আমি জানিনা নিচের ঘটনাটা সত্য কিনা। ঠিক হুব হুব না হলেও অনেকটা এমন একটি সত্য ঘটনা আমি জানি। তাই মনে হলো এই লেখাটা শেয়ার করতে..........................
বাসে উঠে দেখি লোকজন ভরে গেছে,পিছনের দিকে ৫৫ উর্ধো এক লোকের সাথে বসে পড়লাম। লোকটা খুবই বিনয়ী,বসা মাত্র আমাকে বলে "তুমি চাইলে জানালার কাছে বসতে পারো।" আমি বললাম-না আঙ্কেল,অসুবিধা নেই। থ্যাংকস।' কিছুদুর যেতেই বাস থেমে গেলো,যাত্রাবাড়ির চিরপরিচিত
জ্যাম! হঠাৎ পাশের লোকটা আমাকে বলল,"মা,তোমার কাছে পানি আছে?মুখে দিবো। সরি আঙ্কেল,আমার কাছে পানি নেই। লোকটা আকাশের দিকে তাকালো,একটুপর নিজের খেয়ালেই আমাকে বলা স্টার্ট করলো--"তোমার মতো আমার একটা মেয়ে আছে,হলে থাকে। আমি থাকি লালবাগ,ওখানে আমার একটা মুদি'র দোকান আছে।মেয়েটার মা আমি প্রতিদিনই নেই,বাড়িতে (গ্রামে) আমার ছোটছেলেটা থাকে তার চাচার সাথে। আমার মেয়ের সাথে কথা বলি,মেয়ে আমাকে জানায় সে ক্লাসে আছে অথবা লাইব্রেরীতে আছে নইলে পড়ছে। আমি খুব খুশী হই,এতো খুশী হই যে চোখে পানি চলে আসে। মেয়েটাকে আমি অনেক পড়ালেখা করাতে চাই,যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়েই। মেয়ে'র কোন আশাই আমি অপূর্ন রাখিনি,যা চেয়েছে তাই দেবার চেষ্টা করেছি।গতকাল বিকেল থেকে মেয়েটার ফোন বন্ধ,তাই আমি হলের এক টিচার'কে ফোন দেই,সেই টিচার খোজখবর নিয়ে দেখে আমার মেয়ে ৫ দিন হলো হলে নেই,সে নাকি বাড়ি যাবার জন্য ছুটি নিয়েছে..।কথাটা শোনামাত্র আমি টিচারকে বললাম,আমার ভুল হয়েছে স্যার,আমি বাড়িতে ফোন না করেই আমাকে ফোন করেছি,আমি সত্যি দুঃখিত।" তারপর লোকটি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, "আমার মেয়ে বাড়িতে যায়নি,কালও ওর সাথে আমার কথা হয়েছে,সে নাকি ক্লাসে ছিলো। গতরাতে আমি মোটেও ঘুমাতে পরিনি,অনেক খোজখবর নেবার পর মেয়ের বান্ধবী'র কাছে জানতে পারলাম আমার মেয়েটা নাকি এখন কক্স-বাজার আছে।এক ছেলের সাথে ৭ দিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছে..তোমাকে কথাগুলো কেন বলছি জানি না মা,তুমি কি বিরক্ত হয়েছো?" আমি মাথা নেড়ে 'না' বললাম। --মাথাটা কাজ করছে না,কাউকে কিছু জানাতেও পারছি না,মেয়ের মান-সন্মান চলে যাবে।তাই তোমাকে বলে একটু হালকা হলাম,কিছু মনে কোরোনা..। এই কথা বলে লোকটা আবার আকাশের দিকে তাকালো। আমি স্পস্ট দেখলাম লোকটা কাদঁছে,তার শরীর কেপে কেপে উঠছে! আমি মলিন চোখে এক বাবা'র কান্না দেখলাম,মেয়ে'র সন্মান চলে যাবার ভয়ে একজোড়া স্বপ্নমাখা চোখের কান্না দেখলাম।বাবা'র বুকের চিৎকার আর আর্তনাদ যেনো শুনতে পেলাম আমি,আর সাথে সাথে আম্মু'র মুখটা ভেসে উঠলো..আমি জীবনের অসংখ্যবারের মতো আবারও মনে মনে আম্মু'কে প্রমিজ করলাম।
[ সংগৃহীত ]