কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকা কি কখনোই মাদকমুক্ত হবে না ? কেন এ এলাকা থেকে মাদক নির্মূল করাই যাচ্ছে না। কেন বছরের পর বছর ধরে মাদকের আখড়ায় রূপান্তরিত রয়েছে কুমিল্লা রেলস্টেশন ? কেন হাত হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় সব ধরনের মাদক। কেন বছরের পর বছর ধরে হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, পেথোড্রিন, গাঁজা, দেশীয় চোলাই মদ, ভারতীয় হুইস্কি-বিয়ার থেকে শুরু করে চেতনাশক টেবলেট, ইনজেকশন ও যৌন উত্তেজক টেবলেটের আখড়া এখন কুমিল্লা রেলস্টেশন। এ প্রশ্নের উত্তর যেন নেই।
কুমিল্লা রেলস্টেশনের ওয়েটিং রুমেই বিভিন্ন কৌশলে দিন-রাত ২৪ ঘন্টাই চলে মাদকের জমজমাট বেচাকেনা। সেবনের কাজটাও কখনো কখনো রেলস্টেশনের আশেপাশে চলে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকেই মাদক বিক্রেতারা সক্রিয় হয়ে উঠে এখানে। নিয়মিত মাদক সেবনকারীরাও আড্ডা দিয়ে জমিয়ে তুলে মাদক বাণিজ্য। এ মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রন করছে শাসনগাছা, সাতোরা ও ধর্মপুর এলাকার গডফাদাররা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের শেল্টারে বহাল তবিয়তে রেলস্টেশনের মাদকের হাট চালাচ্ছে মাদক সম্রাট আর সম্রাজ্ঞীরা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মাদকের এ আখড়ায় অভিযান চালালে চুপিসারে মাদকের বেচাকেনা চলতো । কিন্তু তেমনি গত কয়েক বছরে কুমিল্লা রেলস্টেশনে বেড়েছে মাদক বানিজ্য । । কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের উৎপাতে , আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন কোন সংস্থা নেই, মাদকহাটে অভিযান চালায়নি, কিন্তু রেলস্টেশন এলাকা থেকে মাদককে নির্মূল করা যাচ্ছে না কোনোভাবেই।
ষ্টেশন এলাকার ও রেলক্রসিং এর উভয় পাশের প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে অবৈধভাবে বসবাসরত এবং স্থানীয় অনেক বাসিন্দার একমাত্র ব্যবসা মাদক। দিনরাত ওই ঘরগুলোতে চলে মাদক ব্যবসা। ক্রেতাদেরকের নিজেদের ঘরে বসিয়ে মাদক বিক্রি করে তারা। নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে কোমলমতি শিশুরাও ক্রেতা চিনতে ভুল করে না। অনেক ব্যবসায়ীরা ক্রেতা বাড়াতে যুবতী মেয়েদের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিকট মাদক সরবরাহ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলস্টেশনের একাধিক বাসিন্দা জানান, রেলস্টেশনের এই মাদকের হাট বেশ পুরোনো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীনও এখানে মাদকের হাট বসতো , তবে চুপিসারে। কিন্তু এখন মাদকের হাট বসে প্রকাশ্যে। এখানকার মাদক ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে মাস্তান পুষে। তাদের ভয়ে প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধ কোনটাই করা যায়না। আর গডফাদাররা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী মাদকব্যবসায়ী জানায়, প্রতিমাসে পুলিশ ও নেতাদের অনেক টাকাই দিতে হয়। যারা এই মাসোয়ারা না দেয়, ওই ব্যবসায়ীদের পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই এলাকার একজন ভদ্রলোক জানান, এখানকার মাদক ব্যবসায়ীদের কারণে সম্মান নিয়ে এলাকায় তাদের বসবাস করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের ছেলেমেয়েরাও স্কুল-কলেজে বন্ধুদের কাছে নিজেদের বাসার ঠিকানা বলতে লজ্জা পায়। প্রভাবশালী ও লোকাল পলিটিকাল শেল্টারে শাসনগাছা রেলওয়ের মাদক বাণিজ্যের বিশাল নেটওয়ার্ক বিস্তার করে রেখেছে সেখানকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ভদ্র বাসিন্দাদের প্রতিদিনকার প্রশ্ন , কাদের শেল্টারে এখানে মাদকের এ জমজমাট হাট রয়েছে। আর কেন কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকা থেকে কখনোই মাদকদ্রব্য নির্মূল করাই যাচ্ছে না। কেন বছরের পর বছর ধরে মাদকের আখড়ায় রূপান্তরিত রয়েছে কুমিল্লা রেলস্টেশন ?
কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকা কি কখনোই মাদকমুক্ত হবে না ?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...
ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।
মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
অহমিকা পাগলা
এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন
হার জিত চ্যাপ্টার ৩০
তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবনাস্ত
ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে
প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন