somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফরহাদ মজহার কেস স্ট্যাডি --(এসো নিজে করি)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমজনতার পক্ষে দূই তরফেই সঠিক বক্তব্য আশা করা আর ঠিক হবে না।
তাই এসো নিজে করি স্ট্যাইলে দেখি আসলে কী ঘটেছিলো সেদিন।
আমি ফরহাদ মজহার সাহেবের প্রথম পদক্ষেপকে বিবেচনায় নিয়ে দেখার চেষ্ট করছি। ফরহাদ মজহার গতকালের সংবাদ সম্মেলনেও ক্লিয়ার করে বলেছেন তিনি বাসা থেকে বের হয়েছেন স্বইচ্ছায় এবং সেটা ভোর পাঁচটায়। ফরহাদ মজহারের নিজের ভাষ্য বিবিসি থেকে কোড করে নীচে দিলাম:
সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে ফরহাদ মজহার বলেন, "ভোরে কম্পিউটারে লিখতে গিয়ে দেখি আমি চোখ খুলতে পারছি না। এই অবস্থা হলে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এমন একটা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনার জন্যে বের হই। এসময় তিনজন লোক আমাকে জোর করে একটি শাদা মাইক্রোবাসে তুলে আমার চোখ বন্ধ করে ফেলে।"

ফরহাদ মাজহারের ভাষ্য হলো ভোর পাঁচটায় তিনি ওষুধ কিনতে বের হয়েছিলেন। এখন আমার নিজের একটা কৌতুহল হলো তেনার ওষুধ ঐদিনই শেষ হলো? সেটা অপহরণকারীরা জানলো কেমন করে? সাদা মাইক্রোবাস, তিন জন, এবং ভোর পাঁচটার মতো সকাল- এসব এ্যারেঞ্জমেন্টতো কারো ওষুধ ফুরিয়ে যাবে, তিনি নামবেন এসবের মতো আনসার্টেইন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে না। যেখানে সচরাচর পাঁচটায় কেউ সহজে নামেন না। যদি তিনি বলতেন বাসা থেকে উনাকে ধরে নিয়ে গেছেন, অথবা তাহাকে প্ররোচিত করে নীচে নামানো হয়েছে, তাহলে আমি উনার বক্তব্য বিশ্বাস করতাম।

কালকের সংবাদ সম্মেলনে নানা প্রশ্নের উত্তরে হোঁচট খাওয়া দেখেও সন্দেহটা আবারো বাড়লো। বাংলা ট্রিবিউনের রিপোর্ট থেকে কোড করছি;
ফরহাদ মজাহার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সাদা পোশাকের লোকজন জোর করে আমাকে (বাস থেকে) নামিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাকে আবার মারার জন্য নামিয়ে নিচ্ছে ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। সাদা পোশাকের কিছু ব্যক্তি র‌্যাবের দিকে বন্দুক তুলে আমাকে শাসিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উভয়ের মধ্যে প্রচণ্ড তর্কাতর্কি হয়। কিন্তু র‌্যাব রীতিমতো ছোটখাটো যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে আমাকে তাদের গাড়িতে ওঠায়।’ এ সময় প্রশ্ন করা হয়, সাদা পোশাকধারীরা র‌্যাবের চেয়েও শক্তিশালী কিনা, তাদের পরিচয় কী? এ প্রশ্নে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেকেই বুদ্ধিমান সাংবাদিক।
সাংবাদিকরা জানতে চান, ‘১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে হয় আদালতে। আপনি কোনও জবাববন্দি না দিয়ে ডিবি পুলিশের লিখে দেওয়া কাগজ দিয়েছেন?’ প্রশ্নটি তিনি এড়িয়ে যান। পরে তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘উনি জবানবন্দি স্বেচ্ছায় দেননি। পুলিশ যেভাবে বলেছে, সেভাবে দিয়েছেন।’ স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় এটি কিভাবে সম্ভব জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, ‘উনি জবানবন্দি লেখেননি। উনি বলেছেন, আদালতের সোফায় এলিয়ে পড়েছিলেন।’

লিখিত বক্তব্যে যা রয়েছে তা শুনতে চাইলে ফরহাদ মজহার অগোছালোভাবে বলেন, ‘ডিবি অফিস থেকে আমাকে নিয়ে যায়, বিজ্ঞ আদালত আমার পরিস্থিতি দেখেন। আমি কিছুক্ষণ পর যখন বলতে গিয়েছি, আমার যা মনে আছে, আর যা দিয়েছে, আমি তা আপনাকে (ম্যাজিস্ট্রেট) দিলাম। ওইটাই দেখে নিয়ে নিয়েছেন।’

তার মানে আদালতে দেওয়া জবানবন্দি আপনার নয়? প্রশ্ন করলে ফরহাদ মজাহার বলেন, ‘আপনি তো আমাকে আইনজীবীর মতো প্রশ্ন করছেন। এটি আমার না কার বক্তব্য, তা আইনি ব্যাপার। স্বাক্ষর করেছি কি করিনি… আদালতে যখন ১৬৪ ধারা দেওয়া হয়, তখন তো স্বাক্ষর নেওয়া হয় নাকি? এ কথাগুলো তাহলে তো আমার ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন নেই। সাংবাদিকদের কাছে যখন এসেছি, তখন আইন নিয়ে প্রশ্ন করেন, তার জবাব দিতে পারবো না। আমি যেটা দিতে পারবো সেই প্রশ্ন করুন। ’ এ সময় বার বার তার স্ত্রী ফরিদা আখতার প্রশ্নোত্তর পর্ব সংক্ষেপ করার জন্য তাগাদা দেন।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দি আপনার ভাষ্য কিনা আবার স্পষ্ট করতে অনুরোধ জানালে তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করেই বলছি, একটা লোক বিধ্বস্ত, ট্রমা থেকে উঠে এসেছে, তাকে ডিবি সারারাত…,মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে আমাকে কাগজ দিয়ে যা বলছে, লিখে দিতে বলছে। আমি জানিই না কেন আমাকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।’

আদালতে দেওয়া জবানবন্দি যেহেতু আপনার না, তাহলে তা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না।’

অপহরণের দিন সকালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে– এক পা হাঁটেন তো আরেক পা পিছিয়ে পড়েন, কেন? এটা স্বেচ্ছায় কিনা, অপহরণ থেকে আদালত পর্যন্ত– সবটাই কি সাজানো? জানতে চাইলে ফরহাদ মজাহার বলেন, ‘আমি যা বলার বলেছি।’ এ সময় স্ত্রী ফরিদা আখতার বলেন, ‘আপনাদের সবকিছু মুখে তুলে দিতে পারবো না।’ ‘তাহলে আপনি নাটক করেননি?’ জবাবে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নিশ্চিত থাকতে পারেন।’ ফরিদা আখতার বলেন, ‘নাটক করলে আপনাদের সামনে বসতাম না।’

মামলা থেকে বাঁচতে এই সংবাদ সম্মেলন কিনা জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন তিনি। পরে বলেন, ‘না, আমি মামলা থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন ডাকিনি। আমার একার জন্য নয়, অপহৃত হয়ে আমি ফিরে এসেছি, যারা ফিরে আসেনি তারা যেন ঘরে ফিরে আসে।’
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×