তখন আমার বয়স কত হবে।
আট কিংবা নয়।
আব্বা মারা গেছে দুইমাস হলো। দুইবোন বড় আর আমার ছোট ভাই। আমিই বলতে গেলে সংসারের সব। একদিন মা বাজার করতে দিলো। ঘরে চাল নাই। বাজারে গেলাম চাল কিনতে। পকেটে অল্প কয়টা টাকা।। বহুত কস্টে মা জোগাড় করছে। সেই টাকা। দুই কেজি চাল কিনতে হবে।
না হলে আজ না খেয়েই থাকতে হবে। বাজারে গিয়ে দুকেজি চাল কিনলাম। আর টাকা পয়সা নেই। হাটতে হাটতে বাড়ির দিকে হাসতেছি। ছোট্ট আমি। হাফ প্যান্ট পড়া আর গায়ে একটা স্যান্ডো গেব্জি।
একটা মাঠ পাড় হতে হবে। মাঠ ভরা সবুজ ঘাস। তখনকার দিনে ধান,গম,ময়দা এই জাতীয় কিছু কিনলে পলিথিন কিংবা কাগজের কোন ব্যাগ দিতো না। বাড়ী থেকে গামলা নিয়ে যেতো তাতে করেই আনা নেয়া হতো।
তো দুই কেজি চাল ছিলো গামলাতে। ছোট্ট আমি এই দুই কেজী চালই কেমন যেনো অনেক ভারী মনে হচ্ছিলো।
তো সেই মাঠের উপর দিয়ে যখন আসছিলাম এক সময় হঠাত করেই গামলা সহ চালগুলো পরে গেল মাঠে। মাঠে বড়বড় ঘাস। পাগলের মত সেই ঘাসের মধ্যে দিয়েই হাতরাতে লাগলাম যদি চালগুলো পাওয়া যায়।
আমার পথ চেয়ে চারটি মানুষ বসে আছে । চাল না নিয়ে গেলে আজ না খেয়ে থাকতে হবে সবাইকে। কিভাবে বাড়ী ফিরবো এভাবে। হাউমাউ করে কেদেছিলাম সেদিন। ভাবছিলাম উঠানে দাঁড়িয়ে থাকা আমার দিকে পথ চেয়ে থাকা আমার মায়ের মুখ। ছোট ভাইটার মুখ। বোন দুটোর মুখ।
[গল্পটা আমার বাবার।
এরকম বহু ঘটনা আছে আমার বাবার। আমার আব্বুর জীবনটা গল্পের পাতার মতই কস্টের। সবই জানি আমি। শুনি,চোখে পানি আসে। ]