somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইমাম মাহদী (আঃ) সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের দলীল

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাহদী (আঃ) সম্পর্কে কোরআনের আয়াত

নাহাজুল বালাগায় হযরত আলী (আঃ)-এর প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা- ২০৫ নম্বর এ আছে যে তিনি বলেন ঃ
“পৃথিবী আমাদের দিকে বাঁকা হয়ে আসবে অবাধ্য হওয়ার পর, যেভাবে কামড় দেয় এমন মাদী উট তার বাচ্চার দিকে বাঁকা হয়।”
এটি একটি রূপক মন্তব্য। নবী (সাঃ)-এর সময় বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক অভিভাবকত্ব দু’টোই ছিলো তার ঘরে। একইভাবে হযরত মাহদী (আঃ)-এর পুনরাগমনে সরকার ও আধ্যাত্মিক অভিভাবকত্ব দু’টোই নেতার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

এরপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন ঃ
            
“এবং আমরা চাইলাম তাদের ওপর নেয়ামত দান করতে যাদেরকে পৃথিবীতে দূর্বল ভাবা হতো এবং তাদেরকে ইমাম বানাতে এবং তাদেরকে উত্তরাধিকারী বানাতে।”
(সূরা ক্বাসাসঃ ০৫)

ইবনে আবিল হাদীদ মোতাযালী তার নাহজুল বালাগার ব্যাখ্যায় বলেন (পৃষ্ঠা ৩২৯, খণ্ড-৪) ঃ “আমাদের সাথীরা বলেন যে এ আয়াতে আল্লাহ ইমাম ও নেতার কাছে ওয়াদা করেছেন যে সে পৃথিবীর দখল পাবে এবং সব জাতির উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করবে।”

আবু আব্দুল্লাহ নাইম ইবনে হেমাদ ‘ইকদুদ দুরার’ বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে বলেছেন ঃ “ইমাম আবু ইসহাক্ব সালবী ঐশী ح م ع س ق বক্তব্যের তাফসীরে ইবনে আব্বাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন ঃ ح ইঙ্গিত করে কুরাইশ ও দাসদের মধ্যে যুদ্ধের যেখানে কুরাইশরা বিজয়ী হবে; م ইঙ্গিত করে বনি উমাইয়্যাদের রাজ্য ও সরকারের; ع হচ্ছে বনি আব্বাসের মর্যাদা ও সম্মান; س ইঙ্গিত করে মাহদী (আঃ) এর যুগ। ق ইঙ্গিত করে ঈসার নাম ও মাহদী (আ) এর আত্মপ্রকাশের সময়। লেখক বলেন س হচ্ছে মাহদী (আঃ) এর উজ্জ্বলতা এবং قঈসা ইবনে মরিয়মের ক্ষমতা।”

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক্বের ১৬ পৃষ্ঠায় ব্যাখ্যা করেন এ কথার এভাবে ঃ
  
“এবং সে ক্বিয়ামতের নিদর্শন”
(সূরা যুখরুফঃ ৬১)
“তাফসীরকারকদের মধ্যে মাক্বাতেল ইবনে সুলাইমান ও তার অনুসারীগণ বলেছেন যে এ আয়াত আল মাহদী (আঃ)- এর পক্ষে নাযিল হয়েছে। ‘ইসাফুর রাগেবীনের লেখক ১৫৬ তম পৃষ্ঠায় তাই লিখেছেন।”

‘নুরুল আবসার’- এর লেখক আবু আব্দুল্লাহ গাঞ্জি থেকে ২২৮ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেনঃ আল্লাহ বলেন ঃ
       
“যেন তা সব ধর্মের উপরে বিজয় লাভ করে, মুশরিকরা তা যতই অপছন্দ করুক।”
(সূরা আস সাফ্ফঃ ০৯)

সাইয়্যেদ ইবনে জুবায়ের বলেন ঃ “তা মাহদীর কথা বলে যিনি ফাতেমা (আঃ)- এর বংশধর, যিনি এ আয়াতের আদেশ বলে সব ধর্মের উপর বিজয় লাভ করবেন।”

