প্রাক ইসলামিক যুগে নব্য মুসলমানগন প্রায়শই মক্কার মুর্তিপূজারীদের হাতে নিপিড়িত হতো। ইসলাম ধর্ম গ্রহনের কারণে অনেককে দিনের পর দিন সহ করতে হয় অমানবিক অত্যাচার এমনকি কয়েকজনকে হত্যাও করা হয় । সপ্তম ইসলাম গ্রহণকারী সুমাইয়া বিনতে কাব্বাবকে প্রথমে আমর ইবনে হিশাম মারাত্মকভাবে নির্যাতন করেন আর শেষ পর্যন্ত সুমাইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হন।মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) কে মক্কাবাসীরা প্রথম দিকে খুবই অত্যাচার করতেন। একদিন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) কাবায় নামাজ পড়ছিলেন এমন সময়ে আকবা বিন মুঈত তার পিঠের উপর উঠের নাড়িভূড়ি চাপিয়ে দেন। আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিল প্রতিদিন নবীজীর দরজায় নোংড়া আবর্জনা ফেলে রাখতেন এবং তার বাড়ির পথে কাঁটা পুঁতে রাখতেন। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন ইথিওপিয়ার বিলাল ইবনে রাবাহ ছিলেন একজন দাস। ইসলাম গ্রহন করার ফলে তার মালিক তার উপর প্রভুত অত্যাচার করে। মধ্যদুপুরে মরুভুমির তপ্ত বালির উপর তাকে চিৎ করে শুইয়ে বুকের উপর পাথর চাপা দেয়া হতো। বলা হতো বিলাল যদি মক্কার দেব দেবীদের কাছে মাফ চায় তাহলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে। বিলাল তার বিশ্বাসে অনড় ছিলো। এভাবে দিনের পর দিন তার উপর অত্যাচার চলতে থাকে। অবশেষে আবু বকর তাকে কিনে নিয়ে মুক্ত করে দিয়েছিলেন।
১৯৩৬ সালের জনসংখ্যার পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী চীনের কুয়োমিংতাং প্রজাতন্ত্রে মুসলিমদের সংখ্যা ছিলো মাত্র ৪ কোটি ৮১ লাখ। মাওসেতুংয়ের নীতির পর এই সংখ্যা কমে দাড়ায় ১ কোটি। দৃশ্যত এখানকার ৩ কোটি ৮০ লাখ মুসলিম কোথায় উধাও হয়ে যায় সে ব্যাপারে সরকারি ব্যাখ্যা কখনই পাওয়া যায়নি।১৮৩৭ সালে মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের অনুগত রাজা গুলাব সিং পশতুন গোত্রের বড় অংশ ইউসুফজাই গোত্রের বিদ্রোহ দমনের জন্য অভিযান শুরু করেন। তিনি তার পায়ের কাছে এনে ফেলা প্রতিটি ইউসুফজাই পুরুষের মাথার জন্য এক রূপি পুরষ্কার ঘোষণা করেন। কাতুহাতে সদরদপ্তর স্থাপন করে তিনি মুসলমান পশতুন গোত্র নিধন শুধু করেন। অল্প কিছু মহিলাকে ছেড়ে দিলেও অধিকাংশ মুসলিম রমনীকে রাজা গুলাব সিংয়ের হারেমে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকিদেরকে দাসী হিসেবে লাহোর এবং জম্মুতে বিক্রি করে দেয়া হয়। এই অভিযানে ১০ হাজার পশতুন বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয় এবং হাজার খানিক মহিলাকে দাসী হিসেবে বিক্রি করা হয়। কাশ্মির চুক্তির মাধ্যে জম্মু কাশ্মির দখল করে নেয়। তবে শিখ গোত্রসমুহের মধ্যে এই দগরা নীতি চলতে থাকে। তবে ১৮৬৩ সালে রাজ্যে ঘৃণ্যতম মুসলিম গণহত্যা সংঘটিত হয়। দগরা শাসক মহারাজা রনবীর সিং সেনাপতি হুশিয়ারা সিংকে ৩০০০ সৈন্য সহ ইয়াসিন এবং হুঞ্জা অঞ্চলের মুসলমান বিদ্রোহীদের শাস্তি দিতে প্রেরণ করেন। দগরারা সকল পুরুষকে বন্দী করেন। অনেক দগরা সৈন্য মান্দুরি পাহাড়ের পেছন অংশে প্রবেশ করে যেখানে নারী এবং শিশুরা লুকিয়ে ছিলো। এই সব নারীদের মধ্যে যারা আহত ছিলো তাদেরকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। ২০০০ ইয়াসিন গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়। প্রায় ৫০০০ ইয়াসিনিকে শ্রীনগরে নিয়ে আসা হয় শ্রমিক হিসেবে এবং জীবন্ত সকল নারীকে দোগরা