আজ সন্ধের আগেই আপিস থেকে ফিরে বাসায় এসে সন্ধে ঘুম দিলুম । সন্ধের পর পর নন্দিতা বাসায় এলো , আমাকে দেখে বললো : বাবা আজ কেমন নিয়ম হলো গো ? বাসায় যে তুমি ? আপিস শেষে আড্ডা দিতে যাওনি ?
আমি: না ,যাইনি ।
নন্দিতা: কি হয়েছে তোমার ?
আমি: কিছু না ।
নন্দিতা: নাতো, মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে ।
আমি: আচ্ছা নন্দিতা , যদি যবটা ছেড়ে দিই বেশি কি মন্দ হবে ?
নন্দিতা: ওমা , এ কেমন কথা ! ছাড়বে কেন ? ছাড়লে খাবে কি?
আমি: এত প্রেশার আর ভালো লাগে না !
নন্দিতা: এখন ছেড়ো না , একদম বিপদে পড়ে যাবো আমরা ।
আমি: ভাবচ্ছি, ফারমিং ব্যবস্যা করবো । কেমন হবে বলতো ?
নন্দিতা: কেমন ফ্যামিং ?
আমি: রাজঁহাস,বালিহাসঁ,জলহাসঁ,মোষ,পুটিমাছের ব্যবস্যা করবো ভাবচ্ছি , আমার বন্ধু এ ব্যবস্যা করে দু' বছরে কোটিপতি বনে গেছে ।
নন্দিতা: সে যা ইচ্ছে করো , সাংসার ঠিক রাখলেই হলো কিন্ত মনে রেখো আমার মার গহনার হাত দিতে দিব না বলে দিলাম ।
আমি: ও ।
নন্দিতা: বুঝিতো আমার মার গয়নাগুলো নিতে চাচ্ছ ।
আমি: নাগো , তা চায়নি । বলছিলাম যদি তোমার জমা কিছু থাকে আমার কাছে ইনভেস্ট করতে পারো ।
নন্দিতা: না । আমি ছোট চাকুরী করে যে টাকা জমাচ্ছি তা আমার সন্তানের জন্য শুধু ।
আমি: কেন স্বামীর জন্য বা নিজের জন্য না ?
নন্দিতা: যদি ব্যবস্যায় লোকসান হয় , তখন কি করবে তুমি ? কোথায় দাড়াবো আমরা, আমার সন্তান ? তাই বলছি -তুমি যা ইচ্ছে করো আমাকে এতে জরিয়ো না ।
আমি: বিয়েতে আমার বাবা যে গহনা তোমাকে দিয়েছিল, তাতো দিতে পারো ? পারো না ?
নন্দিতা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো, বেশ এখনি নিয়ে নাও এই বলে নন্দিতা আলমারির তালাখুলে বের করে দিয়ে ফের বললো, আজ থেকে তোমার ঋণমুক্ত হলুম ! মনে মনে এই ভাবছিলাম এটাই চাইবে তুমি ,তাই হলো ।
আমি: এমন ভাবে বলছো যেন নিজ সন্তানকে অন্যজনের কাছে বন্ধক দিচ্ছো ! এক সাথে থাকতে গেলে তো পারস্পারিক সহায়তা একটু লাগে , এটাই না হয় মানুষ হলাম কেন ?
নন্দিতা: দিলাম তো , তো আর কথা কেন ?
আমি: না কিছু লাগবে না , নিয়ে যাও এটা । যদি পারি এমনিতেই করবো । শুধু বলছি এ বাসাটা ছেড়ে দিতে হবে , এটা টাকা দিয়ে বাসায় থাকতে পারবো না । আগামী মাস থেকে নুতন বাসা দেখছি, একটু ভেতরে থাকতে হবে ।
নন্দিতা: বেশি ভেতর থাকতে পারবো না ।
আমি: তোমার কোথায় কি সব হবে নন্দিতা ? যা যাও । আমি যেটা বলছি সেটাই ফাইনাল টাকা সেফ করতে হবে ।
নন্দিতা একটু ক্ষোপ নিয়ে বললো , যা ইচ্ছে হয় করো এই বলে উঠে গেল ।
ঘন্টা দুয়েক পর খাবার খেয়ে ১০টার দিকে বিছানায় গেলাম । শরীর ক্লান্ত লাগছিল , নন্দিতা সন্তানদের কিছুক্ষন পড়া দেখিয়ে বিছানায় এলো । নন্দিতা বিছানায় ঢুকলেই ওকে জরিয়ে ধরি, নন্দিতা বার বার হাত দিয়ে নিজেকে ছুটিয়ে নিতে চেস্টা করে । আমি নিচু স্বরে বললাম, কখনো ছুটাতে চেস্টা কারে পেড়েছো ? বার বার ব্যর্থ চেস্টা করো কেন ? নন্দিতা বললো, এখন না প্লিজ । সন্তানরা ও রুমে পড়ছে , যদি কোন রকম টের পেয়ে যায় ! আমি নন্দিতাকে মজা করে বললাম , টের পাগগে , টের পেলেই বুঝতে পারবে ওরা কিভাবে পৃথিবীতে এলো । নন্দিতা নিচু স্বরে বললো, দুর বাজি বেটা ! এসব কথা বাবা হয়ে বলে ! আমি বললাম, তোমাকে বললাম তো ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৫