‘ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা’-র ৪৪৩ পৃষ্ঠায় মানাক্বিবে খাওয়ারাযমী থেকে এবং তা জাবীর ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে এক দীর্ঘ ঘটনা বর্ণনা করেন, সেখানে একজন ইহুদী নবী (সাঃ)- এর কাছে আসে এবং তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে যার ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করে। একটি প্রশ্ন সেই ইসলাম গ্রহণকারী জিজ্ঞেস করেছিলো নবী (সাঃ)-এর উত্তরাধীকারী সম্পর্কে এবং নবী (সাঃ) উত্তরে বলেছিলেন তারা সংখ্যায় বারোজন। তিনি নাম নিয়ে প্রত্যেককে গোনেন ইমাম হাসান আল আসকারী পর্যন্ত। এরপর তিনি বলেন ঃ “তার পর আসবে তার ছেলে মুহাম্মাদ যে পরিচিত হবে মাহদী, ক্বায়েম ও হুজ্জাত নামে। এরপর সে কিছু সময়ের জন্য লোকচক্ষুর আড়ালে যাবে এবং আবার উপস্থিত হবে এবং যখন সে তা করবে সে পৃথিবীকে ইনসাফ ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে। কারণ ততদিনে পৃথিবী নিষ্ঠুরতায় ও নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে যাবে। রহমতপ্রাপ্ত তারা যারা তার অন্তরালে যাওয়ার সময়টিতে ধৈর্য ধরবে এবং রহমতপ্রাপ্ত তারা যারা তাঁর প্রতি ভালোবাসায় দৃঢ় থাকবে। তারাই হলো ওরা যাদেরকে আল্লাহ তাঁর কিতাবে প্রশংসা করেছেন এভাবে ঃ
       

“যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে (যেমন মাহদীর অর্ন্তধান) এবং নামাজ ক্বায়েম করে এবং আমরা যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে ব্যায় করে।”
(সূরা বাক্বারাঃ ০৩)

আল্লাহ আরো বলেন ঃ
      ক্স     

“তারাই হলো আল্লাহর দল; জেনো যে আল্লাহর দলই সফলতা লাভ করবে”
(সূরা মুজাদিলাঃ ২২)
(হাদীসটি এখানে শেষ।)

উপরোক্ত বইয়ের ৪৪৮ পৃষ্ঠায় তিনি ‘ফারায়েদুস সিমতাইন’ বই থেকে একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন যা হাসান ইবনে খালিদ বর্ণনা করেছেন আবু হাসান আলী ইবনে মুসা রেযা (আঃ) থেকে মাহদী (আঃ) সম্পর্কে। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন তিনি হবেন তার বংশ থেকে চতুর্থ এবং যখন তিনি পুনরায় আগমন করবেন পৃথিবী ঐশী আলোতে ঢেকে যাবে। এরপর ইমাম বলতে লাগলেন ঃ সে-ই ঐ ব্যক্তি যার পুনরাগমন আকাশ থেকে এক আহবানকারীর আহবানের সময়ের সাথে মিলে যাবে, তা এমন হবে যে পৃথিবীর সব অধিবাসী তার এ চীৎকার শুনবে- “জেনো যে আল্লাহর হুজ্জাত (প্রমাণ) আল্লাহর ঘরের কাছে আত্মপ্রকাশ করেছে, তাই তাকে অনুসরণ করো। কারণ সত্য তার ভেতরে আছে এবং তার সাথে আছে।” আল্লাহর কথাও তাই বলেঃ
           

“আমরা যদি চাই, আমরা তাদের ওপর এক নিদর্শন পাঠাবো আকাশ থেকে, যেন তাদের ঘাড় এর দিকে নীচু হয়।”
(সূরা শু’আরাঃ ০৪)

