somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শরীয়তপুরের লিজা হত্যা ॥ হলুদ সাংবাদিকতায় আতঙ্ক ছড়ায় একদল জানোয়ার

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার সরদার কান্দি গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান লিজা আক্তার। লিজা আপনার আমার সন্তানের মতই তার পিতা-মাতার আদরের সন্তান। লিজা সখিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। ভাবা যায়, তৃতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া একটি মেয়ে কেমন ফুটফুটে, চঞ্চল, হৃদয়কারা হতে পারে? ঠিক তেমনি একটি মেয়ে লিজা। স্কুল পড়–য়া লিজা আক্তার সাইকেল চালাতে ভালবাসতো। স্কুল থেকে ফিরে প্রতিদিনের মত খাওয়া দাওয়া সেরে ছুটে গেছে খেলতে। খেলতে খেলেত নিশ্চই তার মনে পড়েছে প্রিয় কাজ সাইকেল চালানোর কথা। ছুটে গেছে সাইকেল ভাড়া দেয়ার দোকানে। পনের মিনিটের জন্য একটা সাইকেল ভাড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। বিশ মিনিট সাইকেল চালিয়ে এসে দোকানির কাছে ফিরত দেয় সাইকেলটি। পাঁচ মিনিট বেশি হয়ে গেছে, তাতে কি, দোকানদার চাচ্চু কিচ্ছু বলবে না, কারন প্রতিদিনের কাষ্টমার যে লিজা! লিজার সেই সৎ সাহস ছিল। দোকানদারের কাছ থেকে সাইকেল ভাড়া নিয়ে চালিয়ে আবার ফেরতও দিয়ে গেছে কিন্তু দেরির জন্য দোকানি কিছু বলেনি, আর বলবেই বা কেন, এতটুকু বাচ্চা, পাঁচ মিনিট বেশি চালিয়েছে তাতে এমন কি ক্ষতি হয়ে যাবে তার? সাইকেল ফেরত দিয়ে যাওয়ার পর লিজা নিখোজ। ঘটনাটা ১৫ জুলাই শনিবার। অনেক খোজাখুজির পর থানায় সাধারণ ডায়রী করা হলো। অবশেষে আট দিন পর মিললো তার নিথর দেহ। লিজার মৃত্যু অত্যন্ত বেদনা দায়ক, আমরা মর্মাহত এবং শোকাহত পরিবারের জন্য গভীর সমবেদনা প্রকাশ ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।
লিজার লাশ আট দিন পরে নিজ বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক ফসলী জমিতে পাওয়া গেছে। ছোট্ট বাচ্চা, মৃত্যুকালে কতটাই না ছটফট করেছে! কতটাই না কান্নাকাটি করেছে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য, বাবার কাছে যাওয়ার জন্য। স্বজনরা কত জায়গায়ই না খোজাখুজি করেছে! আট দিন পরে শাক তুলতে যাওয়া মানুষ দূর্গন্ধ পেয়ে এগিয়ে দেখে একটি লাশ। খবর পেয়ে লিজার পরিবার ছুটে এসেছে। তারাই সনাক্ত করেছে আর কেউ নয় এটাই তাদের আদরের ধন লিজা।
লাশ পাওয়ার পর যা হয়! সেই পোষ্ট মর্টেম, কাটাছেড়া। লিজাকে আনা হলো শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে। সেখানে দুজন ডাক্তার লিজার মরদেহর ময়না তদন্ত করলো। আট দিনের পচা গলা লাশের ময়না তদন্ত করা খুবই কঠিন। চিকিৎসক লাশের ভিতরে লিভার, হৃদযন্ত্র, কিডনি, জরায়ু কিছুই পেল না। এ পর্যন্ত সবই চলেছে প্রকৃতির নিয়মে। লিজার মৃত্যু যেমন একটি ঘৃন্য কাজ এর পরের কাজগুলো করলো কিছু হলুদ সাংবাদিক। সংবাদটাকে রং মেখে হলুদ থেকে লাল করে দিলো। শরীয়তপুরে কিছু চিহ্নিত সাংবাদিক আছে যারা খবর বানায়। তাদের বানানো খবরে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, এতেই ঐ সাংবাদিকরা মজা পায়।
