আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগ পরিদর্শন করতে। এই বিভাগের কাজ কি সে সম্পর্কে অনেকেরই জানা নেই। প্যালিয়েটিভ কেয়ার একইসঙ্গে জীবন ও মৃত্যুর সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়। ‘অবশিষ্ট দিনগুলোতে জীবন সঞ্চার করো, জীবনের সাথে শুধুমাত্র অতিরিক্ত দিন সংযোজন নয়’ এটাই আসলে এই বিভাগের মূলমন্ত্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার এমন একটি উদ্যোগ যা- নিরাময় অযোগ্য রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তার পরিবারের জীবনের গুণগত মান বাড়ায়-যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ এবং নিঁখুত বিশ্লেষণসহ ব্যথা ও অন্যান্য শারীরিক, মনো-সামাজিক এবং আত্মিক সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে দুঃসহ কষ্ট প্রতিরোধ ও প্রতিকারের প্রয়াস পায়।’ আসলে মোটা দাগে বলা যায় খুব নিকটবর্তী সময়ে মারা যাবে এমন কিছু রোগীর কষ্ট লাঘবের জন্য তাকে শারীরিক ও আত্মিক কিছুটা সমর্থন দেয়া।
মৃত্যু নিয়ে আমাদের ভীতি খুবই স্বাভাবিক। আমাদের সকলেরই মরতে হবে-সবাই এই অমোঘ সত্যটি জানলেও আমরা কেউই পৃথিবীর মায়া কাটাতে চাই না।
এই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ-এর আমন্ত্রণে আমাদের পরিদর্শনের সময় ছিলেন জার্মানির হজপিজ কর্মী ও বিশিষ্ট মৃত্যু গবেষক, সাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল-হারুন। জার্মানিতে এ আদলে ‘হজপিজ’ নামের একটি সংগঠনও আছে। যাদের মূল কর্ম হচ্ছে মৃত্যুপথযাত্রীদের সঙ্গ দেয়া। পিজি হাসপাতালে হজপিজ আদলে সেরকম কার্যক্রম না চললেও আসন্ন মৃত্যুপথযাত্রীদের স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে ভীতি কাটিয়ে উঠায় সাহায্য করা এবং একইসাথে চিকিৎসার মাধ্যমে তার শারীরিক যন্ত্রণার কিছু সাময়িক প্রশমনে চেষ্টা করাই এই বিভাগের কাজ। অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিনের ঐকান্তিক চেষ্টায় এই বিভাগটি তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। তিনি জানালেন তাদের লোকবল এবং অর্থবল খুবই কম। কিন্তু তারপরেও আস্তে আস্তে বিভাগটির কার্যক্রম বিস্তৃত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা মেডিকেল কলেজেও এই বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।