নিশাবুরী তার তাফসীরে (খণ্ড-১) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ শিয়াদের কেউ কেউ বিশ্বাস করেন “অদৃশ্য” এ আয়াতে মাহদীকে (আঃ) ইঙ্গিত করে, যার প্রতীক্ষা করা হচ্ছে। যার সম্পর্কে আল্লাহ তাঁর কিতাবে এরকম ওয়াদা করেছেন ঃ
       ক্স  
“আল্লাহ তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে এবং ভালো কাজ করে তাদেরকে ওয়াদা করেছেন যে তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীর শাসক বানাবেন।”
(সূরা নূরঃ ৫৫)

এছাড়া, তার সম্পর্কে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ সেদিনকে এত লম্বা করে দেবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না এক ব্যক্তি আমার বংশধর থেকে আসবে যে আমার নামে নাম বহন করবে এবং পৃথিবীকে ন্যায়বিচার দিয়ে পূর্ণ করে দিবে ঠিক বিপরীতভাবে যেভাবে তা অবিচার ও নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো।”

নিশাবুরী আরো বলেন ঃ
“আহলে সূন্নাতের মত অনুযায়ী উপরোক্ত আয়াত ‘খোলাফায়ে রাশেদীনের’ ইমামত সম্পর্কে ইঙ্গিত করে। কারণ শব্দটি পবিত্র আয়াতে ‘অংশ’ ইঙ্গিত করে এবং যখন সম্বোধন করা হবে এ ‘অংশ’-র জন্য উপস্থিত থাকা জরুরী । এছাড়া এটি সবাই জানে যে চার খলিফা (আবু বকর, উমর, উসমান এবং আলী) বিশ্বাসী ও নৈতিকগুণ সম্পন্ন ছিলেন এবং তারা তখন উপস্থিত ছিলেন। পরিণতিতে খিলাফত ও বিজয় তাদের জন্য নিশ্চিত ছিলো। তাই এটি বলা প্রয়োজন যে এ আয়াত তাদেরকেই ইঙ্গিত করে।”

এরপর তিনি বলেন ঃ
“একদল তাদের (উপরোক্ত অভিমতের) বিরুদ্ধে গিয়েছেন এ যুক্তি দিয়ে যে من ‘শব্দটি’ প্রকাশ করা অর্থে ধরা অনুমোদন যোগ্য নয়। তারা বলেন পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হওয়া অর্থ এর দখল ও এর ওপরে অধিপত্য যেমন তা হয়েছিলো বনি ইসরাইলীদের ক্ষেত্রে।”
তিনি আরো বলেন ঃ “চলুন আমরা من শব্দটির অর্থ “অংশ”-ই গ্রহণ করি, কিন্তু কিসের ভিত্তিতে তা অনুমোদনযোগ্য হবে না যদি ‘অংশ’ বলতে আলীর খেলাফত বোঝায় এবং ধরুন من এখানে বহুবচনে ধরা হয়েছে শুধু আলীর সম্মান ও বিরাট মর্যাদা দেখানোর জন্য অথবা হযরতের প্রতি ও তার পরে তার এগারোজন সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করার জন্য।”

মাহদী (আঃ) সম্পর্কে নবীর (সাঃ) হাদীস

আবু দাউদ তার ‘সহীহ’-তে (পৃষ্ঠা ৮৭, চতুর্থ খণ্ডে), আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন নবী (সাঃ) বলেছেনঃ

“যদি পৃথিবীর জীবন আর একদিনও অবশিষ্ট না থাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ দিনটিকে এত দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি এক ব্যক্তিকে আমার বংশ থেকে নিয়োগ দিবেন।”

এরপর তিনি একইভাবে বলেন যে হাদীসে সুফিয়ানে এসেছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“পৃথিবীর জীবন শেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না একজন আরব আমার বংশ থেকে পৃথিবী শাসন করবে।”

ঐ একই বইয়ের একই পৃষ্ঠায় আলী (আঃ) থেকে একটি হাদীস এসেছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“যদি পৃথিবীর জীবন আর একদিনও অবশিষ্ট না থাকে আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিবেন।”

