somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় ছেলের ছোট রিভিও; মেহজাবিন-১০০ অপুর্ব-৮০

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের মতো যারা মধ্যবিত্তের ঘরে জন্ম নিয়েছি; কলেজে উঠেই বাবার উপর চাপ কমাতে টিউশনিকে বেচে নিয়েছিলাম তাদের জন্য এই টেলিফিল্মটি বেশ ছুঁয়ে যাবে। আমি নিজেেও এক সময় চারটি টিউশনি করেছি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের যে কোন বইয়ের লিখক পরিচিতিতে লিখা থাকে "টিউশনি দিয়ে জীবন শুরু।" তাই টিউশনি এমন এক পেশা যেটা যে করে সে জীবনকে বহুমাত্রিকতায় দেখে। অল্প বয়সেই দায়িত্ব নেয়া, টিচার হিসাবে ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখার প্র্যাক্টিস সে শিখে নেয়।
বয়সটা যেহেতু প্রেম ভালোবাসার ঘুড়ি উড়ানোর- তাই অনেকেই হোঁছট খায় অবশ্য। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় ছেলে হোক, বড় মেয়ে হোক বা ছোট ছেলে, মেজ ছেলে, যাই হোক না কেন সংযমই তাদের একমাত্র শক্তি। বাচিয়ে চলা, সাশ্রয়ের নানা তরিকা সবই তারা শিখে নেয়।

পুরা টেলিফিল্মটাই যত্ন নিয়ে করা। যে যার জায়গায় ছিলো সবাই তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। অভিনয়ে যদি মার্ক দিতে হয়, চরিত্রকে ভেতরে নেয়া বিষয়ে যদি মার্ক দিতে হয় সেখানে ১০০-তে ১০০ পাবে মেহজাবিন। অপুর্ব পাবেন ৮০। মুল চরিত্রটা অপুর্ব করলেও তার বয়জ জনিত, শরীর জনিত বেখাপ্পাটা আমার কাছে ভালো লাগেনি। এর বাইরে মায়ের চিরত্রে অভিনয় যিনি করেছেন তিনিও ভালো করেননি। প্রথম দৃশ্যে অপুর্বের বাবার সাথে মায়ের যে সংলাপ সেটা দেখে মনেই হয়নি তারা স্বামী স্ত্রী। এর বাইরে অপুর্বের সাথে কথা বলার সময়ও তাহাকে সাবলিল মনে হয়নি। মধ্যবিত্তে "মা" কিন্তু সংসারের নিউক্লিয়াস। মায়ের সাংসারিক সংগ্রামের প্রচেষ্টা গুলা কম ফুটেছে।

পুরা টেলিফিল্মে যদি দুটি চুম্বক অংশ আমাকে নিতে বলা হয় তাহলে আমি নিবো অপুর্বের সাথে তার দুষ্ট ছাত্রের কথোপকথন এবং গাড়ির ভেতরে অপুর্বকে রান্না করা খাবার খাওয়াতে চাওয়ার দৃশ্য। কিন্তু টিউশনিতে পড়ার টেবিলে না পড়িয়ে এক আলিশান সোফায় কেন পড়ানো হচ্ছে তা বোধগম্য হয়নি।সোফায় বসে টি টেবিলে নুয়ে নুয়ে ছেলেটি লিখছে- সেটা কি সেট ডিজাইনার দেখেননি।

অপুর্বরা মধ্যবিত্ত কিন্তু তাদের ফ্লাটটা অনেক বড় এবং বেশ ফার্নিশ বলে আমার মনে হয়েছে, যেটা একটু বেখাপ্পা লেগেছে।
কিছু কিছু জায়গায় সংলাপের গ্রুমিং টাইম দেয়নি বলে মনে হয়েছে । যেমন একটা কোচিং সেন্টারে ক্লাস নেয়ার জন্য যে বন্ধুর কাছে গিয়েছিলো সে বন্ধু কথা গুলা খুব দ্রুত বলেছে । মনের মধ্যে কথা উৎপন্নের যে টাইম সে প্যাটার্ন মানা হয়নি।
মুল চরিত্র অপুর্বকে মনে হয়েছে সে চরিত্রটা ধারণ করেনি। বয়সের তুলনায় বেশি ম্যাচিউর দেখানো হয়েছে। প্রেমের ক্ষেত্রে যে উৎকন্ঠা, আবেগ সেটা সে একদমই প্রকাশ করেনি। সে কোন ভুলও করেনি পুরা চরিত্রে যেটাও অস্বাভাবিক এবং তার জন্য কোন সুখবরও ছিলো না । আমি নাট্যকার হলে অপুর্বকে একদিন ঘর পালানোর ডিসিশান নিতে দিতাম এবং পরের দিন দায়িত্বশীলতা জনিত কারণে অপুর্ব সেটা বাতিল করেছে সেটা দেখাতাম। শুধু দুঃসংবাদ, শুধু দুঃসংবাদ দেয়া হয়েছে তাহাকে। একটা মানুষ শুধু পরাজয়ের মধ্যে থাকেনা , কিছু কিছু জয়ও হয়।
আরেকটা টিউশনিতে ছাত্রের মাকে দেখানো হয়েছে যিনি ঘর থেকে বের হয়েছেন বেশ পরিপাটি হয়ে এবং সেজেগুজে। গেট আপ ফেক্টর সেটা নাট্যকারের মাথায় থাকবে নিশ্চয়।

মেহাজাবিনের সাথে বিদায় পর্বটা টানটান ছিলো । দূজনেই সে সময় বেশ ভালো অভিনয় করেছেন।
একটা মেয়ের ভালোবাসা কেমন হয় সেটা মেহজাবিন তুলে ধরতে পেরেছেন , অপুর্ব পেরেছেন,তবে কম পেরেছেন।
সর্বোপরি দেখে ভালো লাগার মতো টেলিফিল্ম।
https://web.facebook.com/asm.arshad
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×