ঘটনাটা নিয়ে কিছু সাংবাদিক ইঙ্গিত করলো অঙ্গ পাচারকারীর আনাগোনার দিকে। তাদের নিউজে উঠে এলো লিজার যেসব অঙ্গ নেই সেগুলো পাচারকারী চক্রের কাজও হতে পারে। আর সেই ভীত তৈরী করার জন্য কৌশলে চিকিৎসকদের দিয়ে এমন কিছু বক্তব্য বের করলো যা টানলে রাবারের মত বলে। সেই সাংবাদিকরা একবারও বিবেচনায় আনলো না যে অঙ্গগুলো যদি কোন পাচারকারী চক্র নিয়ে থাকে সেগুলো কোন কাজে লাগবে কিনা? আর এটা সম্ভব কিনা তাও তারা জানে কিনা আমি তা নিশ্চিত নই। আমি নিজেও অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে জানিনা। তবে এটুকু ধারনা আছে যে, অঙ্গ কোন আলু পটলের তরকারী না যে নিয়ে গেলে রেধে খাওয়া যাবে বা কোন বয়ামে ভরে নিয়ে গেলে খোলা বাজারে চড়া দামে বেচা যাবে। তাই বন্ধু ডাক্তার মাহবুবুল হকের সাথে যোগাযোগ করলাম বিষয়টা জানার জন্য। জানতে তো কোন দোষ নেই, তাই আমার অজ্ঞতার কথা খুলে বললাম। বন্ধু আমায় জানালো, এধরনের সংবাদ প্রচারকারীরা শুধু হলুদ সাংবাদিকই না তারা দালাল চক্রও বটে। বন্ধু আমায় কিছু তথ্য দিলো অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে। পাঠকের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
‘কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হলে ডোনারের কাছ থেকে কিডনি নিয়ে, মাত্র ত্রিশ মিনিটের মধ্যে অপারেশন শুরু করতে হয়। অপারেশন করতে লাগে ৬ ঘন্টা। পৃথিবীতে ত্রিশ মিনিটের বেশি সময় দেহের বাহিরে কিডনী সংরক্ষনের কোন উপায় আবিষ্কৃতই হয়নি। এর বেশী সময় অতিবাহিত হলে রক্তের কোষ মারা যায়, সেই কিডনী প্রতিস্থাপন করলে রোগী মারা যাবে। কিডনী প্রতিস্থাপন করতে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিতসক লাগে, লাগে দুটি অপারেশন থিয়েটার। দাতা গ্রহীতা দুইজন থাকেন পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটারে। যার তার কাছ থেকে কিডনি নেয়াও যায়না। রক্তের গ্রুপ মিলতে হয়, এইচএলএ টাইপিং এর মত আধুনিক আরও পরীক্ষা, দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের একরকম হলে তবেই একজন আরেকজন কে কিডনি দিতে পারে। নাহলে গ্রহীতার মৃত্য নিশ্চিত। কোনভাবেই যা সম্ভব নয়, তা কী করে সেটা ফলাও করে নিউজ আকারে প্রচারিত হয়। কিংবা কেন? উত্তর পাবেন ২০১১ সালে ফিরে গেলে। বাংলাদেশে সবে কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপন শুরু হল। সম্ভাবনা তৈরী হল এদেশেই এসব চিকিতসা শুরুর। মাথা খারাপ হয়ে গেল, বিদেশী হাসপাতালের এদেশীয় দালালদের, বিশেষ করে পাশের একটি দেশের কতিপয় হাসপাতাল ব্যাবসায়ীদের। আর তখনি প্রথম শুরু হল গত কয়েকদিনের মত করে, কিডনি পাচার বিষয়ক সংবাদ। যার জন্য সরকার নিষিদ্ধ করে দিল এদেশে কিডনি প্রতিস্থাপন অপারেশন। হাস্যকর ব্যাপার। মানুষ আবার বিদেশ যেতে লাগল, ভারতে গেলে খরচ হয় ১০-১৫ লাখ টাকা, সিংগাপুর গেলে প্রায় দেড় কোটি। দালাল চক্র শান্ত হল। তাদের ভাগেও যে ২-৪ লাখ করে জুটে। তাদের দালালি করে কোটি কোটি টাকার আয় চলতে লাগল। কিন্তু, সরকার তার ভুল বুঝতে পেরে দেশে আবার কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিল। যা এখন বঙবন্ধু মেডিকেলে ১ থেকে ১.