বিকেলে বাসায় ফিরে দেখি মাধবী উঠোনে বসে কাদচ্ছে । আমি বাসায় ঢুকতেই মাধবী ফুঁপিয়ে বললো,জানো দাদা নিহির আমার কেয়াগাছটা ওপরে ফেলেছে ! দু'ঘা দিয়েছি তো,দৌড়ে ও যে কোথায় চলে গেল ? দুপুরে ও আসেনি। এত অবুঝ হয়েছে নিহির , সারাদিন অকাজ করে বেড়াবে। বোস খুঁজে নিয়ে আসি । মাধবী, একটু জিরিয়ে যেতে ,কেবল আসলে মাত্র। না , ওকে খুঁজে নিয়েই জিরবো। প্রথমে তালপুকুর পাড় গেলাম ,সেখানে নেই।খুঁজতে খুঁজতে মনীক্ষার বনে গেলুম , আমলকী তলার নিচ দিয়ে যাচ্ছিলুম -ওপর থেকে বললো, আমায় খুঁজতে এয়োচো ক্যান? একটা কেয়াফুল ছিড়িচি বলে ,মাধবীদি কতক্ষণ মারলো ! বুঝিতো , আমি ছোটবলে তোমরা আমাকে মরেই ফেলতে চাও , আমি মরে গেলেই তো ভালো না ? আমার সম্পদে তোমরা দু"জন ভাগ বসাতে পারবে । এরপর নিহিরকে অনেক বুঝিয়ে গাছ থেকে নামালাম, বললাম গাজনের বৈশাখের মেলা থেকে নতুন কাপড়, একটি খেলনা ঘোড়া , এক কেজি দধী, আধ কেজি লাল গরম জিলিপি কিনে দেবো । সেই লোভেই নিহির নামলো । পর নিহিরের হাত ধরে বাড়ির পথে রওনা দিলুম, উপহারাদি পেয়ে নিহির কাউকে ছুঁতে দিবে না ।সারা পাড়া দেখিয়ে বেড়াবে ওগুলো আর জিলিপি ,দধী দু"দিন ধরে মুড়ি মাখিয়ে ও খাবে । ওর সাথে নিশ্চুপে হাঁটতে হাঁটতে মনে হলো, ওর শরীর থেকে কেয়াফুলের ঘ্রাণ বের হচ্ছে। কেয়াফুল ছিঁড়ে হয়তো ও শরীরে ঢলেছে , কারো কাছে শুনেছিল হয়তো কেয়াফুল শরীরে ঢললে 'নায়ক' হওয়া যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:২০