তিরমিযী তার সহীহতে, (খণ্ড-২, পৃষ্ঠা- ২৭), আব্দুল্লাহ থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“পৃথিবীর জীবন শেষ হবে না যতক্ষণ না একজন আরব আমার বংশ থেকে আসবে এবং শাসন করবে।”

তিরমিযী বলেন ঃ এ হাদীসটি حسن (গ্রহণযোগ্য) এবং صحيح (সঠিক) এবং একই জিনিস বর্ণিত হয়েছে আলী, আবু সাইয়ীদ, উম্মে সালামা এবং আবু হুরায়রা থেকে।

একই বইতে একই পৃষ্ঠায় একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা থেকে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ সেদিনকে এত দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না এক ব্যক্তি আমার বংশ থেকে আসবে ও শাসন করবে।”
এরপর তিনি বলেন ঃ এ হাদীসটি حسن (গ্রহণযোগ্য) এবং صحيح (সঠিক)।

ইবনে হাজার তার ‘সাওয়ায়েক্ব’-এ, (পৃষ্ঠা নং ৯৭) বলেন ঃ আবু আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী এবং ইবনে মাজাহ নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই আল্লাহ সেদিন আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিবেন।”
ইসাফুর রাগেবীনের ১৪৭ নং পৃষ্ঠায় এ হাদীসটি বর্ণনা করা হয়েছে।

ইবনে হাজার পূর্বে উল্লেখিত বইয়ের ৯৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন ঃ আবু দাউদ এবং তিরমিযী নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে ঃ
“যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সেদিনটিকে দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করেন।”

ইসাফুর রাগেবীন এ হাদীস বর্ণনা করেছে ১৪৮ পৃষ্ঠায়।

ইবনে হাজার পূর্বে উল্লেখিত বইয়ের ৯৭ পৃষ্ঠায় বলেন ঃ আবু দাউদ এবং তিরমিযী নবী (সাঃ) থেকে এরকম বর্ণনা করেছেন ঃ
“এ পৃথিবীর জীবন শেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তি আসবে ও শাসন করবে।”
ইসাফুর রাগেবীনও একই হাদীস ১৪৮ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছে।
ইবনে হাজার ‘সাওয়ায়েক্ব’ এ (পৃষ্ঠা-৯৭) লিখেছেন ঃ আবু দাউদ এবং তিরমিযী নবী (সাঃ) থেকে এরকম বর্ণনা করেছেন ঃ

“যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে আল্লাহ সেদিনকে এত দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেন।”
ইসাফুর রাগেবীনও একই হাদীস ১৪৮ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছে।

নুরুল আবছারে, (পৃষ্ঠা-২৯৯) আলী (আঃ) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই (সেদিন) আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তির আগমন ঘটাবেন।”
এরপর লেখক বলেন ঃ ‘এ হাদীসটি আবু দাউদ কর্তৃক তার ‘সুনানে’ বর্ণিত হয়েছে।’

একই বইতে (পৃষ্ঠা ২৩১) আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তি আসে এবং শাসন করে।”

ইসাফুর রাগেবীনের ১৫১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে আহমাদ ও মাওয়ারদী নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন ঃ “সুসংবাদ তোমাদের (সবাইকে) মাহদীর বিষয়ে।” একই হাদীস এসেছে নুরুল আবসারে ১৫১ পৃষ্ঠায়।

নুরুল আবসারের লেখক ২৩১ পৃষ্ঠায় লেখেন ঃ আহমাদ বর্ণনা করেছেন আবু সাইদ খুদরী থেকে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ “আমি তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি মাহদী সম্পর্কে।”

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দাতে (পৃষ্ঠা ৪৩২) ক্বাতাদা থেকে বর্ণিত হয়েছে ঃ “আমি সাইদ ইবনে মাসীবকে জিজ্ঞেস করলাম ঃ “মাহদী সম্পর্কে কী কোন সত্যতা আছে?” সে বললো ঃ হ্যা, সে সত্য এবং সে ফাতেমার বংশ থেকে।”

