somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকায় অবস্থিত নর্থব্রুক হল বা লালকুঠি’র ইতিহাস

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রাচীন এবং সৌন্দর্যময় স্থাপত্যিক একটি নিদর্শন এই নর্থব্রুক হল । বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ওয়াইজ ঘাটে অবস্থিত এই নর্থব্রুক হল যা বর্তমানে স্থানীয়ভাবে লালকুঠি নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে।১৮৭৪ সালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ ব্যরিং নর্থব্রুক ঢাকা সফরে আসলে সেই সফরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই এই ভবনটিকে টাউন হল হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। এখানে একটি নাট্যলয়ও রয়েছে। সেসময় ঢাকার স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা গভর্নর জেনারেল নর্থব্রুকের সম্মানে এই ভবনের নাম রাখেন নর্থব্রুক হল। ১৯২৬ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি এখানে বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঢাকা পৌরসভা সংবর্ধনা দেয়া হয়। বর্তমান এই ভবনটির দায়িত্ব রয়েছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। জরাজ্বীর্ণ হওয়ায় এটি আর মিলনায়তন হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। এই ভবনটি সংলগ্ন সড়কটি নর্থব্রুক হল রোড নামে পরিচিত। মূল ভবনের পশ্চাৎভাবে একটি গ্রন্থালয় রয়েছে।


১৮৭৯ সালের শেষের দিকে নর্থব্রুক হলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তখনভাওয়াল রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী এই হলটি নির্মাণের জন্য ১০ হাজার টাকা দান করেন। তবে ভবনটি ১৮৮০ সালের ২৫শে মে উদ্বোধন করা হয়। সেসময়ে ঢাকার কমিশনার নর্থব্রুক হলের উদ্বোধন করেন। তৎকালীন পদস্থ রাজকর্মচারি ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সভা এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম এই ভবনে আয়োজন করা হতো। পরবর্তী সময়ে নর্থব্রুক হলের নামানুসারে সংলগ্ন সড়কের নামকরণ করা হয় নর্থব্রুক হল রোড।


১৮৮২ সালে ভবনটি টাউন হল থেকে পাঠাগারে রূপান্তর করা হয় এবং এর সাথে জনসন হল নামে একটি ক্লাবঘর সংযুক্ত করা হয়। স্বল্পসংখ্যক বই নিয়ে পাঠাগারটির যাত্রা শুরু হলেও কয়েক বছরের মধ্যে এর বই সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ১৮৮৭ সালে এই পাঠাগারের জন্য বিলেত থেকে বই আনা হয়েছিল। ১৯২৬ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি এখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঢাকা পৌরসভা সংবর্ধনা দেন।


পাকিস্তান আমলে নর্থব্রুক হল তার ঐতিহ্য হারাতে শুরু করে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শ্রীহীন হয়ে পরে পাঠাগারটি। ধীরে ধীরে কমতে থাকে এর পাঠক সংখ্যা। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই পাঠাগারের অধিকাংশ বই নষ্ট হয়ে যায়। স্বাধীনতার পরও গ্রন্থাগারের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সময়ে নর্থব্রুক হলের আশপাশে হয় নির্মিত সম্মেলন কেন্দ্র এবং গণমিলনায়তনের মতো ভবন যা এর আকর্ষণকে অনেকাংশে ম্লান করে দিয়েছে। ২০০৮ এর বিধি অনুযায়ী রাজউক কর্তৃক মহা পরিকল্পনাভুক্ত স্থাপনা হিসেবে নর্থব্রুক হলকে সংরক্ষণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। বর্তমানে ঢাকা সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এই হলটি। হল এলাকায় বর্তমানে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব, ৭৯ নম্বর কমিশনারের কার্যালয়। ডিসিসি কমিউনিটি সেন্টার এবং ফরাসগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির কার্যালয় অবস্থিত। গ্রন্থালয়ের অধিকাংশ বই জ্বীর্ণ হয়ে পড়েছে।১৮৭২ সালে নির্মিত এই নর্থব্রুক হলটির ইমারতটি লালরঙ্গে রাঙ্গানো ছিল,আর সে জন্যই পরবর্তীতে এই নর্থব্রুক হলটিকে লালকুঠি নামে ডাকা হতো আর তাই এর নাম হল নর্থব্রুক হল বা লালকুঠি।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৩
১৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×