"ধর্ম যার যার" শুধু এইটুকু বলা হলে সবাই মানেন। আবার "উৎসব সবার" এইটুকু বলা হলেও মানেন কিন্তু দুই অংশকে এক সাথে করা হলে মানেন না। মাংস হালাল কিন্তু মাংসের আলু না জায়েজ টাইপের ফেতনাগিরি ? ফেসবুক আসার আগে মানুষে মানুষে এত ফেতনাকারী-বিভেদকারী আগে দেখা যায়নি। আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম----
বাক্যেটা নিয়ে কম বুঝদার লোকেরা যারা জ্ঞানকে এক কিতাবে এবং এক সম্প্রদায়ে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে এবং ইসলামের মুলথিম না বুঝে শুধু খন্ডিত আয়াত বা হাদিসের সাথে ইসলামকে গুলিয়ে ফেলেছেন তাদের জন্য মাঝে মাঝে মায়া হয়। প্রত্যেকটা হাদিস বা সূরার শানে নযুল আছে, প্রেক্ষাপট আছে।
বাক্যটার প্রথমে বলা হচ্ছে "ধর্ম যারা যার" এবং এটা স্বীকার করে নেয়া হয়েছে প্রথমেই । মানে গরু আপনি খাবেন কিন্তু আর কাউকে জোর করে খাওয়াবেন না, পুজা আপনি করবেন কিন্তু কাউকে বাধ্য করছেন না। মানে হইলো ধর্মের যে সব কাজ কারবার অন্য ধর্মের লোকেরা করতে পারবেনা সেটা তার তার নিজস্ব। এর পরেই বলা হচ্ছে ধর্মের সাথে সম্পর্ক না এমন উৎসব গুলা বা যেকোন উৎসবের যে এন্টারটেনিং পার্ট আছে , যেখানে একটা সমাজের অংশগ্রহণের ব্যাপার থাকে, মানসিক সহযোীতা থাকে সে সব জায়গার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে উৎসবটা "সবার।" উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে বলি। যেমন ধরেন কিছু উৎসব আছে ধর্মীয় এবং কিছু উৎসব আছে রাস্ট্রীয়। রাষ্ট্রীয় উৎসবের মধ্যে আছে নববর্ষ উদযাপন স্বাধীনতা দিবস/ বিজয় দিবস উদযাপন ইত্যাদি। এই উৎসব গুলা সবার । বিজয় দিবসের দিন সবাই উৎসব করবে শহীদের জন্য কেউ মসজিদে কেউ মন্দিরে প্রার্থনা করবে । এখানে ধর্ম যার যেটাই হোক না কেন উৎসব কিন্তু সবাই মিলে করছি।
এবার আসা যাক ধর্মীয় উৎসব গুলার দিকে।
এক রাস্ট্রের অধিবাসী হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে যাই হোক না কেন সেটা সাফল্য মন্ডিত করার জন্য রাস্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক দায়বদ্ধ। পারস্পরিক সহযোগীতার প্রয়োজনী্য়তা অপরিসীম। যেমন ধরুণ হিন্দুরা যেমন মুলসমানের উৎসবে বলতে পারে না "দা-বটি-ছুরি বেচবো না" "কাপড় বেচবো না" "কাপড় সেলাই করবো না" "ঈদে চুল কাটবো না"- ইত্যাদি । তেমনি হিন্দুদের উৎসবে কোন মুসলমান বলে না "তোমরা রাস্তায় গেট করবা না" "ঢোল তবলা বাজাবা না" "ছাগল বেঁচবো না" ইত্যাদি। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ধর্মীয় অনুষ্টান হলেও আমাদের মধ্যে উৎসব চলাকালীন কিছু সমস্যা হলেও আমরা মেনে নিই এবং নির্বিঘ্ন করতে সহযোগীতা করি। দেবী দুর্গার মুর্তি আমার ভ্যান গাড়িতে তুলবোনা পরিবহণে সেটা বলছেনা কোন ভ্যানগাড়ি বা পিকআপ।
মুলত বাক্যটির আবেদন চমৎকার । মানুষের মধ্যে সহযোগীতার মনোভাব তৈরী করে। কিন্তু কেউ যদি ত্যানা প্যাঁচায় কম জ্ঞানের সাথে তাইলেই সমস্যা। ইসলাম যদি বলে থাকে সংখ্যা লঘুদের জানমাল এবং তাদের ধর্মীয় উৎসব পালনে তোমরা বাঁধা দিবে না এবং তাদেরকে খোশ রাখা সংখ্যাগরিষ্ঠের দায়িত্ব তাহলে কেন বলবেন না উৎসব সবার?
যেমন ধরেন বিয়ে বর কনের বাসর ঘর ও তাদের কোন সমিস্যা নাই । কিন্তু মুরগীর রান জর্দা ভাত কেন আমাদের (সবার) হইবো না? লাইনটাতেই বলা হচ্ছে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসবের যে এন্টারটেইনিং এবং হেল্পিং অংশ সেটাতো সবারই। মানসিক এগ্রিমেন্টে এবং সামগ্রিক সহযোগীতামুলক কাজের জন্য লাইনটার আবেদন আছে। তাই কাঠ মোল্লাদের কথায় বায়াস না হয়ে আমরা বলতে পারি "ধর্ম যারা যার উৎসব সবার।" মোল্লাদের জ্ঞান অর্জনের সীমাবদ্ধতা এবং উদার জ্ঞানের অভাব এবং তাই তারা সমগ্রটা এক সাথে দেখত পারে না । তাদের কথা বিশ্বাস করার আগে নিজের জ্ঞান দিয়ে যাষ্টিফাই করাই ভালো।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৪৬