মণিকা রুমাল দিয়ে চোখ মুছে বললো, কতরকম ছেলে দেখলাম যাদের কিছু কথা শুনলেই মন জুরিয়ে যায় তবুও দু:খ করে মনে হয় কি জিনিস চেয়েছিলাম, কি জিনিস পেতাম আর কি জিনিস আমার হলো না ।
-সুখি হওনি বুঝি?
মণিকা : সুখ ! সেতো ভাগ্যর লিখন , ছোট থেকেই পুড়া মুখো ছিলাম ।
-তো অভিযোগটা কার প্রতি ? আমার প্রতি? মনের মত স্বামী পাওনি তাই ?
মণিকা: কারো প্রতি না ; নিজের প্রতিই ।
-চেপে যাচ্ছো কেন ? বল ?
মণিকা : চেপে যাচ্ছি কই প্রকাশ্যই তো বললুম ।
-ভালো লাগে না আমাকে ?
মণিকা: না । একদম সইতে পারি না ।
-কত সময় কত জায়গায় গিয়েছি, মানুষের সাথে মিশেছি, অনেক আদেশ,নির্দেশ , অনুরোধছিল কিন্তু প্রকাশ্য অভিযোগ পাইনি ,কোনদিন আমাকে নিয়ে দু:খবোধও করেনি । এরকম শোক করছো কেন তুমি, এই বলে মণিকার হাত ধরছিলাম ।
মণিকা: আমাকে ছুবে না তুমি । মনে নেই গত রাত্রিরে কি করেচো ?
-শেষরাত্রিরে স্ত্রীকে আদর করতে যাওয়ার নাম যদি অপরাধ হয় , সে রকম আদার আর কোনদিন করবোনা মনিকা ।
মণিকা : বলেছিলাম তোমাকে আমার শরীর ভালো নেই, শুনেচো তুমি ? নিজের ইচ্ছেমতই তো তোমার ভারী শরীরটা দিয়ে আমাকে পিষলে ।
-সে না হয় , নিজেকে সংবরন করতে পারিনি তাই ভুল হয়েছে । তাই বলে এভাবেই বলবে , তোমাকে ভালো লাগে না ?
মণিকা: সত্যিটিই বলেছি , যাকে ভালোলাগে না , সে যেটাকে আদর মনে করে আমাকে দেয় ,সেটাকে তো আমার যন্ত্রনা মনে হয় ।
-তাহলে আসলে কেন ? রাজি হলে কেন ?তোমার সাথে তো আমার প্রেমের বিয়েছিল না ! রাজি হলে কেন তখন ? তোমার সাথে তো কথা বলেই নিয়েছিলাম, চুপ করে ছিলে তুমি, কোন উত্তর দাওনি তো ? আর এখন বলছো কেন এসব ?
মণিকা: ওরা খুব জোর করেছিল , মা বলেছিল আমি রাজি নাহলে সে বিষ খাবে ।
-তো মায়ের কথায় রাজি হয়ে হয়েচো ?
মণিকা : হুম ।
-তাহলে কি মায়ের কথা মনে করে একটু ভালোথাকার অভ্যাস করা যায় না ? বলছি যেটাকে যন্ত্রনা মনে করো, বা আমাকে সইতে না পাওয়া । জানি , কত তরুণের সাথে মিশে তোমার ভালোলাগা জন্মেছে , ওদের কথা শুনে । এই হয়তো ভাবছো , বয়েসে একটু বেশি বরকে কিভাবে ভালোবাসবে ।
মণিকা চুপ হয়ে রইলো ।
কথা বলতে বলতে ঊর্ষার আলো ফুটলো । আমি বের হলাম , বাইরে দেখি বড়দার ছেলে অহন বই নিয়ে বসেছে বারান্দায় । কিছুক্ষন বসে ওকেপড়া দেখিয়ে দিলাম । একটু ঘুরে এসে , আপিসে চলে গেলাম ।
পাশের বাসায় বিয়ে হচ্ছিলো, আমাদের নেমন্ত্রন্যছিল, বাড়ির মেয়েরা ,ছোটরা তাই ঐ নিয়ে ব্যস্ত । মণিকাও ব্যস্ত । শুধু টেরপেতাম রাত্রিরে পাশে কেউ এসে শুয়েছে , যার নি:শ্বাস আমার থেকে অনেক দুরে ; পায়ে পায়ে একটু ঘসা লাগলেও যে নিজেকে সড়িয়ে রাখে । আমার ফিরতে রাত হয়, কিচেন থেকে নিজে খেয়েই ঘুমিয়েপড়ি , পরদিন রাত্রিরে বসে বই পড়ছিলাম মণিকা ঘরে ঢুকলো, চোখে চোখ পড়তেই ও বললো, কখন আসলে তুমি ? কতদিন ধরে ব্যস্ত আছি গো, ওদের বাড়িতে তো বিয়ে কিছুতেই ছাড়তে দেয় না । কত কাজ করে দিতে হয় , মাও বললো যেয়ে যেন করে দিই । আমি বললাম, যার বিয়ে তাকে পরামর্শ দিও-কারো চাপে যেন বিয়ে না করে । মণিকা হঠাৎ চুপ হয়ে গেল । পর বইটা রেখে শুয়ে পড়লাম, মণিকাও শুল । কিছুতেই ঘুম আসছিল না , বার বার মন চাচ্ছিলো মনিকাকে জরিয়ে ধরেবলি , যা হাবার তো হয়ে গেছে ভুলে যাওনা ওসব দুঃখের কথা , আমরা একটু ভালো করে বাচিঁ । কতদিন স্পর্শপাইনি মণিকার শরীরের , কি অদ্ভূত ঘ্রাণ ওর শরীরে সারাক্ষন মনচায় ওকে লেপ্টে ধরে থাকি, ইচ্ছেমত ঠুটদিয়ে চুষে নিই ওর নরম অঙ্গ । ঐদিনের কথাতে আহত হয়ে নিবে গেছি, কয়েকবার ওর শরীরে হাত বাড়িয়েও থেমে গেছি , আবার যদি ও অভিযোগ তুলে । এমন নানা কথা ভিড় করছিল, কি গন্তব্য এই সম্পর্কে ? জানি না এর শেষ কোথায় । এই ভাবতে ভাবতে তন্দ্রা জমছিলো ,হঠাৎ মণিকা আমার বুকে ওকে সর্পে দিয়ে বললো, ভুল হয়ে গেছে মানুষ ! আমি অনেক লোভী । ক্ষমা চাচ্ছি , কত কটু কথা বলেছি তোমায় ! বিয়ে বাড়িতে সুশ্রীতরুণ দেখে মোহে পড়েগেছিলুম । আর ভুল করবো না আমি । এরপর নিজেকে গভীর থেকে প্রকাশ করছিল মণিকা । আমার নিরাবতা পেয়ে প্রশ্ন করলো, তুমি শুনছো আমার কথাগুলো ? আমি বললাম, শুনছি , আর বলতে হবে না তোমাকে । চুপ করে বুকের ওপর শুয়ে থাক , বুঝতে চেষ্টাকরো আমাদের শরীরের বন্ধন,রক্তমাংসের স্বাদ ,নাড়ীরটান,শরীরের শাখা-প্রশাখার উচ্ছ্বাস । এরপর মনিকা চুপ হয়ে গেল । আজকের পর থেকে আর ভালো থাকবো আমরা ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:৪৬