একজন ব্যাক্তি তার বয়স ৪৫-৫০ এর মধ্য। ব্যাক্তিগত জীবনে যতটুটু জানি সে যথেষ্ট পরিমান সৎ ও ভদ্র। তার জীবনে এলাকার সকল লোকের সাথে তার আচার ব্যবহার খুবই সন্তষজনক। কিন্তু বিপত্তি ঘটল অন্য যায়গায়। তার স্ত্রী দীঘ দিন রোগ ভোগের পর প্রায় ২ বছর আগে মৃত্যু বরন করে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। তার স্ত্রী অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে তার জীবনের অনিশ্চয়তা জেনে মেয়েকে গ্রামেই অন্য মহল্লায় বিয়ে দেয়। ছেলেটি বড় সেও বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক । পেশাগত কারণে ঢাকা থাকে।
এখন ব্যাক্তিটি থাকল সমস্যায়। প্রিয়জনের মৃত্যুর দু:খ সাথে ছেলে মেয় ছাড়া নি:সঙ্গ জীবনে সে চাচ্ছিল নতুন করে নিকাহের ব্যবস্থা। তার সততার সাধারণ প্রতিফলন হিসেবেই সে প্রথমে তার ছেলে ও মেয়েকে নিকাহের কথা বলে। সাথে তার মহল্লার অনেককেই এ বিষয়ে একটা সমাধানের কথা বলে। অন্যান্য লোকেরা কিছু দূর অগ্রসর হলেও শেষ পর্যন্ত ছেলে ও মেয়ে জামাইয়ের কারণে তা হয়ে ওঠেনী। তারা চাচ্ছিল তাকে বিবাহ না দিতে। বিবাহ না দেবার পেছনের কারণ ছিল তার সম্পদ। পৈত্রিক সূত্রেই তিনি কিছূ বাগানসহ ১০-১২ বিঘা জমির মালিক। নতুন করে নিকাহের ব্যবস্থা হলে সম্পদে নতুন করে ভাগ বসবে। সম্পদ লাভের এই লোভই ব্যাক্তিটির জীবনের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।
নিকাহ হবে কী হবে না। এর মধ্যই খেয়ে না খেয়ে একাকী নি:সঙ্গ সময় কাটছে। কিন্তু গতকাল সকালে তা নিজ বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলো দূরে এবং মেয়ে জামাই বাড়ি থেকে মাত্র ১০০ গজ এরও কম দূরত্তে গলায় রশি পাকানো অবস্থায় তার মৃত্যু দেহ পাওয়া যায়। ঘটনা কী হতে পারে সেদিকে যাচ্ছি না। কারণ................
এটি শুধু এই অসহায় ব্যাক্তিটির নয় বরং কম বেশী পুরো বিশ্বের সমাজ ও পরিবারের এই অবস্থা। সবাই অর্থ লাভকেই জীবনের সকল স্বার্থকতা মনে করছে। অর্থ ছাড়া কোথাও জীবনের মানে খুজে পাচ্ছে না। এই অর্থের মধ্য জীবনের সকল কিছূ খূজতে যেয়েই ঘটছে এই সকল করুন ট্যাজেডি। এই প্রবণতা কী সমাজ জীবনের অংশ হতে যাচ্ছে? এটি কী এখন সংষ্কৃতির মধ্য গণ্য? রাষ্ট্র ও দেশ জয়ের/দখলের জন্য তো অনেক যুদ্ধ দ্বন্দ হয়েছে। সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থা ভাঙ্গার জন্যও কি এমন কিছু হয়েছে? যদি হয়েই থাকে তবে কেন পৃথিবীর আদিম প্রতিষ্ঠান ও বড় অবিষ্কার এই সমাজ ও পরিবার রক্ষার জন্য কোন.................
হতভাগা ব্যাক্তিটি আমার গ্রামের সৎ প্রতিবেশী ছিলেন। তার আত্বার মুক্তি কামনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