একই বইতে পূর্বে উল্লেখিত পৃষ্ঠায় আলী (আঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ “যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তির আগমন ঘটাবেন।”
এরপর তিনি লেখেন ঃ “এ হাদীসটি আবু দাউদ, আহমাদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহও বর্ণনা করেছেন।”

একই বইতে, (পৃষ্ঠা ৪৩২) একটি হাদীস আহমাদ এর ‘মুসনাদ’ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“ক্বেয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না পৃথিবী নিষ্ঠুরতায় ও নিপীড়নে পূর্ণ হবে। তখন আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তি আসবে তা ইনসাফ ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিতে।”

আবার একই বইতে ৪৪০ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন ঃ মুফেক্ব ইবনে আহমাদ আখতার খাওয়ারাযম-এর খোতবা থেকে বর্ণনা করেন যিনি বর্ণনা করেন আব্দুর রহমান ইবনে আবি লাইলী থেকে, তিনি তার বাবা থেকে যিনি বলেন ঃ খাইবারের যুদ্ধে নবী (সাঃ) আলীর (আঃ) হাতে পতাকা দিলেন। তারপর আল্লাহ তার হাতে বিজয় দিলেন। পরে গাদীরে খুমে তিনি লোকদেরকে মনে করিয়ে দিলেন যে আলী সকল বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীর মাওলা (অভিভাবক) এবং আরো বলতে থাকলেন এবং এক পর্যায়ে কিছু বাক্য বললেন আলী, ফাতেমা, হাসান এবং হুসাইনের নৈতিক গুণাবলী সম্পর্কে।

এরপর তিনি বললেন ঃ “জীবরাইল আমাকে জানিয়েছে আমার বিদায়ের পর তারা অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হবে এবং এ নিপীড়ন চলতে থাকবে একটি আন্দোলন পর্যন্ত যা তাদের ‘ক্বায়েম’ শুরু করবে এবং সে সময় তাদের বিশ্বাসকে উচুঁতে উঠানো হবে, জনগণ তাদের বন্ধুত্বের দিকে ফিরবে, তাদের বিরুদ্ধে খারাপ কথা শেষ হবে। তাদের প্রতি যাদের তিক্ততা আছে তারা অপমানিত হবে এবং যারা তাদের প্রশংসা করবে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এ ধরনের ঘটনা তখন ঘটবে যখন শহরগুলো পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে এবং জনগণ দূর্বল হয়ে যাবে এবং রেহাই পাওয়ার ক্ষেত্রে অসহায় হয়ে পড়বে। তখন (ক্বায়েম) আসবে আমার বংশ থেকে এবং আল্লাহ সত্যকে প্রকাশ করবেন তার মাধ্যমে এবং মিথ্যাকে নিভিয়ে দিবেন তার তরবারীর মাধ্যমে।”

এরপর তিনি বললেন ঃ ‘হে জনতা, সুসংবাদ তোমাদের বোঝা লাঘব এবং বিরামের বিষয়ে। অবশ্যই আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং তিনি কখনো তা ভাঙ্গেন না এবং তার আদেশ কখনো খণ্ডন হয় না। তিনি সর্বসচেতন এবং সর্বদ্রষ্টা এবং আল্লাহর বিজয় নিকটবর্তী।”

একই বইতে পৃষ্ঠা ৪৪৭ এ তিনি শেইখ আবু ইসহাক ইবরাহিম ইবনে ইয়াকুব এর ‘ফারায়েদুস সিমতাইন বই থেকে যিনি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে বর্ণনা করেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন ঃ
“যে ব্যক্তি মাহদীর আগমনকে অস্বীকার করলো সে অবশ্যই অবিশ্বাস করলো যা আল্লাহ মুহাম্মাদের ওপর নাযিল করেছেন এবং যে ঈসা-র আগমনকে অস্বীকার করলো অবশ্যই সে অবিশ্বাসীতে পরিণত হলো এবং যে দাজ্জালের বিদ্রোহকে অস্বীকার করলো সে অবশ্যই অবিশ্বাসীতে পরিণত হলো।”
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×