সৈন্যদের হারেমে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৮২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১৮ই সেপ্টেম্বর সকাল ৮ টার মধ্যে লেবানিয় খ্রিস্টান মিলিশিয়া গ্রুপ লেবাননের বৈরুতে অবস্থিত সাবরা এলাকায় এবং পার্শ্ববর্তী শাতিলা শরণার্থী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ৭৬২ জন এবং ৩৫০০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছিল। যাদের হত্যা করা হয় তাদের অধিকাংশই ছিলো ফিলিস্তিনি এবং লেবানিয় শিয়া মতাবলম্বী।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে অটোমান শাসিত সিরিয়ায় বেসামরিক হতাহত লোকের সংখ্যা ছিলো প্রায় ৫০০০০০ এর অধিক। আক্কার সহ বৃহত্তর সিরিয়ায় সেই বেসামরিক হতাহতের বিশদ বর্ণনা পাওয়া যাবে লিন্ডা স্ক্যাটকোয়াস্কির শ্চিলচারের লেখায়।মায়ানমার বৌদ্ধ অধ্যুষিত দেশ। মায়ানমারের মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রধান অংশ রোহিংগা এবং বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও আরব এবং পারস্য থেকে আগত মুসলিম অধিবাসী। দাপ্তরিক ও ব্যবসায়িক কাজে ব্রিটিশরা ভারতীয় মুসলমানদের বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান বার্মায় নিয়ে আসে। মায়ানমার স্বাধীনতা লাভের পর অনেক মুসলমান তাদের পূর্ববর্তী পদে বহাল থাকে এবং অনেকে ব্যবসা আর রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেন।
১৫৫০ সাল থেকে ১৫৮৯ সাল অবাধি রাজা বায়িন্নাউং এর আমলে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পায় এবং বৌদ্ধরা মুসলিমদের হত্যা করে। ১৫৫৯ সালে ব্যাগো দখলের পর বৌদ্ধ রাজা হালাল মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করেন। ধর্মের নামে প্রাণীহত্যাকে বর্বোরচিত ঘোষণা করে তিনি ইদ উল আযহা পালন নিষিদ্ধ করেন। তার প্রজাদেরকে তিনি জোরপূর্বক বৌদ্ধ ধর্মের বাণী শুনতে বাধ্য করতেন এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করতেন। ১৮ শতকে রাজা আলাউঙ্গাপায়া মুসলমানদের জন্য হালাল খাবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
১৯৬২ সালে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে সেনাপতি নে উইন ক্ষমতায় গেলে মায়ানমারে মুসলমানদের অবস্থা করুন হয়ে পড়ে। মুসলমানদেরকে সেনাবাহিনী থেকে বিতাড়িত করা হয় এবং সামাজিকভাবে বিভিন্ন সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়। রোহিঙ্গারা পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে পালিয়ে যেতে শুরু করেন। ১৯৭৮ সালে আরাকানে কিং ড্রাগন অপারেশনের সময় ২০০০০০ এবং ১৯৯১ সালে ২৫০০০০ রোহিংগা মুসলিম বাংলাদেশে শরনার্থী হিসেবে স্বদেশ ছেড়ে পালিয়ে আসেন।
https://web.archive.org/web/20051109035218/http://www.witness-pioneer.org:80/vil/Books/MH_LM/from_the_beginning_of_revelation.htm
https://books.google.com.bd/books?id=PL_ACoFwJ2gC&pg=PA41&dq=raja+gulab+singh+revolt&hl=en&sa=X&ei=5VEwT9G8NoanrAfg-dmeBA&redir_esc=y#v=onepage&q=raja gulab singh revolt&f=false
http://scholarship.law.wm.edu/cgi/viewcontent.cgi?article=1606&context=facpubs&sei-redir=1&referer=http://scholar.google.com.tr/scholar?hl=en&q=massacres+in+lebanon&btnG=&as_sdt=1%2C5&as_sdtp=#search="massacres lebanon"
http://www.ipsnews.net/
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