নির্মলা : আর কতক্ষন কম্পিউটারে ঘুতুবে স্বামী ? চলে আসো না বিছানায় ? আজ ভালো করে মশারী পেতেছি ,গত রাত্রির মত আর বিরক্ত হবে না ।
-নির্মলা তুমি ঘুমিয়ে পড়ো , আমি পর আসচ্ছি ।
নির্মালা : না , তুমি এখন আসো । ঘুমিয়ে পড়লে মাঝরাত্রিরে ভুতের মত শরীর চেপে বস বিরক্ত লাগে তখন । যা কারার এখন করে নাও না ।
-কেন বুঝছো না নির্মলা অনেক কাজ বাকি আছে ।
নির্মলা: স্ত্রীর মন বুঝার মত হৃদয় তোমার নেই ।
-কেন থাকবে না নির্মলা ?
নির্মলা: তাহলে এত বলার পরও না করতে পারতে না ।
-আমি চুপ করে আছি ।
নির্মলা: কথা বলছো না যে ?
-নির্মলা আমাদের গ্রামীণ জীবনের গল্প শুনবে ?
নির্মলা: গল্প করে কাজের ক্ষতি হবে না ?
-না, সেতো প্রতিদিনি তোমাকে শুনাই ।
নির্মলা: বল ।
-আমাদের পাড়াতে রহিম শেখ বলে এক ছেলে ছিল , ওর বাবা অল্পবয়সে ওকে রেখে মারা যায় । ওদের অনেক জায়গা জমি ছিল , ওর বাবা মারা যাবার পর ওর চাচারা অনেক জমি ছিনিয়ে নিল । রহিমের সাথে স্কুলে ছোটবেলায় আমি স্কুলে পড়েছিলাম । পর ও আর ওর মা বাকি জমি বিক্রি করে একেবারে চলে যায় । ওদের দারুন এক বাড়িছিল জানো, পুকুর ঘাটে কত পাখির সমাহার । ওদের বাড়ির গাছ থেকে কত গোল বড়ই পেড়ে খেতাম । আমরা তখন পাড়াতে বাজিঁ ধরে লাটিম খেলতাম , ও চলে যা্ওয়ার পর অনেক খেলাই উঠে গেল । ওতো খেলার পোকাঁ ছিল, স্কুল তেমন করতো না সারাদিন খেলতো আর খেলতো । গত কয়েকদিন ধরে ওকে খুব মনে পড়ছে জানো । কেমন আছে ওরা জানি না । একবার আমাদের শিউলীগাছ থেকে শিউলীফুল পাড়তে গিয়ে দাতঁ ভেঙ্গে গেছিলো , সেই ছোট্ট বেলায় আমি এক মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম ওই মেয়ের সাথে লাইন করে দেয়ার জন্য ওর সাহায্য নিয়েছিলাম । মেয়েটা খুব কালো ছিল, শুধু চোখ দুটো দেখা যেত । ও আমাকে আর ঐ মেয়েকে ডেটের ব্যবস্থা করে দিছিলো , মেয়েটা খুব বোকা ছিল । ওকে একটা কিস করেছিলাম পর ঐ মেয়ে সারা পাড়া বলে বেড়িয়েছিল যে আমি ওকে কিস করেছি । কি যে কলঙ্ক হয়েছিল তখন জানো । পর এটা নিয়ে নালিশ হল , আমাকে কান ধরে ১০বার উঠ বস করানো হল ! বাবা কসিয়ে এক থাপড়া মেরেছিল পর আর যোগাযোগ হয়নি ।
নির্মলা: কেন যোগাযোগ করনি মেয়েটা কালো বলে ?
-নাগো, ভয়ে । কেমন দেখনা সব কিছু বলে দেয় ।
নির্মলা: হলেও তুমি করতে না জানি , তুমি তো আর্কষনীয় খোজঁ সব সময় ।
-এমন বলছো কেন নির্মলা ?
নির্মলা: শুনেছিতো , নিজে বিয়ে করার জন্য তিন বছর নাকি মেয়েই দেখেছো পর আমাকে বিয়ে করলে । আমার রুপ দেখেই বিয়ে করেছো নিশ্চয় ? মিথ্যা বলবে না বল ?
-আমি বিয়ে না করলে তো তোমাকে অন্য কেউ বিয়ে করতো তাই না । এমন প্রশ্ন করো কেন ?
নির্মলা: জীবনের অনেক কথাই তো ডাইরীতে লিখে রেখেছো । এত এত ডাইরী লিখার ধৈর্য্য তোমার থাকে ?
-পড়েছো সেই সব ?পড়ো না , নিজের অনেক ব্যক্তিগত বিষয় লিখিছি ।
নির্মলা: পড়েছি । হেসেছি । কি ক করতে তখন । তখন তো আর তুমি আমার স্বামী ছিলে না তাই ঐসবে অভিয়োগ নেই । এখন যদি দেখি কোন লিখাতে নারীর সাথে খাতির ঐ ডাইরী পুড়ে খাব আমি ।
-হাহাহহাহহা ! আর ডাইরীর লিখককে ।
নির্মলা: তাহাকে যে কি করবো !!
-কি করবে ?
নির্মলা: তার উত্তরসূরীকে সব বলে দিব !
-এ কাজ করো না নির্মলা ।
নির্মলা: তোমার ঐ বন্ধু তোমাকে নিয়ে একবার মাগী পাড়ায় গেছিল ! এক মাগী তোমাকে ধরে কিল দিয়ে বলেছিল, এই পিচ্ছি এই ছোট্ট বয়সে মাগী দেখতে এলি ! তারপর তুমি দৌড়ে চলে এলে । হাহাহহাহাহাহ
-হাহাহাহহা
নির্মলা: আচ্ছা সত্যি করে বলবে মানুষ, এরপর আর কখনো মাগী পাড়ার যাওনি তো ! বাজারে মেয়েদের শরীরে কত অসুক থাকে তো ।
-না নির্মলা যাইনি ।
নির্মলা: বিশ্বাস করবো কি করে মানুষ । তুমি তো পুরুষ , কত জায়গায় যাও কত ধরনের প্রলোভন তোমাদের কাছে আসে ।
-আমি ওমন না ।
নির্মলা: জানি আমি ।
-কি জানো ।
নির্মলা : তুমি ওমন না ।
-হুম । আসছি নির্মলা । একটু ওয়াসরুম থেকে আসছি । তোমাকে জরিয়ে ঘুমুবো এখন ।
নির্মলা: প্লিজ স্বামী একটু সেফ করে এসো , কতদিন জঙ্গল হয়ে আছে ।
-হাহাহহা
নির্মলা: সত্যিই বলছি ।
-জঙ্গলার মধ্যই প্রকৃতি ।
-
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২৭