নানা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকলেও আমি মুলত খেলার জগতের মানুষ। শারিরীক সক্ষমতা আমাদের সহজাত খেলোয়াড় হবার প্রধান অন্তরায়, তবে অধুনা ক্রিকেটে ও গলফে এবং একদা হকি ও শুটিঙে আমাদের কৃতিত্ব একেবারে ফেলনা নয়। কিন্তু খেলাধুলার অঙ্গনে চরম দুর্নিতি ও সঠিক নেতৃত্বগুনসম্পন্ন লোক উঠে না আসার কারনে ধীরে ধীরে এই অঙ্গন ব্যার্তথার দিকেই চলেছে। ধীরে ধীরে আমাদের তরুন প্রজন্ম ক্রিকেট বাদে অন্য সব খেলায় ব্যাপক হারে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। যার ফলে অবধারিত ভাবে তার এক বিরাট অংশ হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে।
খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকায় কিছু জিনিষ আমি লক্ষ্য করেছি যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১ নির্দিষ্ট খেলায় অনুদানের অর্থ আত্মস্বাত করেন ডিএসএ কর্মকর্তারা।
২ কোন খেলার আগে নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন অনুশীলন না করিয়ে আরো কম করান যাতে টাকা আত্মসাৎ করা যায়।
৩ ডিএসএর নেতৃত্ব এমন সব লোকের হাতে থাকে যাদের সিংহভাগই অল্পশিক্ষিত ও কোন্দলবাজ মানুষ। নানা কারনে স্বার্থহানী হলে মামলা করে খেলাধুলা বন্ধ করে দেন।
৪ শিক্ষার অভাবের কারনে মাঠের রক্ষনাবেক্ষনে তাদের কোন আগ্রহ থাকেনা, ফলে নিম্নমানের মাঠে খেলাধুলা হয়, যা খেলোয়াড়দের পার্ফরমেন্সে ব্যপক প্রভাব ফেলে।
৫ স্কুল পর্যায়ে তারা অন্ত্যন্ত দায়সারা ভাবে খেলার আয়োজন করেন, মুল উদ্দেশ্য থাকে অর্থাত্মসাত।
৬ সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মানের মাধ্যমে টাকা মারায় যত উৎসাহ নতুন মাঠ সৃষ্টিতে তাদের ততই অনীহা।
৭ ডিএসএ নেতৃত্বের সিঙ্ঘভাগই আসেন অত্যন্ত অভাবী মানুষ হিসেবে, যাদের কাছে পদের লোভ এবং অর্থ উপার্জনই মুলকথা।
৮ ভোট প্রথার কারনে অযোগ্য লোকেরাই ফোরাম গঠন করে সহজেই নানা পদে আসীন হয়ে যান।
৯ ডিএসএ গুলোর সভাপতী হিসেবে জেলা প্রশাষকরা থাকেন যারা অত্যন্ত ব্যস্ত থাকেন এবং বদলীর চাকুরীর ফলে তারা এ ব্যাপারে কোন মনযোগ দেননা।
১০ খেলোয়াড় এবং মাঠ সব থেকে গুরুত্বপুর্ন হলেও তারা এদের ব্যাপারে সর্বদাই উদাসীন থাকেন।
১১ অনুদান ছাড়া বেশিরভাগ ডিএসএ তে আয়ের কোন রাস্তা নাথাকায় এরা অত্যন্ত পরমুখাপেক্ষি হন।
১২ সরকার ও চরম দুর্নিতিগ্রস্থ ন্যশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল খেলাধুলা মনিটর করেন না বলে অনেক জেলা নিয়মিত বিভীন্ন লীগ আয়োজন করেনা। বরং পুর্বে হয়ে আসা না টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দিচ্ছেন।
১৩ স্টেডিয়াম এ খেলাধুলা বন্ধ করে মেলা, বিয়ে ইত্যাদি আয়োজন করে টাকা উপার্জন করে থাকেন এইসব গুনধর ব্যক্তিরা।
১৪ নানা ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্টের সময় নিজেদের আত্মিয়স্বজনকে যোগ্যতা বিচার না করে নানা কাজে নিয়োগ বা কন্ট্রাক্ট দেওয়া।
১৫ দুএকটি বাদে অন্যান্য খেলায় নিয়মিত অনুশীলনের ব্যবস্থা বা কোচ নিয়োগ না দেয়া। সম্ভবত এদের এব্যাপারে কোন জ্ঞ্যানই নেই।
এধরনের নানা সমস্যা আমাদের খেলাধুলার জগতকে ধীরে ধীরে ব্যার্থতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের দেশ বহির্বিশ্বে যে সম্মান পেয়েছে তা অব্যহত রাখতে এ নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনেক ভাবতে হবে এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে দুএকবার আমার যাবার সৌভাগ্য হয়েছে, একটি মাঠে মেলা বন্ধ করায় তিনি আমাকে অনেক সাহাজ্য করেছেন। তবে এর জন্য আমাকে পরে অনেক চড়া মুল্য দিতে হয়েছে। যাই হোক মন্ত্রী মহোদয়কে দেখেছি খেলাধুলা নিয়ে কাজকর্ম কম করে যবমন্ত্রনালয়ের নানা বদলী ও তদবীরে বেশি ব্যস্ত থাকতে। তিনি যদি একটু এ ব্যাপারে মনোযোগ দিতেন তবে বড় ভালো হত।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫০