somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যবিত্ত_জীবন_প্রেম । মানুষ

১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







ণির্মা তার সাথে আমার বিবাহিত জীবন প্রায় ১০ বছরের । টিউশন করতে গিয়ে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রেমের ফাদেঁ ফেলে ওকে বিয়ে করা কিন্তু আমার কোন কিছু নেই পর জেনেও ওর আক্ষেপ ছিল না । শুধু হেসে বলছিল, তুমি যে গুল মারবে আগেই জানতাম কারণ টিউশন পড়ানো ছেলেদের বাসার আর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকে না বেশির ভাগ সময় । পর আতস্ত হলুম , যাইহোক এই নিয়ে ও আর কোন ব্লেম দিবে না । কোন স্থায়ী জব না খুজেঁই টিউশনির ওপর জোর দিয়ে চলছিলাম, ণির্মা বলেছিল একটা স্থায়ী জবের খোজঁ করতে ! কিন্তু আমার যা হয় একটু ভালো মত চলে গেলেই আর অন্য কিছু চিন্তে করি না । হঠাৎ করে সিলেবাস এর পরিবর্তন এলো , এতদিনকার গতবাধা নিয়মগুলোর পরিবর্তন হল, প্রথমবার ছাত্ররা আমার দ্বারা ভালো রেজাল্ট না করাতে পেরে, গার্ডিয়ানরা অন্যথায় ব্যবস্থা নিল আর আমি পড়ে গেলাম অথৈজলে । কোন রকম ভাবেই , আর মাসিক খরচ বাসা ভাড়া দিতে পারছিলাম না । বলে নেয়া ভালো, এর মধ্য আমার দু'টো সন্তনের জন্ম হয়েছিল, রিহান ও শৈবালের একজনের ৮ বছর আরেকজনের ছয় ।

মাস দুয়েক পরের ণির্মা নিবন্ধন দিয়ে এক স্কুলে টিকে গেল । কিন্তু সেটা শহরতলী থেকে অনেক ভিতর, একদিনের ট্রেন পথ । আমার ওপর সমস্ত ভার দিয়ে ণির্মা চলে গেল গ্রামীণ জীবনে স্কুল মাষ্টারীনি করতে । পর নিজের রান্না করে, সন্তানদের খাওয়াতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম জীবন কত কঠিন । দু'একটা টিউশন করে , আমার আর কিছুই ছিল না , ণির্মার আয়েই প্রধান উৎস হলো । মাস দুই কেটে গেল, ণির্মা কিছুতেই ছুটি পাচ্ছিলো না , সপ্তাহিক একদিনের ছুটিতে তো আর আসতে পারে না । পর আমিই গেলাম ওর কাছে , ও যেন আরো সুন্দরী হয়ে উঠলো , কি জানি অনেকদিন পর থেকে কাছের মানুষরা কি সুন্দর হয়ে উঠে কিনা । ণির্মাকে বলেছিলাম দু'দিন থাকবো, কিন্তু পাচঁদিন হয়ে গেল আমার ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে নাই যেন । ণির্মা স্কুল থেকে ফিরে আসলে, সারাক্ষন ওর ওপর পড়ে থাকতাম , অনেকদিনের জমে থাকা জৈবিকতার স্বাদ নিচ্ছিলাম, ণির্মাও যেন তাই চাছিলো । দ্রুত করে স্কুল থেকে ফিরে আসতো আর নিজেরা অন্তরঙ সময় পার করতাম । সপ্তম দিনের দিন, ণির্মা সকালে ককিয়ে উঠলো , হুহুকরে কেদেঁ উঠলো । ণির্মা বললো, আমরা কি পাগল হয়ে গেছি, তুমিও পারলে কি করে আমার সন্তান দু'টুকে রেখে আসতে ? আজ স্বপ্নে দেখলাম বড়ছেলে টা ভাত রান্না করতে যেয়ে হাত পুড়িয়ে ফেলছে ! সত্যিই যদি এমন হয় ? আমি বললাম, পাশের বাসার মাসিকে তো বলে এসেছি একটু সাহায্য করতে । ণির্মা কিছুতেই মানছিল না , না তুমিই যাবে , আজই যাবে, কিছুক্ষনপরই যাবে । আমি বললা, আগামী কাল যাই? ণির্মা রক্তচোখ করে বললো, তুমি শুধু আমার শরীরটাই চিনলে ! যা স্বপ্ন দেখলাম তা যদি সত্য হয় কোনদিন ক্ষমা করবো না তোমায় মনে রেখো । ণির্মার এমন কথা শুনার পর , পাশে রাখা ফুলপেন্টটা পড়ে নিলাম । চিরুনি দিয়ে একটু চুল আচড়িয়েই বের হলাম , ণির্মা হাতমোট করে কিছু টাকা দিয়ে বললো, ওদের জন্য ফল নিয়ে যেয়ো । তুমি আর এসো না এর মধ্য , স্কুলে কথা বলছি দেখি সামনের মাসে চারদিনের ছুটি নিয়ে নিজেই যবো । আমি বের হয়ে গেলাম, কোন কথা আর বললাম না । রেলট্রেনে ফেরার পথে ভাবছিলাম যদি স্থায়ী কিছু পেয়েযেতাম ভালো হতো , সত্যিই ণির্মাকে ছেড়ে আসতে কষ্ট হচ্ছে । জানি আমাদের সন্তানগুলোর কিছু হয়নি, যেয়ে দেখবো আমার অনুপস্থিতে ওরা ভালোই আছে , ইচ্ছেমত খেলতে পাচ্ছে , স্কুল ফাকিঁ দিতে পাচ্ছে । কিন্তু একদিন ণির্মার স্পর্শ ছাড়া যে আমি পাগল হয়ে যাই ; কিভাবে বাচঁবো আমার সাধারণ জীবনে । শুধু যৌনর্তার ঐ মুহূর্তছাড়া যে আমাদের জীবনে আর প্রয়াস নেই , বাকি সবখানেই তো অর্থ, আর মোহ । জীবনটা আরো যদি সুন্দর হতো । যদি কোনদিন ব্যর্থতা ও অনন্ধকার না থাকতো । ণির্মাকে যদি লক্ষী স্ত্রীর মত যদি রাখতে পারতুম । এই সব মনে করতে করতেই ঝিমিয়ে গেলুম, ঘুমিয়ে গেলুম । রেলট্রেন আকাশমনী ষ্ট্রেশনে এসে থামলো , তখন বেলা পড়ে এলো , কত কত মানুষ উঠলো আবার নেমে গেল । একটা ছোট গরীব মেয়ে এসে বসলো , বার বার এদিক -ওদিক তাকাচ্ছিলো , ওর মুখটা ছোট্টবেলার আমার ছোট্টবোনের মত । অনেকক্ষন তাকিয়ে রইলেম ওর মুখের দিকে । ওর কয়েকবার আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিল । পরের ষ্টেশনে ও নেমে গেল । এর পর ষ্ট্রেশনে আমার গন্তব্য , বার বার মন চাচ্ছিলো পরবর্তি ট্রেন ধরে ণির্মার কাছে ফিরে যাই , ওকে যেয়ে মিথ্যা বলি হ্যা সন্তানদের দেখে আসছি ওরা ভালোই আছে, নিয়মিত স্কুলে যায় , ক্লাস পরীক্ষায় ভালো করছে ওরা ইত্যাদি ইত্যাদি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×