকে আর হ্যারি বিয়ে করেছেন ৩ বছরের বড় মেয়েকে। বিজ্ঞ পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে যে , বয়সে বড় মেয়েদের বিয়ে করলে নাকি সংসারের খুঁটি অটুট থাকে অনেক দিন। কারণ মেয়েদের বয়সের সাথে সাথে ধৈর্য ও দূরদর্শিতা বারে। মেয়েরাই নাকি শক্ত খুঁটিতে ছন্ন ছাড়া ছেলেদের ঘরে বেঁধে রাখে এবং ঘরকে বাঁচিয়ে রাখে নানান ঝড় ঝাপটা থেকে। বড় বড় ঝড় ঝাপটায় শক্ত খুঁটির খুব বেশী প্রয়োজন। দেখা যাক এই দুই ভাইয়ের কত দিন চলে। শুভ কামনা রইলো তাদের দুজনের জন্যই। দুজনই দারুণ জনপ্রিয় , তার মধ্যে হ্যারি মনে হয় একটু বেশী প্রিয়। আর মেগান তো হলিউড গ্ল্যামার, তাই সবার কাছেই অনেক অনেক বেশী প্রিয়। " সুট " লিগাল ড্রামা সিরিয়ালে অভিনয় করে মেগান হয়ে যায় প্রখ্যাত এবং প্রিয় একটি মুখ।
হলিউড গ্ল্যামার মেগান মারকেল এখন ব্রিটিশ প্রিন্সেস। বৈবাহিক সূত্রে সে ডাচেছ অফ সাসেক্স উপাধি পেয়েছেন। অবাক করে দিয়ে এই প্রথম মিশ্র জাতি থেকে কেউ ব্রিটিশ রাজ পরিবারে রাজবধু হয়ে এসেছেন। এই রাজকীয় বিবাহের মাধ্যমে রাজ পরিবারের নতুন ইতিহাসের পাতা যুক্ত হলো। মেগানের পূর্বেও রাজ পরিবারে অ্যামেরিকান হাই সোসাইটির অ্যামেরিকান মেয়ে ওয়ালিস সিম্পসন রাজবধু হয়ে এসেছেন এবং সেও মেগানের মতই পূর্বে বিবাহিত এবং তালাকপ্রাপ্ত ছিলেন।কিন্তু তার কোন স্থান হয়নি রাজ পরিবারে ১৯৩৬ সালে বরং রাজা এডওয়ার্ড-৮ তার রাজত্ব হারিয়ে ফেলেন অ্যামেরিকান তালাকপ্রাপ্ত মেয়ে বিয়ে করার ফলে । রাজা এডওয়ার্ড-৮ ওয়ালিস এর প্রেমে এতোটাই মশগুল ছিলেন যে রাজত্ব ছাড়তে এতোটুকু দ্বিধাবোধ করেননি। যার ফলে এখনকার ইংল্যান্ডের রানী এলিজাবেথ-২ এর বাবা এবং রাজা এডওয়ার্ড-৮ এর ছোট ভাই জর্জ-৬ রাজত্ব বুঝে নেয় ১৯৩৬ সালের ১১ ডিসেম্বর।
যুগ পাল্টে গিয়েছে, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে, রাজকীয় বিবাহেও এসেছে নতুন যুগোপযোগী আইন । এখন আর বয়সে বড় কিংবা ছোটেতে তেমন কিছু যায় আসে না,পূর্বে বিবাহিত ছিল কিংবা ছিল না এতেও কিছু যায় আসে না , এমনকি কোন জাত থেকে এসেছে সেটাও ভাবার মত কোন বিষয় নয়।তাইতো মেগানের মত অর্ধ কৃষ্ণাঙ্গ নারী আজ রাজবধুর মর্যাদা পেয়েছেন।
একটি ব্যপার খুব পরিলক্ষিত হয়েছে এই রাজকীয় বিবাহ নিয়ে, অনেকেই এই রাজকীয় বিবাহের চাকচিক্যকে অপছন্দ করেছেন এবং ভেবেছেন অযথাই বেশী বেশী। যারা রাজ পরিবারের এই রাজকীয় বিবাহ অনুষ্ঠান দেখে ইরিটেট হন এবং বলেন ব্রিটিশ সরকার বোকার মত এতো এতো রাজস্ব নষ্ট করেন এই বিবাহ অনুষ্ঠানের পেছনে, তারা আসলে ব্রিটিশদের এখনো চিনতে পারেননি। ব্রিটিশরা মারাত্মক বুদ্ধিমান জাতি, এরা কোন কিছুই অকারণে করেন না। রাজা -রানীর এই রিয়েল লাইফ ফেইরি টেল ব্রিটিশদের ব্র্যান্ড করে। এটা তাদের সৌখিনতা নয় বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সফলতা এনে দেয়, সম্মান এনে দেয় এবং জাতি হিসেবে আরও শীর্ষ স্থানে নিয়ে যায় ।তাইতো ব্রিটিশ সরকার রাজা-রানীকে সোকেজে সাজিয়ে রেখে দিব্যি গণতন্ত্রের চর্চা করে থাকেন দেশ ব্যাপী।এখানে রাজা-রানী আছে কিন্তু কোনই রাজতন্ত্র নেই।এদেশের রানীর কাজ হলো পার্লামেন্টারি আইনকে এপ্রুভ করে সেখানে সাইন করে দেয়া, যেটাকে বলা হয় রয়াল এসেন্ট( Royal Assent) এবং তিনি সেখানে সাইন করতে বাধ্য।কাজেই বোঝা যাচ্ছে রানী শুধুই সোকেজে সাজিয়ে রাখা জীবন্ত পুতুল, যেখানে হলিউড গ্ল্যামার অর্থাৎ এক চিমটি স্টারডাস্ট স্বাদের পরিবর্তন এনেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৭