১. হাসপাতালে যে অপরিচিত লোকটি আপনার
ঘনিষ্ট হিসাবে ডাক্তারকে পরিচয় দিবে, সে লোকটি
একজন দালাল। শুরুতেই মার্ক করে রাখুন। এড়িয়ে চলুন।
তাতে টাকা, সম্মান ও রোগী তিনটাই বাঁচবে।
২. জরুরী বিভাগ থেকে ভর্তির পর কাগজটি নিজ হাতে
বহন করে নিজের ওয়ার্ডে যাবার অভ্যাস করুন। অথবা
বহনকারী লোকটি আপনাকে বড়সড় খরচ করিয়ে শুইয়ে
দিতে পারে।
৩
ডিউটি ডাক্তাররা (ইন্টার্ন বা ইউনিটের সিএ,
রেজিস্টার) উচ্চশিক্ষিত ও হাইলি কোয়ালিফাইড।
সেখানে গিয়ে নিজের ক্ষমতা, শিক্ষাগতযোগ্যাতা,
স্মার্টনেসের প্রমান দিতে যাবেন না।
আপনি যতটুকু ভদ্রলোক হবেন, তারা তার চাইতে বেশি
ভদ্রলোকের মত আপনাকে চিকিৎসা দিবে।
৫. হাসপাতালের সব সিরিয়াস রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়
ইন্টার্ন/সিএ/রেজিস্টারের হাত দিয়েই। তারা জানে
কিভাবে রোগীকে দ্রুত সময়ে প্রাণরক্ষাকারী চিকিৎসা
দেওয়া হয়। বড় স্যার কবে দেখবে, কেন এখনো ডাক্তার
আসছে না বলে বোকামীর পরিচয় দিবেন না।
৬. শুক্রবার হাসপাতালের প্রফেসর রাউন্ড বন্ধ থাকে। এসময়
ডাক্তার নাই, ডাক্তার দেখে নাই বলে কাউকে বিব্রত
করবেন না।
৭. হাসপাতাল থেকে সাপ্লাইকৃত ঔষুধ ডাক্তাররা দিবে
না। সংশ্লিষ্ট ঔষুধের জন্য নার্স বা ইনচার্জকে
ভদ্রভাষায় বলুন।
৮. রোগীর পাশ থেকে আপনার সমস্ত আত্মীয়স্বজনকে
সরিয়ে ফেলুন। তারা রোগীর কোন কল্যানে আসবে না।
তাদের জন্য চিকিৎসা দেরি হয়, এমনকি রোগী মারা
যেতে পারে। যত মানুষ কম তত রোগীর সুস্থ্য হবার
সম্ভাবনা বেশি।
৯. সরকারী হাসপাতালে বেড এর জন্য ঘ্যানঘ্যান
করবেন না। এখানে কেউ বেড দখল করে শুয়ে
থাকেনা। সবাই অসুস্থ্য রোগী। সেখানে মুচি ডোম শুয়ে
থাকলেও তাকে নামিয়ে আপনাকে উঠানো যাবেনা।
বেড না থাকলে একজন ডাক্তারের মা নিজে অসুস্থ্য হয়ে
আসলেও তাকে মেঝেতেই থাকতে হবে। সকল রোগী
সমান। বেড ও মেঝের সবাইকে সমান চিকিৎসা দেওয়া
হয়।
১০. কোন রাজনৈতিক পরিচয় দেবার চেষ্টা করবেন না।
মনে রাখবেন, ঝামেলা এড়ানোর জন্য সকল ডাক্তার ঐ
রোগীর কাছে যেতে অনীহা প্রকাশ করে। দিনশেষে
ক্ষতিটা আপনারই।
১১. রোগী খাবে কি... বলে বারবার বিরক্ত করবেন না।
যদি স্যালাইন চলে তাহলে ভেবে নিন তাকে আলাদা
করে খাওয়াতে হবেনা। খাবার বন্ধ রাখা হয় রোগীর
ভালোর জন্যই। কিছুক্ষন না খেলে আপনার রোগী মারা
যাবেনা।
১২. ক্যানুলা খুলে গেছে, স্যালাইন অফ কেন, ঔষুধ কখন
খাবে, কিভাবে খাবে, ঔষুধটা চেক করে দিন তো.... এই
প্রশ্নগুলো নার্সকে ভদ্রভাষায় জিজ্ঞাসা করুন।
সাধারণত এগুলো তাদের দায়িত্ব। তারা শিক্ষিত ও
অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তাদের সম্মান করুন।এইগুলা ডাক্তারের কাজ নয়।
১৩. যেকোন পুরুষ ডাক্তারকে ডক্টর বা'স্যার' ও
মহিলা ডাক্তারকে ডক্টর বা'ম্যাম/ম্যাডাম' বলে সম্বোধন করুন।
একইভাবে মহিলা ও পুরুষ নার্সকে সিস্টার-ব্রাদার বলুন।
আয়া বা কর্মচারীদের মামা ও খালা হিসাবে সম্বোধন
করবেন। এগুলো আপনাকে ছোট করবে না বরং সম্মানীয়
বানাবে। ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরাও আপনাকে
সাহায্য করবে।
১৪.
থুথু ফেলার জায়গা না থাকলে মাঝেমাঝে গিলে
খাবার অভ্যাস করুন। আপনি হাসপাতাল যতটুকু নোংরা
করবেন, বাকী সবাই আপনার ফেলানো থুথু দেখে সেখানে
থুথু ফেলে ভাসিয়েয়ে দিবে। অপরাধের শুরুটা কিন্তু আপনিই
করলেন।
১৭. হাসপাতালের ডাক্তারদের উপর বিশ্বাস
রাখুন। আপনি শুধুই লাভবান হবেন। কারণ সেবার
বিনিমিয়ে ডাক্তাররা এক পয়সাও পকেটে ঢুকাবে না।
১৮. রোগী মারা গেলে ডাক্তারকে গালিগালাজ না
করে স্বস্ব ধর্মের সৃষ্টিকর্তার কাছে অভিযোগ করুন।
ডাক্তার একজন মানুষ। তিনি চেষ্টা করেছেন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৫০