৫ লাখ টাকায় করা যায়। বারডেমে ২ লাখ ৭৫ হাজারে, কিডনি ফাউন্ডেশনে ২ লাখ ৩০ হাজারে, আর জাতীয় কিডনি ইন্সটিটিউট এ বিনামুল্যে। আবারও মাথা খারাপ হয়ে গেল দালাল চক্রের, শুরু হল ২০১১ এর মত করে অপপ্রচার। অজ্ঞ মানুষেরা সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করল। যেটা চিকিতসা বিজ্ঞানে অসম্ভব বলে বিবেচিত। যেটা হওয়া সম্ভব সেটা হল,কিডনি নেয়ার জন্য একজন মানুষকেই ভারতে বা অন্য কোন দেশে পাচার করে দেয়া, যার ব্লাড গ্রুপ, এইচএলএ টাইপিং সহ সব কিছু মিলতে হবে গ্রহীতার সাথে, এর সম্ভাবনা খুব কম, সাধারনত এসব কিছু পরিবারের লোকজনের সাথে মেলার সম্ভাবনা থাকে, তাও সব সময় মেলেনা। কিন্তু কিডনি চুরি কাঁচি দিয়ে কেটে পাঠিয়ে দেয়া, চিকিতসা বিজ্ঞানে ইহা অসম্ভব। অসম্ভব। অসম্ভব। এটা সম্ভব কেবল এদেশের মিডিয়া আর বিদেশি হাসপাতালের এদেশীয় দালালদের অজ্ঞতা, মূর্খতা উদ্ভট কল্পনা আর ষড়যন্ত্রে।’
এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা এলাকার হলুদ সাংবাদিকরা নয়। এরাতো সেই সব দালালদের পাচাটা বাচ্চা দালাল। শরীয়তপুরে হলুদ সাংবাদিকতা আজ নতুন নয়। এর আগেও হয়েছে। আমাদের এলাকা মঙ্গা কবলিত এলাকার মত অভাবি এলাকা নয়। তারপরেও এক হলুদ সাংবাদিক লিখেছিলো ‘শুধু শাপলা খেয়ে বেচে আছে নছিমন’। আবার আরেকটি মেয়ে হত্যাকান্ডকে দোররা মেরে হত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার ঘটনাও আমরা দেখেছি। আসলে এসব নির্লজ্জ হলুদ সাংবাদিকদের লজ্জার কিছু অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। আট দিনের পচা শিশুর শরীরের অঙ্গ না পাওয়ার সাথে অঙ্গ পাচারের গল্প জুড়ে দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরী করার অধিকার কি তাদের আছে? তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
অবশেষে পুলিশ প্রশাসন ঘটনার মুল হোতাকে খুজে পেয়েছে। লিজার চাচাই ঘটনার মূল হোতা। প্রথমে সাইকেল চালাতে টাকা দিয়ে পরে আরো পাঁচশো টাকা দিয়ে লিজাকে প্রলুব্ধ করেছে। পরে একটা বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা কালে লিজা বলে ফেলেছে যে, মাকে বাবাকে বলে দিবে। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে লিজার চাচা। গলা টিপে হত্যা করে রাতে ভ্যানে করে লাশ কৃষি জমিতে ফেলে দিয়ে নারায়নগঞ্জ চলে গেছে। আট দিন পর লিজার গলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে। আট দিনে লাশ পচে যেতে পারে, দ্রুত পচনের জন্য কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করতে পারে এমনটাই ধারনা করছে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আমাদের হলুদ সাংবাদিকরা দেখলো অঙ্গ পাচারকারীদের পদচারনা!! এসব সাংবাদিক নামধারী হলুদ সাংবাদিকদের জন্য শুধুই ঘৃনা আর ঘৃনা!

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×