বি.দ্রঃ বর্ডার বিষয়ক আমার কোন পোষ্ট আমার অনুমতি ব্যাতিত কেহ কোথাও প্রকাশ করবেন না। আংশিক বিকৃত/এডিট করেও কেহ কোথাও প্রকাশ করবেন না।
তৃতীয় দিনের মত আজও সকাল সকালেই আমরা পৌছে যাই আমাদের ভাইদের নিকট। একাধারে তিনদিন তারা আমাদের তাদের সাথে পেয়ে আমাদের একেবারে আপন করে নিয়েছে। আমাদের দেখে তারা অন্তত আশাবাদি হয়ে উঠে যে আমরা একদিন না একদিন দেশে ফিরতে পারব। অনেকে আবার আমাদের কে পেয়ে তাদের মনের দুঃখ গুলো শেয়ার করার তিব্র আকাঙ্খা দেখায়। যা তাদের চাহনি দেখে স্পষ্টই বুঝা যায়।
বেলা সারেএগার বারটার দিকে যেই বিল্ডিংএ দূতাবাসের লোকজন অবস্থান করছেন সেই বিল্ডিং এর শিড়িতে বেশ কিছু পুলিশি গার্ড নিয়ে মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রথম বারের মত অভাগাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে এগিয়ে আসেন। তাকে দেখে হুমরি খেয়ে লোকজনদের জড় হতে দেখা গেলো না। পাঁচ হাজার মানুষ থেকে তিন থেকে চারশ মানুষ জড় হলো তার বক্তব্য শোনার জন্য।
রাষ্ট্রদূত সকলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের কষ্ট আমরা বুঝতে পারি, তবে আমরা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি না। আমরা বাংলাদেশ সরকার আপনাদের জন্য সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
- তখন অভাগাদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠে, আমরা ভাত চাই না, পানি চাই না, টাকা পয়সা কিছুই চাই না। শুধু আমাদের দেশে পাঠানোর ব্যাবস্থা করুন। তার সাথে আরো অনেকেই একই কথা বলতে থাকে।
তখন রাষ্ট্রদূত বলেন, আপনারা হৈচৈ করবেন না, বিসৃঙ্খলা করবেন না, চুপ চাপ থাকেন, হৈচৈ করে কোন লাভ হবে না। ঐদিন চলে গেছে যে আপনারা চিৎকার করবেন, হৈচৈ করবেন, ঐদিন চলে গেছে।
তখন জনতার মধ্য থেকে একজন বলে উঠে আপনি কি আমাদের হুমকি দিচ্ছেন??
রাষ্ট্রদূত বলেন, কিসের হুমকি, কি বলছেন আপনি। তখন প্রচন্ড বিসৃঙ্খলা সৃষ্টি শুরু হয়।
তখন রাষ্ট্রদূত জনতার মধ্য থেকে যে বেশি কথা বলছিল তারদিকে হাত ঈশারা করে তার ব্যাক্তিগত লোকদের বলেন, ওর ছবি তুল, ওর ছবি তুল। তখন তার ব্যাক্তিগত লোক তাদের ছবিও তুলে। যদিও আমরা এর কোন কারণ খুজে পাই নি।
কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি ঘরে প্রবেশ করেন।
ভিডিও টি দেখলে হয়ত আপনারা বুঝতে পারবেন, আসলে কি কথা হয়েছিল ঐ মিটিং এ।
এ্যাম্বাসিডর চলে যাবার পর লোকজন অনেক হতাশ হয়ে পরেন, অনেকে আবার ভিতও হয়ে পরেন।
তারা আমাদের বলতে থাকেন, আজই প্রথম রাষ্ট্রদুত আমাদের দেখতে আসল। আর তাও এসেছে, কারণ আপনারা ২/৩ দিন যাবৎ এখানে এসেছেন, সব ভিডিও করে দেশে দেখাচ্ছেন, তাই মানুষদের দেখানোর জন্য এসেছেন।
তারা অনেকে আফসোস করে বলেন, আমরা কষ্ট করতে করতে মরতে বসেছি আর তিনি আমাদের আশার বানি না শুনিয়ে আরো হুমকি দিয়ে গেলেন। অথচ তারা আমাদের টাকার বেতন খেয়েই জিপন জাপন করছে।
----
এদিকে গত ৭ দিন আগের মৃত একব্যাক্তির লাশ গত কাল রাতে দেশে পাঠানোর কথা থাকলেও তা প্লেনের ফ্লাইট মিস হওয়াতে পাঠানো সম্ভব হয় নি। এম্বোলেন্সের ইন্জিনে সমস্যা দেখা দেয়ার কারণেই ফ্লাইট মিস হয়েছে বলে জানানো হয়।
আগামি শনিবার থেকে অতিরিক্ত ফ্লাইট ছেড়ে যাবে বলেও বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ বিমানেও ফ্লাইটের ব্যাবস্থা করে হয়েছে বলে বলা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:৩৯