মানব তৈরী ভাস্কর্য নিয়ে কেন এত মাথা ব্যাথা?
এগুলো রাখলে কি উপকারে আসবে?
না রাখলেই বা কি ক্ষতি হবে?
আর থাকলেই বা সমস্যা কি?
এই সব মানব তৈরী কোন মুর্তী মানুষের বা সমাজের কোন কাজেই আসবে না। এগুলো কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়। হাইকোর্টের সামনে এই ধরনের ভাস্কর্য রাখলে কি হাইকোর্টের ভিতরে অটোমেটিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে? যদি তাই হয় তাহলে দুনিয়ার সকল ভাস্কর্য এনে সংসদ ভবনের সামনে দাড়া করিয়ে দাও। ওরা মানুষ হোক। ওরা মানুষ হলে দেশে ন্যায় বিচার আসবে, ওরা মানুষ হলে দেশে দুর্ণীতি কমবে। ওরা মানুষ হলে দেশে চাঁদাবাজি, রাহাজানী, জুলুম নিপিরন কমবে। আর ওরা মানুষ না হলে কোন দেব দেবীর মুর্তী কেন, বরং ঐসব দেব দেবীর পিছনের কল্পিত স্বয়ং ঈশ্বর নামের ভুতকে সামনে দাড়া করে রাখলেও সমাজে ন্যায় বিচার আসবে না।
আর যদি মুর্তী থেকেও যায়, কারো যদি অতি চুল্কানিতে এটা রাখতেই চায় তাহলেই বা প্রবলেম কি?
ধর্ম চলে যাবে?
সমাজে ধর্ম আছেই বা কোথায়?
৯৯% ধার্মীকের দেশে আদর্শের মানদন্ড তো জিরোর কোঠায়। দুর্নীতি, অপশাষণ, চাঁদাবাজ, ঠেসাঠেসি, রেশারাশি, খুন, রাহাজানী, ধর্ষণ, খাদ্যে ভেজাল, চুরি, ডাকাতি, মানুষ ঠকানোতে উস্তাদ প্রত্যাকটা ধার্মিক মানুষ।
সরকারের দোষ সব জায়গায় দিয়ে লাভ নাই। সরকার সমাজের মানুষের মধ্য থেকেই হয়। সমাজের মানুষ ভাল হলে সরকার বাধ্য হয়ে ভাল হয়ে যেতো।
প্রতিদিন যতগুলো মানুষ মসজিদে ও মন্দিরে যায়, তারা সবাই আদর্শবান হলে দেশের দু্র্নীতি অন্তত ৩০ থেকে ৪০ পার্সেন্ট অটোমেটিক কমে আসতো। অথচ এর কিছুই হচ্ছে না। বিবেক বিসর্জন দিয়ে শুধু মাত্র ধর্মীয় রিতিনীতি পালনে গুরুত্ব ও তা পালনের অধিকার সংরক্ষনের আন্দোলনে নামা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? এই আন্দোলনের সফলতা কোথায়?
তবে হ্যা, আন্দোলন দরকার। এই দেশে আন্দোলন দরকার, সামাজিক আন্দোলন। আন্দোলন দরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে, আন্দোলন দরকার অপশাষণের বিরুদ্ধে, আন্দোলন দরকার ন্যায় বিচারের জন্য, আন্দোলন দরকার সকল মানুষের সমান অধিকারের জন্য।
আন্দোলন দরকার মুর্তি সরানোর জন্য নয়, আন্দোলন করতে হবে মুর্তীর পিছনের কুসংস্কার সরানোর জন্যে।